বর্তমানে নাটকের সেরা সময় যাচ্ছে: মহিম

বিনোদন প্রতিবেদক
| আপডেট : ০৭ মে ২০১৯, ১৩:২৪ | প্রকাশিত : ০৭ মে ২০১৯, ১২:২১

বর্তমান সময়ের তরুণ ও মেধাবী নাট্যনির্মাতা মহিদুল মহিম। অল্প সময়ে বেশ কিছু নাটক নির্মাণ করে তিনি সুনাম কুড়িয়েছেন। সেগুলোর প্রায় সবগুলোই দর্শকপ্রিয়তা পেয়েছে। নাটকগুলোর মধ্যে ‘ভাই প্রচুর দাওয়াত খায়’, ‘রং বদল’, ‘টু মাচ লাভ’, ‘লাভবাবু’, ‘খেয়ালী আমি হেয়ালী তুমি’, ‘হেল্পফুল সাইফুল’, ‘বেঁচে থাকুক আমাদের ভালোবাসা’ অন্যতম। নাটক রচনাতেও সফল মহিম।

মিডিয়ায় তার কাজ ও সমসাময়িক বিষয় নিয়ে নির্মাতা মহিম সম্প্রতি কথা বলেছেন ঢাকা টাইমস-এর সঙ্গে। আলাপচারিতায় ছিলেন মো. মুজাহিদুল ইসলাম নাঈম

বর্তমান ব্যস্ততা সম্পর্কে বলুন

ঈদুল ফিতরের কাজ নিয়ে বর্তমানে ভীষণ ব্যস্ত আছি। বড় এ উৎসবকে উপলক্ষ্য করে ‘রং বদল-২’, ‘আনোয়ার দ্যা প্রডাকশন বয়’, ‘কাছে দূরে’ ও ‘এই শহরে ভালোবাসা নেই’ শিরোনামে চারটি নাটক নির্মাণ করছি।

নাট্যনির্মাতা না হলে কী হতেন?

ফুটবল খেলোয়ার। ছোটবেলা থেকেই এই স্বপ্নটা দেখতাম। আমার বাবা বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তা ছিলেন। তার চাকরির সুবাদে চট্টগ্রাম থাকতাম। তখন ইন্টারমিডিয়েট পড়ি। লেখাপড়ার পাশাপাশি তখন প্রচুর খেলাধুলা করেছি। পরে ঢাকায় এসে স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি থেকে আইন বিষয়ে অনার্স-মাস্টার্স করেছি। কিন্তু খেলাধুলার সময়টা আগের মতো পাইনি। তাই ছোটবেলায় লালিত স্বপ্নটাও দিনে দিনে হারিয়ে গেছে।

নাটক পরিচালনায় আসার পেছনের গল্পটা কী?

২০০৬- ২০০৮ সাল পর্যন্ত মোস্তফা সরয়ার ফারুকী ভাইয়ের প্রচুর নাটক দেখেছি। তার বড় একজন ভক্ত আমি। ফারুকী ভাইয়ের নির্র্মাণশৈলী, গল্প, গল্পের বিভিন্ন পেক্ষাপট বিষয়গুলো খুব ভালো লাগতো। তারপর থেকেই গল্প লেখার প্রতি একটা আগ্রহ তৈরি হয়। তখন ভার্সিটিতে পড়ি। পড়ালেখার পাশাপাশি ছোট গল্প লেখা শুরু করলাম। সেগুলো নিয়ে বিভিন্ন নির্মাতাদের কাছে গিয়েছি। কিন্তু কেউই আমার গল্প নেয়নি।

একপর্যায়ে নির্মাতা মাহাবুল ইসলাম রাসেল ভাই পরামর্শ দিলেন, ‘এভাবে গল্প নিয়ে কেউ কাজ করবে না। তুমি আগে কাজ শেখো। তখন নিজের গল্পে তুমিই নাটক নির্মাণ করতে পারবে।’ এরপর রাসেল ভাইয়ের সহকারী হিসেবে কাজ শুরু করি। পরবর্তীতে পরিচালক মাসুদ মহিউদ্দীন ভাইয়ের সঙ্গে প্রায় তিন বছর কাজ করেছি। অনেক কিছু শিখেছি। পরে নিজেই নাটক নির্মাণ শুরু করি।

অভিযোগ আছে বর্তমানে নাটকের মান ভালো হচ্ছে না। এ ব্যাপারে আপনার বক্তব্য কী?

