বোয়ালমারীতে আ.লীগের দুই পক্ষে সংঘর্ষে আহত ২০

প্রকাশ | ১৫ মে ২০১৯, ১৬:১০

ফরিদপুর প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে কমপক্ষে ২০ জন আহত হয়েছেন। কয়েকটি বাড়িঘর ভাঙচুর করা হয়েছে। আহতদের মধ্যে রক্তাক্ত জখম অবস্থায় ৯ জনকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

আজ বুধবার সকাল সাড়ে ৬টার দিকে ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার ঘোষপুর ইউনিয়নের চন্ডিবিলা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। আহতরা অভিযোগ করেছেন, স্থানীয় পুলিশের অসহযোগিতার কারণে এ হামলা হয়েছে।

হামলায় আহতদের মধ্যে ঘোষপুর ইউনিয়নের স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি মুন্নু মোল্যা (৪২), স্থানীয় আওয়ামী লীগের প্রবীণ কর্মী কাজী রফিউদ্দিন (৬০), তার ছেলে কাজী শামীম (৩৫), মোস্তফা মোল্যা (৫০), সাইফুর রহমান (৫০), মেয়ে কাজী শাহনাজ (৩৫), আব্দুর রাজ্জাক (৭০), মতিয়ার রহমান (৫০), কবির হোসেন (৫৫) ও সাহেব আলীকে (২৬) ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অন্যদের বোয়ালমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। তাদের সবাই স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ফারুক হোসেনের লোক বলে জানা গেছে।

ঘোষপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের অর্থবিষয়ক সম্পাদক এস এম ফারুক হোসেন বলেন, ‘বোয়ালমারী উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান চাঁন মিয়া এবং আলাউদ্দিন আহমেদের সমর্থক ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি জামাল মেম্বার ও আবু বকর সিদ্দিকের নেতৃত্বে এ হামলা চালানো হয়। দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র ও লাঠিসোটা নিয়ে ঘুমন্ত মানুষে ওপর হামলা চালানো হয়েছে। আমরা এর সুষ্ঠু তদন্ত ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করছি।’

আগের রাতে বোয়ালমারী থানার পুলিশের সঙ্গে গোপন আঁতাত করে এ হামলা চালানো হয় বলে তিনি অভিযোগ করেন।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত আওয়ামী লীগ নেতা ও ঘোষপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান চান মিয়া বলেন, ‘আগের দিন রাতে আমার লোকদের ওপর ঘোষপুর ইউপি চেয়ারম্যান ফারুক হোসেনের লোকেরা হামলা চালিয়ে আহত করে। এ কারণে এ ঘটনার সৃষ্টি হয়েছে।’

হামলায় আহত কাজী রফিউদ্দিনের মেয়ে কাজী শাহনাজ বলেন, ‘ভোররাতে সেহরি খেয়ে আমরা ঘুমিয়ে ছিলাম। সকালে ঘুম ভেঙে দেখি লাঠিসোটা ও দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হামলাকারীরা আমাদের বাড়িঘর ঘিরে রেখেছে। এরপর আমার বাবা ও দুই ভাইকে ঘর থেকে বের করে নিয়ে গুরুতর আহত করে।’

কাজী শাহনাজ আরও বলেন, ‘ওদের সাথে আমাদের জায়গাজমি বা অন্যকিছু নিয়ে কোনো বিরোধ নেই। শুধু আধিপত্য বিস্তারের জন্যই এভাবে ওরা নৃশংসভাবে হামলা করেছে।’

হামলায় আহত রাখাগাছি গ্রামের সাহেব আলী বলেন, ‘আমরা পাঁচজন সকালে চন্ডিবিলা গ্রামে কাজী রফিউদ্দিনের বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে ছিলাম। এ সময় ওরা অতর্কিতভাবে এসে আমাদের প্রথমে পিটিয়ে সারা শরীর থেতলে দেয়। এরপর সড়কি ও রামদা দিয়ে কুপিয়ে আহত করে।’

এ ব্যাপারে বোয়ালমারী থানার ওসি (তদন্ত) শহিদুল ইসলাম পুলিশের পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ নাকচ করে বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।

স্থানীয় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ঘোষপুর ইউনিয়নের বর্তমান ও সাবেক চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। সম্প্রতি ঘোষপুর ইউনিয়নের বালুমহাল ইজারাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধ তুঙ্গে ওঠে। মাসখানেক আগেও দুই পক্ষের সংঘর্ষে কমপক্ষে সাতজন আহত হন।

(ঢাকাটাইমস/১৫মে/মোআ)