সিলেটে নারী চিকিৎসক লাঞ্ছিতের প্রতিবাদে মানববন্ধন
সিলেট উইমেন্স মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নারী ইন্টার্ন চিকিৎসককে লাঞ্ছিত করার প্রতিবাদের মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন ইন্টার্ন চিকিৎসকরা।
শনিবার দুপুরে উইমেন্স মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল চত্বরে এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়।
এসময় গত বৃহস্পতিবার উইমেন্স মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নারী ইন্টার্ন চিকিৎসক ডা. নাজিফা আনজুম নিশাতকে লাঞ্চনাকারী ছাত্রলীগ নেতা সারোয়ার হোসেন চৌধুরীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান তারা।
হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন আন্দোলনকারীরা। গত বৃস্পতিবার বিকাল পৌনে ৩টার দিকে এক রোগীকে সেবা দিতে অবহেলার অভিযোগ এনে সিলেটের দক্ষিণ সুরমা উপজেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সারোয়ার হোসেন চৌধুরী চিকিৎসক ডা. নাজিফা আনজুম নিশাত গালিগালাজ করেন এবং হত্যার হুমকি দেন। সারোয়ারের গালিগালাজ দেয়ার একটি ভিডিও ক্লিপও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়।
ঘটনার পরপরই উইমেন্স মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসকরা কর্মবিরতি পালন করেন। বৃহস্পতিবার রাতেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাদের সাথে কথা বলে কাজে ফেরান।
লাঞ্ছিত চিকিৎসক ডা. নাজিফা বলেন, ‘পেটে ব্যথা নিয়ে এক রোগীকে নিয়ে হাসপাতালে আসেন কয়েকজন যুবক। রোগীর মেডিকেল হিস্ট্রি নিতে গিয়ে আমি তাদের মধ্যে একজন বা দুজনকে থাকতে বলে বাকিদের বাইরে যেতে বলি। কিন্তু একজন এতে ক্ষেপে যায় এবং অকথ্য ভাষায় আমাকে গালাগালি করতে থাকে। পরে তিনিই তার পরিচয় দেন তিনি ছাত্রলীগ নেতা।’
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা সারোয়ার হোসেন চৌধুরী জানান, রোগীতে দেখতে বিলম্ব করায় ‘মাথাগরম’ হয়ে যাওয়ায় তিনি এ আচরণ করেছেন। এ ঘটনায় দুঃখ প্রকাশও করেছেন তিনি।
সারোয়ার হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘ওই ডাক্তার দেশরত্ন শেখ হাসিনাকে নিয়ে কথা বলছে। তখন মাথা ঠিক রাখা যায়নি। তারপর তা নিয়ে আমাদের সঙ্গে একটু তর্কবিতর্ক হয়েছে।’
ঘটনার পর ফেসবুক স্ট্যাটাসে ডা. নাজিফা লিখেছেন, তাকে ‘ধর্ষণের’ হুমকি দিয়েছেন ছাত্রলীগ নেতা সারোয়ার। ‘একবার বাইরে বের হ, রেইপ করে ফেলব। আমার পা ধরে তোকে মাফ চাইতে হবে।’ এ সময় কোমর থেকে ছুরি বের করে ওই নারী চিকিৎসককে হত্যার হুমকি দেন বলেও অভিযোগ করেন নাফিজা।
কিন্তু এ বিষয়টি অস্বীকার করেছেন ছাত্রলীগ নেতা সারোয়ার হোসেন চৌধুরী। তিনি বলেন, মাথা গরম হওয়ায় গালিগালজ করেছি, ধর্ষণের হুমকি দিইনি।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া ভিডিও ফুটেজেও সারোয়ার উত্তেজিত হয়ে গালিগালাজ করছেন দেখা যাচ্ছে। এঘটনায় এখনো থানায় কোনো অভিযোগ দায়ের করা হয়নি।
সিলেট উইমেন্স মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক (প্রশাসন) ডা. ফেরদৌস আহমেদ বলেন, অনাকাক্সিক্ষত ঘটনাটি সমাধানের চেষ্টা চলছে। আজ এ নিয়ে বৈঠকে বসবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। হাসাপাতালের চিকিৎসকদের নিরাপত্তা চেয়ে থানায় জিডি করা হবে বলে জানান তিনি।
(ঢাকাটাইমস/১১মে/এমএ/জেবি)