নাটক ভালো হচ্ছে না কথাগুলো আসলে কারা বলে? সরাসরি এই অভিযোগটা কেউ করেন না। এদের সংখ্যা খুবই নগণ্য। আমি বলছি না সব নাটকই ভালো হচ্ছে। কিছু নিম্নমানের নাটকও হচ্ছে। এটা সব সময়ই ছিল। তবে এখন ভালো মানের নাটকই বেশি হচ্ছে। না হলে এত এত মানুষ দেখে কেন? আমি মনে করি, বর্তমানে নাটকের সেরা সময় যাচ্ছে।

নাটক নির্মাণের ক্ষেত্রে কোন বিষয়গুলো বেশি প্রধান্য দেন?

অবশ্যই গল্পকে প্রাধান্য দেই। একটা ভালো গল্পই পারে দর্শকদের আকৃষ্ট করতে। পাশাপাশি গল্প অনুযায়ী কমেডি ও গল্পে থাকা চরিত্রগুলোর সঙ্গে মানানসই পাত্রপাত্রী। সবশেষে একটা মেসেজ। প্রত্যেকটা নাটকেই আমি ভিন্নতা দেখানোর চেষ্টা করি।

টেলিভিশনের চেয়ে বর্তমানে ওয়েবে নাটক বেশি যাচ্ছে। ছোট পর্দার জন্য এটা হুমকি কি না?

আমি সেটা মনে করি না। হুমকি যেটা আছে সেটা বাজেট সংক্রান্ত। ওয়েবের নাটকের জন্য আমরা যে বাজেট পাই, টেলিভিশনে সে বাজেট মেলে না। ভালো কাজের জন্য ওয়েব থেকে যদি ভালো বাজেট পাওয়া যায়, তবে তো সবাই সেদিকে ঝুঁকবেই।

এই সমস্যা থেকে বের হয়ে আসার উপায় কী?

এই সমস্যা সমাধানে একটা সঠিক কাঠামো খুবই দরকার বলে আমি মনে করি। অর্থাৎ নাট্য জগতটাকে একটা নিয়মের মধ্যে আনতে হবে। সেটা পরিচালক, টেলিভিশন চ্যানেল, শিল্পী সংঘ মিলে করতে পারেন। মোট কথা, একটা দিক নির্দেশনা নিয়ে সঠিকভাবে আগানো উচিৎ। গ্রেড অনুযায়ী রেট করে পেমেন্ট দেয়া হোক। তাহলে এই বাজেট সমস্যা আর থাকবে না।

সিনেমা নির্মাণ করার ইচ্ছা আছে?

এই ইচ্ছা তো সবারই থাকে। আমারও আছে। তবে এটা নিয়ে তাড়াহুড়া করতে চাই না। নিজস্ব গতিতে আগাতে চাই। একটা সময় যখন মনে হবে আমি সিনেমা নির্মাণের উপযুক্ত, তখনই এ পথে নামবো। দর্শক যেন বলে, আসলেই একটা ভালো সিনেমা হয়েছে। তাই পাকাপোক্ত হয়েই রুপালি পর্দায় পা দিতে চাই।

অভিনয়শিল্পীদের মধ্যে সবচেয়ে পছন্দের কে কে?

আফরান নিশো ভাই, জিয়াউল ফারুক অপূর্ব ভাই ও মেহজাবিন চৌধুরী আপু। যাদের ভালোবাসা ও সহযোগিতায় আজ আমি এ পর্যন্ত আসতে পেরেছি। নতুন নির্মাতা হিসেবে এই তিন তারকা আমাকে যে পরিমাণ সহযোগিতা করেছেন, তা ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না। তাদের প্রতি আমি চির কৃতজ্ঞ।

ঢাকাটাইমস/৭ মে/এএইচ

সংবাদটি শেয়ার করুন

বিনোদন বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :