তাজিকিস্তানে কারাগারে দাঙ্গায় নিহত ৩২

প্রকাশ | ২০ মে ২০১৯, ১৪:৫৬

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, ঢাকা টাইমস

মধ্য এশিয়ার দেশ তাজিকিস্তানের সর্বোচ্চ নিরাপত্তাবেষ্টিত একটি কারাগারে দাঙ্গায় তিন কারারক্ষীয় সহ ৩২ জন নিহত হয়েছেন। সোমবার জঙ্গিগোষ্ঠী আইএসের দণ্ডপ্রাপ্ত বন্দিরা এই দাঙ্গা শুরু করে বলে জানিয়েছে দেশটির বিচার মন্ত্রণালয়। খবর বার্তা সংস্থা রয়টার্সের।

রবিবার রাতে রাজধানী দুশানবে থেকে ১০ কিলোমিটার পূর্বে ভাখদাত শহরের প্রথম শ্রেণীর একটি কারাগারে এ ঘটনা ঘটে। কারাগারটিতে বন্দি জঙ্গিরা ছুরি নিয়ে হামলা চালিয়ে তিন রক্ষী ও পাঁচ বন্দিকে হত্যা করার পর দাঙ্গা শুরু হয়। এরপর নিরাপত্তা বাহিনী ২৪ জঙ্গিকে হত্যা করে কারাগারটিতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনে বলে জানিয়েছে মন্ত্রণালয়টি। কারাগারটিতে প্রায় দেড় হাজার বন্দি ছিল।

দাঙ্গার উস্কানিদাতাদের মধ্যে একজন বেখরুজ গুলমুরাদ তাজিকিস্তানের স্পেশাল ফোর্সের সাবেক কর্নেল গুলমুরাদ খালিমোভের ছেলে। খালিমোভ ২০১৫ সালে পক্ষত্যাগ করে ইসলামিক স্টেটে যোগ দিয়েছিলেন, তারপর সিরিয়া গিয়ে নিহত হয়েছেন বলে দাবি করেছে মন্ত্রণালয়টি।

গত নভেম্বরে তাজিকিস্তানের আরেকটি কারাগারে হওয়া দাঙ্গার দায় স্বীকার করেছিল আইএস। এর আগে ওই বছরের জুলাইতে আইএস তাজিকিস্তান ভ্রমণে আসা পশ্চিমা পর্যটকদের ওপর প্রাণঘাতী হামলা চালিয়েছিল।

আইএস এক পর্যায়ে সিরিয়া ও ইরাকের বিশাল এলাকা দখল করে নিজেদের ধরনের ‘ইসলামি খিলাফত’ প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দিয়েছিল। কিন্তু চলতি বছর জঙ্গিগোষ্ঠীটি নিজেদের নিয়ন্ত্রিত সব এলাকার দখল হারিয়েছে।

তাজিকিস্তান মধ্য এশিয়ার একটি স্থলবেষ্টিত প্রজাতন্ত্র। এর উত্তরে কিরগিজস্তান, উত্তরে ও পশ্চিমে উজবেকিস্তান, পূর্বে গণচীন এবং দক্ষিণে আফগানিস্তান। দুশান্‌বে দেশের বৃহত্তম শহর ও রাজধানী। গোর্নো-বাদাখশান স্বায়ত্তশাসিত এলাকাটি তাজিকিস্তানে অবস্থিত; এটি একটি জাতিগত অঞ্চল যা দেশটির ৪৫ শতাংশ এলাকা জুড়ে অবস্থিত। দেশের অধিকাংশ জনগণ তাজিক জাতির লোক। এরা তাজিক নামের একটি ফার্সি জাতীয় ভাষায় কথা বলে।

১৯২৯ সালে তাজিকিস্তান সোভিয়েত ইউনিয়নের একটি অংশে পরিণত হয়। ১৯৯১ সালে এটি স্বাধীনতা লাভ করার পর সাম্যবাদী সরকার ও বিরোধী দলগুলির মধ্যে গৃহযুদ্ধ শুরু হয়। ১৯৯৭ সালের জুন মাসে দুই পক্ষ একটি শান্তি চুক্তি স্বাক্ষর করে। যুদ্ধ অবসানের পর রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং বৈদেশিক সাহায্য দেশটির অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে অবদান রাখতে শুরু করে। তবে দেশটিতে স্বেচ্ছাচারী শাসন ব্যবস্থা (প্রেসিডেন্ট ইমোমালি রাহমন ১৯৯৪ সাল হতে দেশটির একচ্ছত্র অধিপতি হিসেবে শাসন করে আসছেন), ধর্মীয় স্বাধীনতার সীমাবদ্ধতা, দুর্নীতি এবং ব্যাপক মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ করে আসছে  আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থা।

ঢাকা টাইমস/২০মে/একে