দ্বিতীয় মেয়াদে মোদির চ্যালেঞ্জ

প্রকাশ | ২৬ মে ২০১৯, ১০:৫৮

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, ঢাকা টাইমস

নরেন্দ্র মোদির জয়ের খবরে ভারতের শেয়ার বাজারগুলো যেমন চাঙ্গা হয়েছে, তেমনি বেড়েছে রুপির মান। তবে বিজয়ের রেশ কাটার পরেই অর্থনীতির পুরনো চ্যালেঞ্জ গুলোই আসবে মোদির সামনে। কিন্তু তারও আগে নতুন করে প্রশ্ন আসবে আগের দফায় কী করেছেন তিনি।

এর উত্তর অনেকটাই মিশ্র পাওয়া যাবে। খারাপ ঋণ সামাল দিতে নতুন দেউলিয়া আইনের মতো কিছু শক্ত সংস্কারের পদক্ষেপ নেয়া হয়েছিলো যা ব্যাংক খাতে যথেষ্ট চাপ তৈরি করেছিল। এর জের ধরে বিশ্বব্যাংকের ডুয়িং বিজনেস র‍্যাংকিংয়ে ৭৭তম স্থানে উঠে এসেছে ভারত।

তার প্রথম মেয়াদেই ভারত পরিণত হয়েছে বিশ্বের সবচেয়ে ‘দ্রুত বর্ধনশীল’ অর্থনীতিতে। কিন্তু বড় জুয়ার বিষয় ছিলো দুর্নীতি রোধে প্রায় তিন ভাগ রুপির নোট নিষিদ্ধ করা। সেটিই বড় ধাক্কা দিয়েছে অর্থনৈতিক অগ্রগতিকে। পর্যাপ্ত বিকল্পের ব্যবস্থা না করে নেয়া ওই পদক্ষেপে কার্যত ভারতের বিশাল অর্থনীতি খোঁড়াতে শুরু করে এবং অনেকে কাজও হারায়।

অর্থনীতিবিদ সুরজিত ভাল্লা বিবিসিকে বলেন, ‘দ্বিতীয় দফার বিজয় মোদিকে অনেক কঠিন সিদ্ধান্ত নেয়ার স্বাধীনতা দেবে। বিজয়ের আকারই বলে দিচ্ছে আগামী পাঁচ বছরে শক্ত সংস্কারের প্রত্যাশা আমরা করতেই পারি।’

২০১৮ সালের ডিসেম্বরে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ধীর হয়ে ৬.৬ শতাংশ হয়েছিল। সরকারেরই ফাঁস হওয়া একটি প্রতিবেদন থেকে জানায যায়, বেকারত্ব ৪৫ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ছিলো ২০১৬-১৭ সময়কালে।

বিশ্লেষকরা মনে করেন, চাকরির সুযোগ বাড়াতে বেসরকারি খাতকে চাঙ্গা করতে হবে। তার ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ কর্মসূচি করাই হয়েছিল উৎপাদন খাতকে চাঙ্গা করার জন্য। আদিত্য বিড়লা গ্রুপের প্রধান অর্থনীতিবিদ অজিত রানাদে বলছেন, বিদেশের বাজারে নজর দিলেই খুলে যেতে পারে কর্মসংস্থানের অনেক সুযোগ। তার মতে, নতুন সরকারের উচিত হবে নির্মাণ, পর্যটন, বস্ত্র ও কৃষিখাতে নজর দেয়া।

চীনের মতো ভারতের অর্থনীতির একটি বড় চালিকা শক্তি তার নিজের বাজার। তবে সাম্প্রতিক তথ্য বলছে, গত কয়েকমাস এ বাজারের গতি ধীর হয়েছে। গাড়ী, ট্রাক্টর, মোটরসাইকেল বিক্রি কমেছে। কম দেখা যাচ্ছে ব্যাংক ঋণের চাহিদাও। ইউনিলিভারের মতো কোম্পানির প্রবৃদ্ধির গতি কমেছে।

মোদির দল অঙ্গীকার করেছে যে মানুষের হাতে টাকা যেনো বেশি থাকে এবং মধ্য আয়ের মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বাড়াতে আয়কর কমানো হবে।

কৃষিখাতের চ্যালেঞ্জ প্রথম মেয়াদে নিয়মিতই মোকাবেলা করতে হয়েছে নরেন্দ্র মোদিকে। শস্যের দাম চেয়ে দেশজুড়ে কৃষকদের বিক্ষোভ বারবার আলোচনায় এসেছে। ছোট মাপের কৃষকদের আরও সহায়তা দেয়ার অঙ্গীকার করেছেন তিনি। কিন্তু এক্ষেত্রে বড় চ্যালেঞ্জ হবে বাজার কাঠামো।

তার নির্বাচনী প্রতিশ্রুতির একটি বড় জায়গা হলো সড়ক, রেল ও অন্য অবকাঠামো নির্মাণ। কিন্তু এসবের জন্য বড় মাপের অর্থ আসবে কোথা থেকে। পর্যবেক্ষকরা মনে করেন- এর উৎস হবে বেসরকারিকরণ। ভাল্লা মনে করেন, দ্বিতীয় মেয়াদে এ বিষয়ে আরও জোর দেয়ার সুযোগ পাবেন মোদি। প্রথম মেয়াদে শক্ত সংস্কারের উদ্যোগ নেয়ার স্বাদ পেয়েছেন মোদি। দ্বিতীয় মেয়াদে তাই তিনি আরও ঝুঁকি নিতে পারবেন।

ঢাকা টাইমস/২৬মে/একে