মুক্তিপণ আদায়ে ব্যর্থ হয়ে রূপকের গলা কাটে তিন বন্ধু

রাজীবুল হাসান, ভৈরব (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি
| আপডেট : ৩১ মে ২০১৯, ১৮:০৩ | প্রকাশিত : ৩১ মে ২০১৯, ১৭:৫১

ভৈরবে অপহরণের পর মুক্তিপণ আদায়ে ব্যর্থ হয়ে মো. ফারদিন আলম রূপক (১৬) নামে এক ছাত্রকে গলাকেটে হত্যা করা হয়েছে। তার তিন সহপাঠী মিলে এ হত্যাকা- ঘটায়।

নিখোঁজের একদিন পর আজ শুক্রবার সকালে পৌর শহরের আইডিয়াল স্কুল সংলগ্ন ব্যবসায়ী হাজী আবু বক্কর সিদ্দিকের পাঁচতলা ভবনের ছাদ থেকে পুলিশ রূপকের বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার করে। পরে এ ঘটনায় আটক তিন সহপাঠী পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনার বিস্তারিত বর্ণনা দেয়।

নিহত রূপক ভৈরব বাজারের সিমেন্ট ব্যবসায়ী মো.বিপ্লব মিয়ার ছেলে। সে এ বছর ভৈরব কেবি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ ফাইভ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়।

আটককৃতরা হলেন ভৈরব পৌর শহরের ব্যবসায়ী শাহজাহান পাটোয়ারীর ছেলে আরাফাত পাটোয়ারী, কামাল মিয়ার ছেলে ফজলে রাব্বি, ওবায়েদুল কবির খান এর ছেলে রেজাউল কবির খান। এরা চারজনই এ বছর ভৈরব কেবি সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষায় পাস করে।

হত্যাকারীদের মধ্য বিল্ডিং মালিকের নাতী ফজলে রাব্বি পিয়াল রয়েছে এবং বাকী দুজন তার বিল্ডিংয়ের ভাড়াটিয়া।

পুলিশ ও স্বজনরা জানায়, বৃহস্পতিবার রাত প্রায় ৯ টার দিকে আরাফাত পাটোয়ারী তার বন্ধু রূপককে মোবাইলে জরুরি কথা আছে বলে আবুবকর সিদ্দিকের বিল্ডিং আসতে বলে। এর আগে সে তার দুই বন্ধু ফজলে রাব্বি পিয়াল ও রেজাউল কবিরের সাথে শলাপরামর্শ করে সিদ্ধান্ত নেয় রুপককে ডেকে এনে তার বাবার কাছে মুক্তিপণের টাকা চাইবে। এদিকে রুপক বন্ধুর ফোন পেয়ে দ্রুত ওই বিল্ডিংয়ে চলে যায়।

রুপক আসার পর তিন বন্ধু মিলে তাকে জাপটিয়ে ধরলে সে বাচাঁর জন্য চেষ্টা করে। এক পর্যায়ে তার গলায় রশি দিয়ে পেঁচিয়ে ধরলে সে অজ্ঞান হয়ে যায়। তারপর ভয়ে রূপকের গলায় ছুরি চালায় তিন সহপাঠী বন্ধু। এরপর রাতেই তিনজন মিলে বস্তায় তার লাশ ভর্তি করে ছাদে রেখে সবাই যার যার বাসায় চলে যায়। আজ সকালে বিল্ডিং মালিক লাশের গন্ধ পেয়ে ছাদে গিয়ে বস্তাটি দেখতে পেয়ে তার নাতীসহ তিনজনকে আটক করে খবর দিলে পুলিশ লাশ উদ্ধারসহ তাদেরকে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। পরে থানা পুলিশের কাছে তিনবন্ধুই হত্যার কথা স্বীকার করে বিস্তারিত ঘটনা জানায়।

নিহত রূপকের চাচা সজীব আহমেদ জানান, গতকাল রাত থেকে আমার ভাতিজা নিখোঁজ। অনেক খোঁজাখুঁজির পর কোথাও না পেয়ে রাত দুইটায় ভৈরব থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি দায়ের করি। এই হত্যার সাথে জড়িতদের অতি দ্রুত আইনের আওতায় সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানান তিনি।

ভৈরব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোখলেছুর রহমান ঢাকাটাইমসকে বলেন, মুক্তিপণের টাকা আদায়ের জন্যই তিন বন্ধু মিলে রূপককে হত্যা করে। তারা পুলিশের কাছে হত্যার ঘটনা স্বীকার করে। এ ব্যাপারে তার পরিবার মামলা করার পর অপরাধীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

ঢাকাটাইমস/৩১মে/ইএস

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :