কৃষকের সঙ্গে মশকরা করবেন না: খাদ্যমন্ত্রীকে হুইপ

ঢাকাটাইমস ডেস্ক
| আপডেট : ১৬ মে ২০১৯, ১৫:৩০ | প্রকাশিত : ১৬ মে ২০১৯, ১৪:৩৩

[ধানের ন্যায্য মূল্য না পেয়ে বেশ কিছু জায়গায় মাঠের ধানে আগুন দিয়েছেন কৃষক নিজেই। এ নিয়ে দেশব্যাপী তোলপাড় চলছে। তবে সরকারের খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেছেন, ধানে আগুন দেয়ার ঘটনা সরকারের বিরুদ্ধে পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র।

তার এই বক্তব্যের কড়া সমালোচনা করেছেন জাতীয় সংসদের হুইপ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে নিজের অ্যাকাউন্টে এক দীর্ঘ পোস্টে হুইপ সাঈদ দায়িত্বশীল পদে থেকে এমন মন্তব্য না করা থেকে বিরত থাকতে খাদ্যমন্ত্রীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। একই সঙ্গে প্রকৃত ঘটনা অনুসন্ধান করে কৃষকদের পাশে দাঁড়ানোরও আহ্বান জানিয়েছেন ক্ষমতাসীন দলের এই শীর্ষ নেতা। হুইপের স্ট্যাটাসটি নিচে নিচে হুবহু তুলে দেওয়া হলো: ]

‘কৃষকের সঙ্গে দয়া করে মসকরা করবেন না’

এই শিরোনামে আবু সাঈদের স্ট্যাটাসটি “ক্ষমতা কি মানুষকে অন্ধত্বের দিকে ঠেলে দেয়? আমার জানামতে, সুস্থ চোখ অন্ধ হতে সময় লাগে। কিন্তু মাত্র ৪ মাসে ধানের ভাণ্ডার নওগাঁর গাঁও-গেরাম থেকে উঠে আসা খাদ্যমন্ত্রী গাঁয়ের কৃষকদের সঙ্গে তাঁর আত্মিক সম্পর্ক ভুলে গেলেন! অন্ধ হয়ে গেলেন এসির ঠান্ডা বাতাসে !!

সরকারকে বিব্রত করার জন্য না কি কৃষক ষড়যন্ত্র করে পাকা ধানে আগুন দেওয়ানো হয়েছে!! কৃষককে ধানের মূল্য দিতে পারবেন না, বিনয়ের সঙ্গে সম্মানিত কৃষকদের সীমাবদ্ধতার কথা অবহিত করুন। সমস্যা কোথায় ? অসীম সমস্যার এই দেশে সব কিছু রাতারাতি ঠিক হবে না, একথা বিনয়ের সঙ্গে বললে মানুষ গ্রহণ করবে।

একজন অসহায় কৃষকের শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদকেও সহ্য করতে পারবেন না ? আপনি তো সামরিক স্বৈরাচারের মন্ত্রী নন। আপনাকে স্মরণ রাখতে হবে, আপনি পরম ধৈর্যশীল, পরমতসহিষ্ণু, উদার গণতান্ত্রিক বিশ্বসেরা রাজনীতিবিদ শেখ হাসিনার সরকারের মন্ত্রী এবং তাঁর সম্মানিত সহকর্মী। উপরন্তু আপনি তেলেতলে আমলা বা ব্যবসায়ী কোটার মন্ত্রী নন। তৃণমূল থেকে কাঁদামাটি গাঁয়ে মাখা রাজনীতিবিদ। ইউনিয়ন চেয়ারম্যান থেকে ধাপে ধাপে ধান আবাদি মানুষের সহযোগিতা, সমর্থনে আজকের পর্যায়ে এসেছেন। অন্ততঃ আপনি কৃষকের সঙ্গে মসকরা করতে পারেন না। আপনি, আমি কৃষকের ভোটে, কৃষকের দয়ায় সংসদে এসেছি।

আগুন দিয়েছে নিজের ক্ষেতে, আপনার পাঞ্জাবিতে দেয়নি। তাতেই সহ্য হচ্ছে না! শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের অধিকারটুকুও দেবেন না কৃষককে। কৃষক বলে কি তাদের প্রতিবাদ করার অধিকার নেই!! প্রজাতন্ত্রের দায়িত্বশীল পদে থেকে অসহিষ্ণু হওয়া সমীচীন নয়।

কৃষক উৎপাদন করে, ন্যায্য মূল্য পায় না। একথা অন্য রাজনীতিবিদ না জানলেও আপনার, আমার অজানা নয়। ধানের দামের খোঁজ নেন, প্রতি মুহূর্তে নিজের ম্যাকানিজম দিয়ে খবর নেন। অফিসারদের উপর শতভগ নির্ভরশীল থাকবেন না। দেখেন, হাটে বাজারে ধানের প্রকৃত দাম কত ? আপনি এই মন্ত্রনালয়ে নতুন।কথিত আছে, এই মন্ত্রনালয়ে অধীনস্থ খাদ্য বিভাগের শুধু কর্মচারী নয়, অফিসের দেয়ালও না কি ঘুষ চায়। ভুমিমন্ত্রীর মত সচল হোন, দুর্নীতির জঞ্জাল পরিস্কার করুন।

কৃষককে প্রতিপক্ষ ভেবে সময় নষ্ট না করে, বিনয়ের সঙ্গে কৃষককে আর কিছু দিন ধৈর্য ধরতে বলুন। প্রতিবেশী ভারত বা অন্য কোন দেশে ধানের আধুনিক সাইলো বা গুদাম পরিদর্শন করুন। নিজে লেগে থেকে প্রকল্প প্রস্তুত করে একনেকে অনুমোদন করান। দেশে বড় বড় ধানের সাইলো নির্মাণ করুন। বিনা কমিশন বা ঘুষে সরাসরি কৃষকের নিকট থেকে ধান ক্রয়ের ব্যবস্থা করুন। তবেই কৃষক বাঁচবে। কৃষকরত্ন শেখ হাসিনার শ্লোগান, কৃষক বাঁচলে দেশ বাঁচবে।

সরাসরি কৃষক এর আগে খাদ্য মন্ত্রী হয় নাই। মহান প্রধানমন্ত্রী শখ করে কৃষককে খাদ্য মন্ত্রী এবং কৃষিবিদকে কৃষি মন্ত্রী বানিয়েছেন। আমরা, আপনাদের নিয়ে স্বপ্ন দেখি, আস্থা রাখি, বিশ্বাস রাখি। আপনি এবং কৃষিমন্ত্রী একত্রে বসে কৃষকদের কল্যাণে বড় কিছু করুন, তাদের বাঁচান।

জাতির পিতার আত্মা শান্তি পাবে।’

(ঢাকাটাইমস/১৬মে/বিইউ/মোআ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

ফেসবুক কর্নার বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :