পোশাক শিল্পে প্রণোদনার প্রয়োজনীয়তা জানালেন রুবানা
তৈরি পোশাক শিল্পে ৪৪ লাখ শ্রমিক কর্মরত। ৮২ শতাংশ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন হয় এ খাত থেকে। জিডিপিতে পোশাক শিল্পের অবদান ১৩ শতাংশ। সেবাখাতগুলোরও নির্ভরশীল এ খাতের উপর।
এসব যুক্তি দেখিয়ে বিজিএমইএর সভাপতি রুবানা হক বলেন, এখন পোশাক শিল্পের এমন পরিস্থিতি যে, ২০১৯-২০২০ অর্থবছরের বাজেটে শিল্পের বিশেষ সহায়তা না দেয়া হয়, তবে আগামী দিনগুলো শিল্পের জন্য কঠিন হয়ে উঠবে। আমরা আগামী বাজেটে সব রপ্তানি বাজারের জন্য পাঁচ শতাংশ নগদ সহায়তা চাই।
সোমবার রাজধানীর গুলশানের এক অভিজাত হোটেলে সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সভাপতি রুবানা হক।
প্রাক বাজেট শীর্ষক এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে বস্ত্র খাতের মালিকদের তিন সংগঠন বিজিএমইএ, বিকেএমইএ ও বিটিএমএ।
রুবানা হক বলেন, সর্ববৃহৎ রপ্তানি এ খাত থেকে ২০১৭-২০১৮ অর্থ অর্থবছরে রপ্তানি আয় ৩০.৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় হয়েছে। চলতি অর্থবছরে এ খাতে আয় হবে ৩৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। আমাদের পোশাক খাতে যদি একবেলা কেউ ২৫ টাকার খাবার খান তাহলে সাড়ে সাত কোটি টাকা খরচ হয়। ধরি ২০ লাখ শ্রমিক বোন ৩০০ টাকার একটি শাড়ি কিনে সাড়া বছরে তাহলে ৬০ কোটি টাকার শাড়ি হবে। যদি ১০ লক্ষ শ্রমিক মাসে মাত্র দেড় হাজার টাকা বাড়ি ভাড়া দেন, তাহলে মাসে ১৫০ কোটি টাকা বাড়ি ভাড়া দিচ্ছেন। সব পরিসংখ্যান মাথায় নিয়ে ভাবতে হবে পোশাক খাত কেন আমাদের প্রয়োজন। কেন এ খাত টিকে রাখা প্রয়োজন।
বিজিএমইএর সভাপতি রুবানা হক বলেন, বর্তমান বাস্তবতা ভিন্ন সেটা গত এক মাস বিভিন্ন জায়গায় বলার চেষ্টা করেছি। বিশ্ববাজারে তৈরি পোশাকের দাম দিন দিন কমছে। আমাদের অবস্থা অত্যন্ত সংকটাপন্ন। আমরা গত এক মাসে ২২টি ফ্যাক্টরি বন্ধ করে দিয়েছি। তারা বেতন দিতে পারছে না। গত ছয় বছরে বন্ধ হয়েছে এক হাজার ২০০ কারখানা। আমাদের বুঝতে হবে যে, প্রাক নির্বাচনি সময় ক্রেতারা আমাদের কম অর্ডার দিয়েছেন। দামও পড়ে গেছে। আমাদের প্রত্যেকের বেতন, বোনাস দিতে কষ্ট হচ্ছে। আমরা প্রতিনিয়ত ক্ষুদ্র মাঝারি ফ্যাক্টরির সঙ্গে বসছি- তাদের কিভাবে টিকিয়ে রাখা যায় সে বিষয়ে। ক্ষুদ্র মাঝারি উদ্যোক্তাদের বাঁচিয়ে রাখতে হবে।
তিনি বলেন, পোশাক খাতে ক্রান্তি লগ্নে আমরা পৌঁছেছি। আমরা সহযোগিতা না পাই, তাহলে আমাদের কষ্ট হবে। আমাদের আগামি পাঁচ বছরের জন্য যদি আমাদের এ ভর্তুকি দেয়া হয় তাহলে পোশাক খাত একদম ঘুরে দাঁড়াবে।
সরকারের কাছে আমাদের রপ্তানি মার্কেটের জন্য ইনসেনটিভ চেয়েছি পাঁচ শতাংশ। সব বাজারে ৫ শতাংশ হারে নগদ সহায়তা দিলে সরকারের খরচ হবে সর্বোচ্চ ১১ হাজার ৭২৪ কোটি টাকা। কিন্তু এতে লাভবান হবে পুরো খাত। পাঁচ লক্ষ কোটি টাকার বাজেটে গুরুত্ব বিবেচনায় এটা সামান্য টাকা। আমি আশা করি, সরকারে সংশ্লিষ্ট যারা দায়িত্বে আছেন তারা বিষয়টি বুঝবেন।
বিকেএমইএর জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি এম মনসুর আহমেদ, বিটিএমএর সভাপতি মাহমুদ আলী খোকন, এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের (ইএবি) প্রথম সহ-সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম এ সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন।
(ঢাকাটাইমস/২৭মে/জেআর/এলএ)