নিপীড়ন মামলা নিতে ‘গড়িমসি’ করায় ওসি প্রত্যাহার

স্কুলছাত্রীকে অপহরণ ও নিপীড়নের মামলা নিতে গড়িমশি করার অভিযোগে রাজশাহীর মোহনপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হোসেনকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।

মঙ্গলবার জেলা পুলিশের মুখপাত্র আব্দুর রাজ্জাক খান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, সোমবার সন্ধ্যায় এ সংক্রান্ত এক অফিস আদেশ জারি করেন জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) মো. শহিদুল্লাহ। সে মোতাবেক ওসি আবুল হোসেনকে জেলা পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে। এছাড়া ঘটনা তদন্তে দুটি কমিটিও গঠন করা হয়েছে। আগামী তিন দিনের মধ্যে তাদেরকে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

গত ১৭ মে নিজ ঘরেই গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন মোহনপুরের বাকশিমইল উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রী ও উপজেলার বিলপাড়া গ্রামের আব্দুল মান্নানের মেয়ে সুমাইয়া আক্তার বর্ষা। এর আগে গত ২৩ এপ্রিল বর্ষাকে অপহরণের পর নিপীড়ন করেন স্থানীয় মুকুল নামের এক ভ্যানচালক। বর্ষার পরিবারের অভিযোগ, ঘটনার পর ওসি আবুল হোসেন অভিযুক্ত মুকুলের পক্ষ নেন।

তারা জানান, বর্ষাকে নির্যাতনের পর মামলা দায়ের করতে গেলে তার পরিবারকে হেনস্থা করেন ওসি আবুল হোসেন। চারদিন ধরে মামলা না নিয়ে নানাভাবে টালবাহানা করতে থাকেন তিনি। বর্ষার বাবা তখন ওসিকে বলেন, মামলা না নিলে বলে দেন আর আসব না। ওই সময় তিনি এসপির সঙ্গে দেখা করবেন বলে ওসিকে জানান। ওসি তখন পিটিয়ে বর্ষার বাবার দাঁত ভেঙে দিতে চান। অবশেষে এসপি মো. শহিদুল্লাহর হস্তক্ষেপে ঘটনার চারদিন পর ২৪ এপ্রিল মামলা নেন ওসি।

এ মামলায় স্থানীয় মুকুল ও বর্ষার সহপাঠী সোনিয়াসহ কয়েকজনকে আসামি করা হয়। কিন্তু পাশাপাশি বাড়ি হওয়ায় মুকুলের পরিবার বর্ষাকে নানা ধরনের কটূক্তিসহ অপবাদ দিতে থাকে। এই অপমানে চিরকুট লিখে আত্মহত্যা করেন বর্ষা। এরপর থানায় আরেকটি মামলা করেন তার বাবা। এই মামলাতেও মুকুলসহ ১৩ জনকে আসামি করা হয়। এর মধ্যে মুকুলসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে জেলহাজতে পাঠিয়েছে পুলিশ।

রাজশাহীর এসপি মো. শহিদুল্লাহ জানান, দু’টি মামলায় অধিকতর তদন্তের জন্য গোয়েন্দা শাখায় (ডিবি) হস্তান্তর করা হয়েছে। একইসঙ্গে মামলা যথাসময়ে না নেওয়ায় মোহনপুর থানার ওসি আবুল হোসেনের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ তদন্তে পুলিশের রাজশাহী রেঞ্জের উপ-মহাপরিদর্শকের (ডিআইজি) কার্যালয় ও এসপির কার্যালয় থেকে দুটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত শেষে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

ঢাকাটাইমস/২১মে/ ইএস