ইটভাটার ধোঁয়ায় নষ্ট ২৫ একর জমির ধান

প্রকাশ | ২৬ মে ২০১৯, ১০:২৩ | আপডেট: ২৬ মে ২০১৯, ১১:২৭

রেজাউল করিম খান রাজু, ঘাটাইল প্রতিবেদক

টাঙ্গাইলের ঘাটাইলে ইটভাটা থেকে নির্গত বিষাক্ত গ্যাস ও ধোঁয়ায় নষ্ট হয়ে গেছে প্রায় ২৫ একর জমির বোরো ধান। উপজেলার সংগ্রামপুর ইউনিয়নের হাজীপুর এলাকায় স্থাপিত ফরিদ ইটভাটা থেকে নির্গত বিষাক্ত গ্যাসে জমির ধান পুড়ে গেছে বলে হাজীপুর ও মানিকপুর এলাকার কৃষকদের দাবি। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে শতাধিক কৃষক পরিবার। এ ব্যাপারে ইটভাটার মালিকের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাগ্রহণ ও ক্ষতিপূরণ চেয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন ক্ষতিগ্রস্তরা।

জানা যায়, উপজেলার সংগ্রামপুর ইউনিয়নের হাজীপুর গ্রামের তিন ফসলি জমির উপর গড়ে উঠেছে ফরিদ ইটভাটা। ইটভাটাটির মালিক মোনছের আলী। ইটভাটা স্থাপন আইন অনুসারে ভাটার জন্য চিমনির উচ্চতা থাকার কথা সর্বনিম্ন ১২০ ফুট। কিন্তু এ ভাটার চিমনির উচ্চতা রয়েছে আনুমানিক ৬০ ফুট।

এলাকাবাসী জানায়, চিমনির উচ্চতা কম হওয়ায় ইটভাটা থেকে ছেড়ে দেয়া গ্যাস ও ধোঁয়া সরাসরি ফসলের উপর গিয়ে পড়ে। এর ফলে ইটভাটার আশপাশের প্রায় ২৫ একর জমির ধান সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গেছে। দূর থেকে মনে হবে পাকা ধানে মাঠ ভরে আছে কিন্তু বাস্তবে তা নয়। ইটভাটার ধোঁয়া ও গ্যাসে জমির ধান নষ্ট হয়ে সোনালী আকার ধারন করেছে।

মানিকপুর গ্রামের কৃষক খায়রুল বাশার বলেন, ‘আমার দেড় বিঘা জমিই শেষ সম্বল ছিল। এ জমিতে ধানও হয়েছিল ভাল। কিন্ত ঘরে তুলতে পারলাম না কষ্টের ফসল। এমন দৃশ্যে দেখে বুক ফেটে কান্না আসে।

হাজীপুর গ্রামের কৃষক আজাহার আলী জানান, ‘ভাটার বিষাক্ত গ্যাসে আমার বোরো ধানের পাঁচ বিঘা জমির ধান পুড়ে গেছে।তিনি ফসলের ক্ষতিপূরণ দাবি করেন এবং ফসলি জমি থেকে ইটভাটাটি উচ্ছেদেরও দাবি জানান।

ফরিদ ইটভাটার মালিক মোনছের আলী বলেন, ইটভাটার কারণে ক্ষেতের ধান পোড়ে নাই। রোগ বালাইয়ের কারণে ক্ষেতের ধান নষ্ট হয়েছে। তারপরও  ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের জরিমানা দিয়ে বিষয়টি স্থানীয়ভাবে সমাধান করা হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল মতিন বিশ্বাস বলেন, ইটভাটার গ্যাস চেম্বার খুলে দিলে ফসল পুড়ে যাওয়ায় সম্ভাবনা আছে। রোগবালাই না ইটভাটার নির্গত গ্যাসে জমির ধান নষ্ট হয়েছে সরেজমিনে তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। তদন্তের পর বলা যাবে কি কারণে জমির ধান পুড়ে গেছে বা নষ্ট হয়েছে।

এ বিষয়ে ঘাটাইল উপজেলা চেয়ারম্যান মো. শহিদুল ইসলাম লেবু বলেন, এ বিষয়ে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। বিষয়টি স্থানীয় কৃষি অধিদপ্তর তদন্ত করে দেখছে। ইটভাটার কারণে ধানের ক্ষতি হলে ইটভাটা মালিককে অবশ্যই ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।

ঢাকাটাইমস/২৬মে/প্রতিনিধি/এমআর