বড় রান তাড়া করে জেতাই হবে চ্যালেঞ্জ: মাশরাফি

প্রকাশ | ২৩ মে ২০১৯, ১৩:১০ | আপডেট: ২৩ মে ২০১৯, ১৬:০৬

ক্রীড়া ডেস্ক, ঢাকাটাইমস

প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ ক্রিকেটের সেমিফাইনালে খেলার মাধ্যমে নতুন রেকর্ড গড়তে চায় বাংলাদেশ। টুর্নামেন্টে অন্তত শেষ চারে খেলার প্রত্যাশা নিয়েই ইংল্যান্ড পৌঁছেছে টাইগার অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজার দল। দলটির এই প্রত্যাশার পালে হাওয়া যোগাচ্ছে তাদের মুগ্ধ করা অতীত পারফরম্যান্স। বিশ্ব ক্রিকেটের বড় দলগুলোর জন্যও টাইগাররা এখন গুরুতর হুমকি হয়ে উঠেছে।

দুই বছর আগে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সেমিফাইনাল খেলার মাধ্যমে বাংলাদেশ প্রমাণ করেছে, যেকোনো অভিজাত দলের সঙ্গে পাল্লা দেয়ার যোগ্যতা তাদের আছে। ওই আসরেও অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড ও ইংল্যান্ডের মতো শক্তিশালী গ্রুপে পড়েছিল টাইগাররা। ওই স্মৃতিকে ধারণ করেই এবারের বিশ্বকাপে আরো বেশি কিছু অর্জন করার আশা নিয়ে ইংল্যান্ডে পৌঁছেছে টিম টাইগার। ২০১৫ সালের বিশ্বকাপের কেয়ার্টার ফাইনালে অংশগ্রহণের সুখস্মৃতিও বাংলাদেশের প্রত্যাশার পারদ বাড়িয়ে তুলেছে।

চার বছর আগে গত বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডকে হটিয়ে গ্রুপ পর্বের বাঁধা টপকে বাংলাদেশ প্রমাণ করেছিল নিজেদের আত্মবিশ্বাসকে শাণিত করতে এবং সফলতা পাবার জন্য তারা যেকোনো ঘটনা ঘটাতে পারে।

২০১৫ সালের এপ্রিল থেকে ২০১৬ সালের অক্টোবর পর্যন্ত সময়ের মধ্যে বাংলাদেশ নিজ মাঠে পাকিস্তান, ভারত, দক্ষিণ আফ্রিকা, জিম্বাবুয়ে এবং আফগানিস্তানের বিপক্ষে টানা পাঁচটি ওয়ানডে সিরিজ জয় করেছে। যেটিকেই এখন পর্যন্ত টাইগারদের জন্য সেরা সফলতা হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ওই সিরিজ জয়ের ফলে বাংলাদেশ র‌্যাংকিংয়েও এগিয়ে যায়। যার ভিত্তিতে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ও বিশ্বকাপে সরাসরি খেলার যোগ্যতা অর্জন করে টাইগাররা।

২০১৮ সালে এসেও সেই ধারবাহিকতা রক্ষা করেছে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দল। ২০টি একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচে অংশ নিয়ে জয় পেয়েছে ১৩টিতে। ফলে বর্তমানে আইসিসি র‌্যাংকিংয়ের সপ্তম অবস্থানে রয়েছে টাইগাররা।

বিশাল অভিজ্ঞতাকে সঙ্গী করেই এবারের বিশ্বকাপ আসরে খেলতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। যে দলে রয়েছেন অধিনায়ক মাশরাফি, সহ-অধিনায়ক সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবাল ও মুশফিকুর রহিমের মত অভিজ্ঞ ক্রিকেটার।

সাম্প্রতিক সময়ের নিখাদ পারফরম্যান্স এবং অভিজ্ঞদের উপস্থিতি বাংলাদেশ দলের প্রত্যাশাকে আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। ১৯৯৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত ৫টি বিশ্বকাপ খেলার অভিজ্ঞতাও টাইগারদের আত্মবিশ্বাসকে সমৃদ্ধ করেছে।

মাশরাফি বলেন, ‘তাদের প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে এবারের আসরে অন্তত সেমিফাইনালে পৌঁছানো। তবে রাউন্ড রবিন পর্বে শক্তিশালী দলগুলোকে টপকে যাওয়া বেশ কঠিন হবে’।

আয়ারল্যান্ড সিরিজ শেষে ছুটি কাটাতে দেশে ফিরে আবার ইংল্যান্ডের উদ্দেশ্যে ঢাকা ছাড়ার আগে টাইগার অধিনায়ক বলেন, ‘এই মুহূর্তে আমার মনে হয় সেমিফাইনালে পৌঁছানোটাই বড় চ্যালেঞ্জ। তবে কোনো কিছুই অসম্ভব নয়। কঠিন হলেও এটি অবশ্যই সম্ভব। আগে গ্রুপ পর্বে বড় দলগুলোর একটিতে হারাতে পারাটাই ছিল যথেষ্ট। তবে এখন আমাদের হাতে থাকছে ৯টি ম্যাচ। অন্য যে দলগুলো সেমিফাইনালে খেলার স্বপ্ন দেখছে তাদেরও ব্যর্থ হবার সম্ভাবনা রয়েছে। সুতরাং এ বিষয়ে আমাদের সাবধান হতে হবে। ’

দলগত ঐক্য যেমন বাংলাদেশ দলের বড় শক্তি, তেমনি তাদের জন্য বড় দুর্বলতা হচ্ছে বড় আসরে গিয়ে ব্যর্থ হওয়া। বিশ্ব ক্রিকেট এখন এমন এক পর্যায়ে চলে এসেছ যেখানে ওয়ানডে ক্রিকেটে হরহামেশাই ৩০০ রানের টার্গেট পেরিয়ে জয়লাভ করতে হবে। সেই দিক থেকে বড় সংগ্রাহকের ঘাটতি রয়েছে বাংলাদেশ দলের।

এ পর্যন্ত দু’টি মাত্র ম্যাচে ৩০০ রান তাড়া করে জয় পাবার ইতিহাস রয়েছে বাংলাদেশ দলের। তবে সেখানে তাদের প্রতিপক্ষ দলগুলো ছিল র‌্যাংকিংয়ের নিচের সারির দল জিম্বাবুয়ে ও স্কটল্যান্ড। এই বিশ্বকাপে দলটিকে অবশ্যই উন্নতি করতে হবে বলে মনে করেন মাশরাফি।

আগামী ২ জুন দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে বিশ্বকাপ মিশন শুরু করতে যাওয়া বাংলাদেশ অধিনায়ক বলেন, ‘আপনারা দেখেছেন আমরা ৩২০ বা ৩৪০ রান তাড়া করে জয়ের বিষয়ে খুব একটা অভ্যস্ত নই। একইভাবে আবার প্রতিপক্ষ দলগুলোকেও নিয়মিতভাবে ২৭০ থেকে ২৮০ রানের মধ্যে আটকে রাখতে পারছি না। তাই এখানে আমাদের এই অভ্যাসের পরিবর্তন ঘটাতে হবে। আমাদের যেটুকু রয়েছে তা দিয়েই লড়াই করতে হবে।’

(ঢাকাটাইমস/২৩ মে/এসইউএল)