বোয়ালমারীতে কেঁচো সারে স্বাবলম্বী হচ্ছেন কৃষকরা

প্রকাশ | ২৬ মে ২০১৯, ০৯:৩৬

আমীর চারু, বোয়ালমারী (ফরিদপুর)

গবাদি পশুর গোবর ও রান্নার শাক-সবজির উচ্ছিষ্ট অংশের মিশ্রণে প্রাকৃতিক উপায়ে উৎপাদন করা হয় কেঁচো সার, যা ‘ভার্মি কম্পোস্ট সার’ নামেও পরিচিত।

ফরিদপুরের বোয়ালমারীর চাষিদের মাঝে দিনদিন বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে এই ভার্মি কম্পোস্ট সার। উৎপাদনের কাঁচামাল নিজেদের হাতের কাছে থাকায় ভার্মি কম্পোস্ট সার উৎপাদনে আগ্রহী হয়ে উঠছেন কৃষকরা। সহজেই উৎপাদন ও রাসায়নিক সারের বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করে ইতোমধ্যেই কৃষি খাতে সফলতা অর্জন করেছেন  উপজেলার সাতৈর ইউনিয়নের শতাধিক কৃষক। 

এই এলাকায় সোসাইটি ডেভেলপমেন্ট কমিটি (এসডিসি)। সংস্থাটি সমৃদ্ধি কর্মসূচির আওতায় প্রান্তিক কৃষকদের হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ দিয়ে কেঁঁচো সার উৎপাদনে ব্যাপক ভূমিকা রাখে। বর্তমানে এ অঞ্চলে পল্লী কর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশন পিকেএসএফের অর্থায়নে পরিচালিত সমৃদ্ধি কর্মসূচির সুবিধা ভোগী ১০০ কৃষক সরাসরি কেঁচো সার উৎপাদনের সাথে সম্পৃক্ত।

এতে নিজেদের কৃষি কাজে রাসায়নিক সারের প্রয়োগ কমিয়ে কেঁচো সার ব্যবহার ও বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন করে স্বাবলম্বী হচ্ছেন কেউ কেউ।

রামদিয়া গ্রামের কৃষক আকবর মোল্যা জানান, গৃহপালিত গবাদিপশুর গোবর আগে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করতাম। বর্তমানে এসডিসির থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে ভার্মি কম্পোস্ট সার তৈরি করি। এই প্লান্ট থেকে মাসে তিন মণ সার উৎপাদন করি, যা আমার জমির রাসায়নিক সারের বিকল্প হিসেবে চাহিদা পূরণ করে, এতে বর্তমান উচ্চ ফলন পাচ্ছি। তাছাড়া নিজের চাহিদা মিটিয়ে আশপাশের কৃষকদের মাঝেও বিক্রি করে থাকি। পনের টাকা কেজি দরে কৃষকরা বাড়ি থেকেই এই সার নিয়ে যায়।

কাদেরদী গ্রামের কৃষক দেলোয়ার হোসেন জানান, ভার্মি কম্পোস্ট সার ব্যবহারের ফলে ফলন বেড়েছে। তাছাড়া নিজেই উৎপাদন করি বলে খরচও কমে গেছে। আর কেঁচো সারের পাশাপাশি কেঁচো বিক্রি করে বাড়তি আয় হচ্ছে। এতে সংসারের ছোটখাটো চাহিদাও মেটাতে পারছি।

সোসাইটি ডেভেলপমেন্ট কমিটির সমৃদ্ধি কর্মসূচির প্রকল্প সমন্বয়কারী কৃষিবিদ দিদারুল আলম বলেন, ‘রাসায়নিক সারে মাটির উর্বরতা হ্রাস পাচ্ছে। কেঁচো সার ব্যবহারে জমির জৈব উর্বরতা ফিরিয়ে আনা সম্ভব। সেই সাথে বিষমুক্ত ফসল ফলানোতে জৈব সারের বিকল্প নেই। এ অঞ্চলে এসডিসি সমৃদ্ধি কর্মসূচির আওতায়  প্রায় ১১০ জন কৃষককে হাতে-কলমে ভার্মি কম্পোস্ট সার উৎপাদনে সক্ষম করে তোলা হয়েছে।’