খালেদার বিচার এখন থেকে কেরানীগঞ্জে

প্রকাশ | ১৩ মে ২০১৯, ২০:০৮ | আপডেট: ১৩ মে ২০১৯, ২২:১৬

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
ফাইল ছবি

নিরাপত্তা কারণ দেখিয়ে পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন সড়কের পুরনো কারাগারের অস্থায়ী আদালতের কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে। আদালতের নতুন কার্যক্রম চলবে কেরানীগঞ্জের কেন্দ্রীয় কারাগারে। ফলে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মামলাগুলো এখন থেকে চলবে সেখানে।

রবিবার আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগ বিচার শাখা-৪ এর প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানা যায়। প্রজ্ঞাপনটি প্রকাশ হয়েছে সোমবার।

এতদিন নাজিমউদ্দিন সড়কের কারাগারের পাশে আদালত বসিয়ে বেশ কয়েকটি মামলার বিচার চলছিল খালেদা জিয়ার।

যুগ্ম সচিব (প্রশাসন-১) গোলাম সারওয়ার স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়, কেরানীগঞ্জের কেন্দ্রীয় কারাগারের নবনির্মিত ২নং ভবনের অস্থায়ী আদালতে নাইকো দুর্নীতি মামলাসহ মোট ১২টি মামলা চলবে।

মামলাগুলো হলো: রাজধানীর দারুসসালাম থানা এলাকায় নাশকতার অভিযোগে করা আট মামলা, যাত্রাবাড়ী এলাকায় বাসে আগুনের ঘটনায় করা মামলা এবং মানহানির অভিযোগে করা তিন মামলা। এ মামলাগুলো সাবেক কেন্দ্রীয় কারাগারে অবস্থিত বিশেষ জজ আদালত ও বকশীবাজারের আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে অবস্থিত আদালতে অভিযোগ গঠন শুনানির জন্য রয়েছে।

২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে খালেদা জিয়া নাজিমউদ্দিন রোডের পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দী। সেদিন জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় পাঁচ বছরের কারাদণ্ড হয়েছিল তার। পরে উচ্চ আদালত দণ্ড বাড়িয়ে ১০ বছর করে।

বিএনপি নেত্রী আরও বেশ কিছু মামলার আসামি। কিন্তু নাজিমউদ্দিন রোডের কারাগারে যাওয়ার পর অন্য মামলায় তিনি আর আদালতে যাচ্ছিলেন না। পরে আদালতই কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। আর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলার রায় হয়েছে সেখানকার আদালতেই। এই মামলার সাত বছরের কারাদণ্ড হয়েছে তার।

নাইকো এবং গ্যাটকো দুর্নীতিসহ মানহানিসহ বেশ কিছু মামলার বিচার এখনো চলছে কারাগারে বসা সেই আদালতে।

খালেদা জিয়া বর্তমানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) চিকিৎসাধীন।

নতুন এই সিদ্ধান্তে হতাশা প্রকাশ করেছেন বিএনপি নেত্রীর আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন। ঢাকাটাইমসকে তিনি বলেন, ‘সরকার বেগম খালেদা জিয়া শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে। এটা তার আর একটি উদাহরণ। কেরানীগঞ্জে যদি বিচার পরিচালিত হয় তাহলে ওখানে আইনজীবীদের যাওয়া কষ্টকর হবে। কারণ রাস্তার যে পরিস্থিতি ও দূরত্ব এটা সবাই জানে। আসলে বিচারকে বিঘœ করার জন্য এটা করা হয়েছে।’

এদিকে সোমবার গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘কোর্ট এখন জেলখানার পিছে পিছে ঘুরছে। জেলখানায় ঢুকে পড়েছে। দেশে আইনের শাসনের কী অবস্থা তা দেখতেই পাচ্ছেন। কোর্ট যদি জেলখানায় ঘুরে বেড়ায় তাহলে আর সম্মান থাকে না। এতে করে র‌্যায়বিচারের প্রত্যাশা আর কতটুকুই বা থাকে।’

বিএনপির এ নেতা বলেন, ‘সবকিছুতে স্থান কাল পাত্র ভেদে একটা ব্যাপার আছে না? কোর্ট থাকবে কোর্টের জায়গায়। সেখানে কোর্ট যদি জেলখানায় ঘুরে বেড়ায় সেখানে জনগণের র‌্যায়বিচারের প্রত্যাশা এবং এর উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন চলে আসে।’

(ঢাকাটাইমস/১৩মে/বিইউ/জেবি)