কোনো কিছুতেই এ সরকারের দায়িত্ববোধ নেই: ড. কামাল

প্রকাশ | ২২ মে ২০১৯, ১৬:২৫ | আপডেট: ২২ মে ২০১৯, ১৮:৩০

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

ধান উৎপাদনের জন্য কৃষক শাস্তি ভোগ করছে উল্লেখ করে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ও গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন বলেছেন, ‘কোনো কিছুতেই এ সরকারের দায়িত্ববোধ নেই। একটি অনির্বাচিত সরকারকে এভাবে গ্রহণ করায় সকল মানুষকে মূল্য দিতে হচ্ছে। সরকারের উচিৎ দ্রুত নির্বাচন দিয়ে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা।’

বুধবার সকালে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে গণফোরাম আয়োজিত ‘কৃষক-জনতা এক হও, সরকার হটাও- দেশ বাঁচাও’ শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলনে গণফোরাম সভাপতি এসব কথা বলেন।

ড. কামাল বলেন, ‘ধান উৎপাদনের জন্য কৃষককে এ ধরনের শাস্তি ভোগ করতে হবে- তা কল্পনাই করা যায় না। এ ধরনের পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে কারণ, সরকারের কৃষিনীতি নেই। তাছাড়া এ সরকার যা যা করবে বলে ঘোষণা দিয়েছিল তা তারা মেনে চলছে না। তারা ধান উৎপাদনের সময় বড় বড় কথা বলে, কিন্তু উৎপাদনের পরে সরকারের কী করণীয় তাও করে না। এটা যে ধান ক্রয়ের ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে তা নয়, সকল ক্ষেত্রেই সরকারের একটা দায়িত্বহীনতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘কোনো কিছুতেই এ সরকারের দায়িত্ববোধ নেই। কৃষকের ধান কেনাসহ নাগরিকের ব্যাপারেও সরকারে দায়িত্বহীনতা স্পষ্ট। এ জন্য সরকার যেনতেনভাবে ক্ষমতার অপব্যবহার করছে। দেশে যদি এ ধরনের একটি অগণতান্ত্রিক সরকার থাকে তার কাছ থেকে কিছু আশা করতে পারি না। এরা (সরকার) মানুষকে অবজ্ঞা করছে, এরা কী করে বলে যে, তারা পাঁচ বছরের জন্য ক্ষমতা পেয়ে গেছে?’

ড. কামাল বলেন, আমাদের দুর্ভাগ্য এমন সরকারকে ক্ষমতায় দেখতে হচ্ছে, সইতে হচ্ছে। তাই দেশের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে একটা নির্বাচিত সরকার প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে জাতিকে এগিয়ে নিতে হবে। দেশের মানুষকে অবশ্যই ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। সরকারে এসব ব্যর্থতাকে সামনে নিয়ে তারা ঐক্যবদ্ধ হবে। গণতন্ত্রের জন্য তারা শক্তি প্রয়োগ করে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনবে। কারণ, গণতন্ত্র ও জবাবদিহিতা না থাকায় অসাধারণ মূল্য দিতে হচ্ছে আমাদেরকে। তাই আসুন দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করি। এতে একটা জবাবদিহিতামূলক সরকার হবে। অবাধ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে একটি প্রতিনিধিত্বশীল সরকার প্রতিষ্ঠা করি।

সংসদের বাইরে অন্যতম বিরোধী জোট হিসেবে তারা কোনো কর্মসূচি দেবে কি না, তা জানতে চাইলে কামাল হোসেন বলেন, তাঁরা কিছু সুপারিশ দিয়েছেন। এ ছাড়া সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে প্রতিনিধিত্বশীল সরকার গঠনের আহ্বান জানান।

গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক রেজা কিবরিয়া বলেন, দকৃষক বাঁচাও আন্দোলন সব সরকারের সময়েই করতে হয়। কারণ, কৃষকদের দাবিগুলো কেউ তুলে ধরতে চায় না। সরকার ঋণখেলাপিদের প্রতি সহানুভূতিশীল। যতটুকু সহানুভূতি ঋণখেলাপিদের দেখানো হচ্ছে, তার সামান্য যদি কৃষকদের প্রতি দেখানো হয়, অনেক কিছু হতে পারে।’

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি আবু সাইয়িদ বলেন, ‘সরকার ফড়িয়া-মিলমালিক সিন্ডিকেটের সঙ্গে আঁতাত ও লেনদেন করছে। ধান-চাল ক্রয়ে অনিয়ম ও দুর্নীতি রয়েছে।’

এসময় উদ্ভূত পরিস্থিতি সামলাতে চারটি সুপারিশ দেয় গণফোরাম। সেগুলি হলো- হাটগুলোয় ক্রয়কেন্দ্র খুলে সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে ধান কেনা, শস্য বহুমুখী ও দেশে কৃষি যন্ত্রপাতি তৈরিতে সহায়তা, শস্যবিমা চালু এবং খাদ্যগুদাম না থাকলে কৃষকের গোলাতেই ধান রাখা।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি সুব্রত চৌধুরী, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোহসীন রশিদ, মেসবাহ উদ্দিন আহমেদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোশতাক আহমেদ প্রমুখ।

ঢাকাটাইমস/২২মে/ডিএম