কুমার নদের স্লুইস গেট নির্মাণ কাজ নিয়ে অসন্তোষ

প্রকাশ | ১২ মে ২০১৯, ১৭:৫১

মফিজুর রহমান শিপন, ফরিদপুর

ফরিদপুরের পদ্মা নদীর থেকে কুমার নদের উৎস মুখে স্থাপিত মদনখালী স্লুইস গেট নির্মাণ কাজ নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আর বাস্তবায়ন হচ্ছে না। একে তো প্রকল্প বাস্তবায়নে ধীরগতি, তদুপরি নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহারেরও অভিযোগ উঠেছে এ প্রকল্প বাস্তবায়নে। আগামী ১০০ বছরের স্থায়িত্বকাল ধরে নিয়ে ছয় ভেন্টবিশিষ্ট এ রেগুলেটরটি নির্মাণ করার কথা।

যদিও প্রকল্প নিয়মিতভাবে তদারকি করার দাবি করে পাউবোর সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীরা জানান, এখানে নিম্নমানের কাজ করে পার পেয়ে যাওয়ার কোন সুযোগ নেই।

এদিকে, পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রধান প্রকৌশলীসহ ঊর্র্ধ্বতন কর্মকর্তারা সম্প্রতি এ প্রকল্প পরিদর্শনে এসে কাজের ধীরগতি দেখে দ্রুত কাজ শেষ করার নির্দেশ দেন।

জানা গেছে, ফরিদপুরে ১৭৬ কোটি টাকা ব্যয়ে কুমার নদ খননের যেই প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে তারই অংশ হিসেবে সোয়া ১০ কোটি টাকা ব্যয়ে এই মদনখালী রেগুলেটর নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করা হচ্ছে। এই কাজ বাস্তবায়ন করছে ফিউচার ইনফ্রাকচার ডেভেলপমেন্ট লিমিটেড (এফআইডিএল) নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।

বুধবার সকালে সরেজমিনে দেখা গেছে, গুরুত্বপূর্ণ এই কাজটির বাস্তবায়নে সাইটে প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কোন সাইনবোর্ড টাঙানো হয়নি। নি¤œমানের পাথর ও সিলেট বালু ছাড়াও ওপিসি মানের সিমেন্টের স্থলে পিপিসি সিমেন্ট এবং ৬০ গ্রেডের রডের বদলে ৪০ গ্রেডের রড ব্যবহার করা হচ্ছে। সিলেট বালু ও স্টোন চিপে ডাস্ট ভরা।

ওই এলাকার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী মোজাফফর হোসেন অভিযোগ করেন, শুরু থেকেই এভাবে কাজ চলছে। সিলেট বালুতে ধুলা মেশানো। আর কালো পাথরের স্থানে সাদা পাথর দিচ্ছে। একই অভিযোগ করেন ওই এলাকার অধিবাসী একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরিরত যুবক শাহেদুল ইসলাম।

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি কাজী নজরুল ইসলাম অবশ্য দাবি করেন, সাদা পাথর কিংবা কালো পাথর বলে সিডিউলে কোন পার্থক্য নেই। সেখানে রয়েছে স্টোন চিপ। আর রড এবং সিলেট স্যান্ডও ল্যাবরেটরি পরীক্ষার পরেই ব্যবহারের অনুমতি মিলেছে। এখন পর্যন্ত কাজের ৩৫ ভাগ অগ্রগতি হয়েছে সম্পন্ন হয়েছে। চলতি ডিসেম্বরে শেষ হওয়া এ প্রকল্প মেয়াদ আরো বাড়বে বলে তিনি জানান।
এ ব্যাপারে ফরিদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সুলতান মাহমুদ বলেন, মদনখালী স্লুইস গেটের স্থায়িত্বের উপর ফরিদপুর শহরের স্থায়িত্ব নির্ভর করছে। তাই এই কাজে বাস্তবায়নের তিনি নিয়মিতই পরিদর্শন ও তদারকি করছেন।

তিনি জানান, সাইটে যে সিলেট বালু ও পাথরের মানহীনতার যে অভিযোগ উঠেছে তা খতিয়ে দেখব। নিজস্ব ল্যাবরেটরিতে সেগুলো পরীক্ষার পর ব্যবহারের অনুমতি দেব। কোনোভাবেই মানহীন কাজের সুযোগ দেয়া হবে না।

(ঢাকাটাইমস/১২মে/এলএ)