ভাঙ্গায় প্রকৌশলীকে মারধরের অভিযোগে আ.লীগ নেতা গ্রেপ্তার

প্রকাশ | ১৯ মে ২০১৯, ২২:৩৫

ফরিদপুর প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

ফরিদপুরের ভাঙ্গায় সরকারি কার্যালয়ের দরজা আটকে প্রকৌশলীকে মারধর করার অভিযোগে উপজেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) আকরামুজ্জামান ওরফে রাজাসহ দুই আওয়ামী লীগ নেতার নামে মামলা হয়েছে।

পুলিশ এ মামলার আসামি উপজেলা আ.লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক এবং উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস-চেয়ারম্যান এনামুল হক ওরফে অপুকে গ্রেপ্তার করেছে।

রবিবার দুপুর ১টার দিকে ভাঙ্গা পৌরসভা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার উপজেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) আকরামুজ্জামান ও এনামুল হক উভয়েই ভাঙ্গা পৌরসভার কোর্টপাড়া এলাকার বাসিন্দা।

বেলা ১১টা থেকে সাড়ে ১১টার দিকে ওই দুই আ.লীগ নেতা ভাঙ্গা উপজেলা কমপ্লেক্স এলাকায় অবস্থিত উপজেরা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলীর কার্যালয়ে যান। ওই সময় উপজেলা প্রকৌশলী সমরজিৎ চন্দ্র ঘরামি তার কার্যালয়ে  উপস্থিত ছিলেন।

মামলার এজাহার, পুলিশ এবং প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, ওই দুই নেতা উপজেলায় জনস্বাস্থ্য বিভাগের টিউবয়েল বিতরণ সংক্রান্ত পরিপত্র দেখতে চান। প্রকৌশলী এ পরিপত্র পরে দেখাবেন বলে জানান। তখন এনামুল হক তাকে পাঁচটি গভীর নলকূপ বরাদ্দ দিতে প্রকৌশলীকে অনুরোধ করেন।

প্রকৌশলী সমরজিৎ বলেন, ‘তার পক্ষে কোন ব্যক্তিকে টিউবয়েল দেয়া সম্ভব নয়।’

সমরজিৎ চন্দ্র ঘরামি বলেন, ‘এক পর্যায়ে আ.লীগের ওই দুই নেতার সাথে তার কথা কাটাকাটি হয়। তখন এনামুল হককে কক্ষের দরজা ভেতর থেকে বন্ধ করে দেন এবং আ.লীগের ওই দুই নেতা তাকে কিল ঘুষি চড় থাপ্পড় মারতে থাকেন।

ওই সময় ওই কার্যালয়ের তিন কর্মচারী নলকূপ সসেটার বলাই চন্দ্র শীল ও সেলিমুজ্জামান এবং বিএস মেশিন সায়দুল ইসলাম এগিয়ে এসে প্রকৌশলীকে মারধরের হাত থেকে রক্ষা করার চেষ্টা করলে আ.লীগের ওই দুই নেতা তাদের তিনজনকেও মারপিট করেন।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা খালেদুর রহমান মিয়া জানান, উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এসে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।

এনামুল হক অপুকে পুলিশ গ্রেপ্তার করার ব্যাপারে তার বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি। আকরামুজ্জামান রাজাকে একাধিকরার মুঠোফোনে ফোন করা হলেও তিনি ফোনটি ধরেননি। পুলিশ জানিয়েছে, আত্মগোপন করেছেন উপজেলা আ.লীগের এই নেতা।

তবে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে উপজেলা আ.লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সোবাহান মুন্সী বলেন, ‘ভাঙ্গায় উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলীর সাথে যে ঘটনা ঘটেছে তা আমাদের জন্য খুবই দুঃখ ও লজ্জাজনক। আ.লীগ সরকার ক্ষমতায় অথচ আ.লীগের দুই নেতা সরকারি এক কর্মকর্তাকে পিটিয়েছেন এ ঘটনায় দলীয় ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হবে।’

ভাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী সাইদুর রহমান বলেন, ‘এ ঘটনায় ওই প্রকৌশলী বাদী হয়ে ওই দুই আ.লীগ নেতাকে আসামি করে সরকারি কাজে বাধা ও মারধরের অভিযোগে ভাঙ্গা থানায় দুপুরে একটি মামলা করেছেন। এই মামলার পর আ.লীগ নেতা এনামুলকে পৌরসভা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বিকালে তাকে জেলার মূখ্য বিচারিক হাকিমের আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে।’

ওসি আরও বলেন, ‘এ মামলার অপর আসামি আকরামুজ্জামানকে গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান চালানো হচ্ছে। তবে তিনি আত্মগোপন করেছেন।’

(ঢাকাটাইমস/১৯মে/এলএ)