অভিমানে ছাত্রলীগ ছাড়ছেন রাজশাহী নগর সভাপতি!

প্রকাশ | ১৬ মে ২০১৯, ১৫:৫৫

ব্যুরো প্রধান, রাজশাহী

অভিমানে ছাত্রলীগ ছাড়ছেন রাজশাহী মহানগরের সভাপতি রকি কুমার ঘোষ। গত সোমবার ঘোষিত ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে স্থান হয়নি রাজশাহীর কারও। এ নিয়ে বুধবার রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দীর্ঘ এক পোস্টে তিনি হতাশা প্রকাশ করেন। পরে তার সঙ্গে এই প্রতিবেদকের আলাপে তিনি জানান, এখনই উপযুক্ত সময় ছাত্রলীগ ছাড়ার। এর আগে ফেসবুকে দেওয়া স্ট্যাটাসে তিনি লেখেন, ‘সময় এসেছে হটে দাঁড়ানোর’।

ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে স্থান না পাওয়া রাজশাহী মহানগর ছাত্রলীগের এই নেতা ফেসবুকে লেখেন, ‘এখন যেভাবে রাজনীতির পরিবেশ অতিবাহিত হচ্ছে তাতে রাজনীতি করাই ভয়ংকর হয়ে দাঁড়িয়েছে।’

রাজশাহী মহানগর ছাত্রলীগে তার এবং সাধারণ সম্পাদক মাহমুদ হাসান রাজীবের অবদান উল্লেখ করে রকি লেখেন, ‘ধীরে ধীরে সংগঠনটি সার্কাসে পরিণত হচ্ছে। তাই সম্মান থাকতে নিজেকে গুটিয়ে নেওয়াই ভালো হবে মনে হয়।’

তিনি লেখেন, ‘নেতাদের দালালি করে বড় হয়ে লাভ কী! বরং একজন সৎ কর্মী হয়ে বেঁচে থাকা অনেক সম্মানের!’

আবেগঘন ওই স্ট্যাটাসে রকি উল্লেখ করেন রাজনীতির জন্য নিজের পড়াশোনা ও পরিবারের প্রতি উদাসীনতার কথাও। কেন্দ্রীয় কমিটি নিয়ে নিজের ক্ষোভ থেকে তিনি লেখেন, ‘আমার সাধারণ সম্পাদক একটি কথা বলে সবার সামনে হাসতে হাসতে। সেটা আসলেই বাস্তবমুখী। সেটা হচ্ছে- সারা দিন খেটে যাও তাতেও দুই রুটি, না খেটেও দুই রুটি। কথাটি আসলেই বাস্তব।’

এ স্ট্যাটাস দেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে রকি কুমার ঘোষ বলেন, ‘ছাত্রলীগে এখন যেটা চলছে সেটা কোনো রাজনীতিই নয়। রাজনীতির অংশও নয়। তবে এটা শুধু ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটিই নয়, দেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটটাই অনেকটা এ রকম।’

তিনি বলেন, ‘ছাত্রলীগ করবে তারা যারা সবার আগে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করবে আর সবার শেষে বের হবে। কিন্তু হচ্ছেটা কী? নতুন মুখ দিয়ে কমিটি। বিতর্কিতরা কমিটিতে। আর যারা ত্যাগী নেতা, তাদের জায়গা নেই।’

‘আমাদের রাজশাহীর কথাই ধরুন, এখানে জাতীয় চার নেতার অন্যতম শহীদ এ এইচ এম কামারুজ্জামানের নাতনি অর্ণা জামান আছেন, তাকেও কমিটিতে রাখা হয়নি এবার। পুরো বিভাগে ছাত্রলীগ করা বড় বড় নেতা আছে। তাদের কোনো মূল্যায়ন নেই। এটা রাজনীতি হতে পারে না।’

ছাত্রলীগ ছাড়ার প্রশ্নে রকি বলেন, ‘একটা সময় তো ছাত্রলীগ ছাড়তেই হবে। আমি মনে করি, এখনই উপযুক্ত সময়। ছাত্রলীগ ছেড়ে অন্য সংগঠন করব। যুবলীগ আছে, স্বেচ্ছাসেবক লীগ আছে। আমাদের অভিভাবক নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি, সিটি মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন আছেন, তিনি যেটাতে জায়গা দেবেন সেটা করব। যত দিন জায়গা না দেবেন, অপেক্ষা করব।’

(ঢাকাটাইমস/১৬মে/মোআ)