দুই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ৪৭ কোটি টাকার শুল্ক ফাঁকির অভিযোগ

প্রকাশ | ১৬ মে ২০১৯, ২২:০০

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

দুইটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে বন্ড সুবিধায় আমদানি করা পণ্যে প্রায় ৪৭ কোটি টাকার শুল্ক কর ফাঁকি দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এসব অভিযোগে একটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে দাবি আদায়ের নোটিশ জারি করা এবং আরেকটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা করেছে ঢাকা কাস্টমস বন্ড কমিশনারেট।

বন্ড সুবিধায় আমদানিকৃত পণ্য অবৈধ অপসারণপূর্বক চোরাই পথে খোলাবাজারে বিক্রির অভিযোগে নারায়ণগঞ্জের আদমজী ইপিজেড, নারায়ণগঞ্জে অবস্থিত মেসার্স চেক পয়েন্ট সিস্টেমস লিমিটেডের বিরুদ্ধে একটি মামলা করাসহ দাবিমানা জারি করেছে ঢাকা কাস্টমস সদর দপ্তরের বন্ড কমিশনারেট। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গত ২ মার্চ ঢাকা কাস্টমস সদর দপ্তরের উপ কমিশনার মোহাম্মদ নাজিউর রহমান মিয়ার নেতৃত্বে একটি প্রিভেন্টিভ দল প্রতিষ্ঠানটি সরেজমিন পরিদর্শনে করেন। ওই সময় কাস্টমস কর্মকর্তারা প্রতিষ্ঠান প্রতিনিধিগণের উপস্থিতিতে বন্ডেড ওয়্যারহাউজে মজুদ কাঁচামালের মজুদ যাচাই করেন। পরে প্রতিষ্ঠানটির বন্ড রেজিস্ট্রার, আমদানি-রপ্তানি তথ্য আড়াআড়ি যাচাই করা হয়। পূর্ণাঙ্গ তদন্তশেষে বন্ড সুবিধায় আমদানিকৃত কাঁচামালের মধ্যে সিগনালিং এপারেটাস দুই লাখ ৯৩ হাজার ৬৭৭ কেজি, পেপার ও পেপার বোর্ড তিন লাখ ৭৪ হাজার ৯৮ কেজি, থার্মাল ট্রান্সফার রিবন ১১ হাজার ৫৩৯ কেজি, স্ট্রিং এক হাজার ৭২৫ কেজি, সেলফ এডহেসিভ পেপার ১৩ হাজার ১৫৭ কেজি, প্রিন্টিং ইনক ৪২ হাজার ৮৫ কেজি এবং রিবন পাঁচ হাজার ১৬৭ কেজি মজুদ কম পাওয়া যায়। ওই সব কাঁচামাল, পণ্য অবৈধভাবে অপসারণপূর্বক খোলাবাজারে বিক্রি করা হয়েছে  বলে প্রতিবেদন দাখিল করা হয়।

এক্ষেত্রে জড়িত পণ্যের মোট শুল্ক মূল্য ৯৮ কোটি নয় লাখ ৭২ হাজার ৮১১ টাকা এবং ফাঁকিকৃত শুল্ক করাদির পরিমাণ ৪০ কোটি ২৭ লাখ ১৭ হাজার ৫৪২ টাকা। ফাঁকিকৃত শুল্ক করাদি আদায় ও দন্ডমূলক ব্যবস্থা  নেওয়ার জন্য ঢাকা কাস্টমসের সদর দপ্তর অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে গত ৮ মে একটি দাবিনামা সম্বলিত কারণ দর্শানো নোটিশ জারি করা হয়েছে।

এছাড়াও  গাজীপুরের কাশিমপুরে অবস্থিত মেসার্স মেগা ইয়ার্ন ডায়িং লিমিটেড নামের প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে শুল্ক-করাদি ফাঁকির অভিযোগে অপর একটি মামলা করেছে ঢাকা কাস্টমস বন্ড কমিশনারেট।  গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গত ৬ মে ঢাকা কাস্টমস বন্ড কমিশনারেটরের সহকারী কমিশনার মনিরুজ্জামান চৌধুরীর নেতৃত্বে একটি প্রিভেন্টিভ দল ওই প্রতিষ্ঠানটি আকস্মিক পরিদর্শনে যান। এ সময়ে কাস্টমস কর্মকর্তারা প্রতিষ্ঠান প্রতিনিধির উপস্থিতিতে বন্ডেড ওয়্যারহাউজে মজুদ কাঁচামালের মজুদ যাচাই করেন। যাচাইকালে বন্ড সুবিধায় আমদানিকৃত কাঁচামালের মধ্যে ইয়ার্ন ছয় কোটি ৯৯ লাখ ৯৬ হাজার ৮৮৭ কেজি, ডাইস এক হাজার ৪৮৬ কেজি, কেমিক্যাল ৩৮ হাজার ৬৭৪ কেজি এবং লবন ৪৮ হাজার ৭৮২ কেজি মজুদ কম পাওয়া যায়। ওইসব কাচামাল, পণ্য অবৈধভাবে অপসারণপূর্বক খোলাবাজারে বিক্রির অভিযোগে গত ১২ মে একটি মামলা করা হয়। মামলা নম্বর- ২৮/২০১৯। এক্ষেত্রে জড়িত পণ্যের মোট শুল্কায়ন মূল্য ১৮ কোটি ১৬ লাখ ৪০ হাজার ৩৪৯ টাকা এবং ফাঁকিকৃত শুল্ক করাদির পরিমান পাঁচ কোটি ৯৪ লাখ ৮৭ হাজার ৮৫০ টাকা। দায়ের করা  মামলার বিপরীতে ন্যায় নির্ণায়ন কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

বন্ড সুবিধার অপব্যবহার প্রতিরোধ এবং দেশীয় শিল্পের সুরক্ষায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়ার নির্দেশনা এবং কমিশনার এস এম হুমায়ুন কবীরের গতিশীল নেতৃত্বে এ ধরনের অভিযান চলমান থাকবে বলে সংস্থার এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।

ঢাকাটাইমস/১৬মে/এএ/ইএস