আর্সেনিক ঝুঁকি কমাতে গভীর নলকূপ স্থাপন চলছে

প্রকাশ | ১৫ মে ২০১৯, ১৬:১২

নিজস্ব প্রতিবেদক, গোপালগঞ্জ

গোপালগঞ্জে আর্সেনিকের ঝুঁকি কমাতে ও লবনাক্ত পানির ব্যবহার কমাতে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর গভীর নলকূপ স্থাপন শুরু করেছে। ইতোমধ্যে চলতি (২০১৮-২০১৯) অর্থ-বছরে স্থাপন করা হচ্ছে তিন হাজার ২৩৭টি গভীর নলকূপ। এই গভীর নলকূপ স্থাপনের মাধ্যমে গোপালগঞ্জের পাঁচ উপজেলার সকল শ্রেণি পেশার মানুষ সুপেয় ও বিশুদ্ধ পানি পানের সুযোগ পাচ্ছে।

গোপালগঞ্জ জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি অর্থ বছরে পানি সরবরাহে আর্সেনিক ঝুঁকি নিরসন প্রকল্পে দুই হাজার বারোটিটি গভীর নলকূপ স্থাপন করা হয়েছে। এরমধ্যে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলায় ৪৬৮টি , টুঙ্গিপাড়া উপজেলায় ১০০টি, কোটালীপাড়ায় ২৮৪ টি, কাশিয়ানীতে ৪৮৩টি এবং মুকসুুদপুরে ৬৯৭টি গভীর। পানি সরবরাহে আর্সেনিক ঝুঁকি নিরসন প্রকল্পে গোপালগঞ্জ সদরের ১১টি ইউনিয়নে ১৫৭টি গভীর নলকূপ স্থাপন করা হয়েছে।

এছাড়াও অগ্রাধিকারমূলক গ্রামীণ পানি সরবরাহ প্রকল্পে সাধারণ বরাদ্দ ও অতিরিক্ত ১ হাজার ৬৮টি গভীর নলকূপ স্থাপন করা হয়েছে। এরমধ্যে গোপালগঞ্জ সদরে ১৭৮টি, টুঙ্গিপাড়ায় ১৭৮টি, কোটালীপাড়ায় ১৭৮টি, কাশিয়ানীতে ৩৫৬টি এবং মুকসুুদপুরে ১৭৮টি। আগামী অর্থ-বছরে পাঁচ হাজার ৬০০ সাব-মার্সিবল পাম্পসহ গভীর নলকূপ, ৪২টি গ্রামীণ পাইপ ওয়াটার সাপ্লাই প্রকল্প, ১০টি সিডকো প্লান্ট, ১০টি রিভার্স অসমোসিস প্লান্ট, আর্সেনিক আয়রন রিমোভাল প্লান্ট দুই হাজারের চাহিদা পাঠানো হয়েছে। এই বরাদ্দটি পাওয়া গেলে প্রায় প্রতিটি বাড়িতে গভীর নলকূপ স্থাপনের মাধ্যমে আর্সেনিকমুক্ত সুপেয় পানি সরবরাহ করা সম্ভব হবে।

সদর উপজেলার জালালাবাদ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এম সুপারুল আলম টিকে বলেছেন, আমার ইউনিয়নে আরো অন্তত ৩০০ গভীর নলকূপ স্থাপন করা প্রয়োজন। এই ২০০ গভীর নলকূপ স্থাপন করতে পারলে আমার ইউনিয়নের কোন বাড়িতে আর্সেনিকমুক্ত সুপেয় পানির সমস্যা থাকবে না। আমি আমার ইউনিয়নে ২০০ গভীর নলকূপ স্থাপন করার দাবি করছি।

গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা চেয়ারম্যান শেখ লুৎফার রহমান বাচ্চু বলেন, সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে আমার কাছে গভীর নলকুপের আবেদন নিয়ে হাজারো মানুষ আসেন। কিন্তু বরাদ্দ না থাকায় তাদের দিতে পারি না। এ উপজেলায় আরো তিন হাজার গভীর নলকূপের চাহিদা রয়েছে। বরাদ্দ পেলে সদর উপজেলায় কোন পরিবারে আর্সেনিকমুক্ত পানি পানের সমস্যা থাকবে না।

গোপালগঞ্জ জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক চন্দ্র তালুকদার বলেন, গোপালগঞ্জের পাঁচ উপজেলার ৬৮টি ইউনিয়নে সুপেয় পানি পানের সুবিধার জন্য চলতি ২০১৮-১৯ অর্থ-বছরে স্থাপন করা হচ্ছে তিন হাজার ২৩৭টি গভীর নলকূপ। আর এই গভীর নলকূপ স্থাপনের মাধ্যমে গোপালগঞ্জের পাঁচ উপজেলার শহর থেকে গ্রাম পর্যায়ের সাধারণ মানুষ সুপেয় পানি পানের সুযোগ পাচ্ছে।

তিনি বলেন, বসতবাড়ি থেকে শুরু করে স্কুল-কলেজ, মাদ্রাসা, মসজিদ, মন্দির, গির্জায় এখন পাওয়া যাচ্ছে আর্সেনিকমুক্ত সুপেয় পানি। তবে এখনো জেলার অসংখ্য পরিবারে গভীর নলকূপ স্থাপন হয়নি সেসকল পরিবারের সুপেয় পানি পানের জন্য আগামী অর্থ-বছরে পাঁচ হাজার ৬০০ সাব-মার্সিবল পাম্পসহ গভীর নলকূপ, ৪২টি গ্রামীণ পাইপ ওয়াটার সাপ্লাই প্রকল্প, ১০টি সিডকো প্লান্ট, ১০টি রিভার্স অসমোসিস প্লান্ট, আর্সেনিক আয়রন রিমোভাল প্লান্ট দুই হাজারটির চাহিদা পাঠানো হয়েছে।

চাহিদা অনুযায়ী বরাদ্দ পাওয়া গেলে গোপালগঞ্জ জেলার একটি পরিবারও আর্সেনিকমুক্ত সুপেয় পানি পান থেকে বঞ্চিত থাকবে না।
(ঢাকাটাইমস/১৫মে/এলএ)