শিক্ষার্থীকে ফাঁসানোয় দুই পুলিশের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু

ভৈরব (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ০৩ জুন ২০১৯, ২১:০৪

কিশোরগঞ্জের ভৈরবে শিক্ষার্থীকে মাদক দিয়ে ফাঁসাতে গিয়ে দুই পুলিশ গণধোলায়ের শিকার হওয়ার ঘটনায় তদন্ত শুরু হয়েছে। সোমবার দুপুরে কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) মিজানুর রহমান ঘটনা তদন্তে ভৈরবে পৌঁছেন।

পুলিশ সুপার মাশরুকুর রহমান খালেদ নির্দেশে ঘটনার সাথে সম্পৃক্তদের সাথে কথা বলে ঘটনার সত্যতা যাচাই করেন তিনি।

এদিকে এলাকাবাসী এ ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশসহ নিন্দা জানিয়েছে। অনেকেই বলেছেন, পুলিশ যদি সাধারণ মানুষকে হয়রানি করে তবে সমাজে নিরীহ মানুষ জীবন-যাপন করা কঠিন হয়ে পড়বে।

গত শনিবার রাতে ভৈরব থানা পুলিশের দুই এসআই সজীব আহমেদ নামে এক কলেজছাত্রকে মাদক দিয়ে ফাঁসাতে গিয়ে শম্ভুপুর এলাকায় জনতার হাতে গণধোলাইয়ের শিকার হন। এখবর পেয়ে থানার অন্য পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে জনতার হাতে আটক ওই দুই পুলিশকে উদ্ধার করেন। এরা হলেন- এসআই আবুল খায়ের ও এসআই আজিজুল হক।

কলেজশিক্ষার্থীর বাবার নাম সাব মিয়া এবং বাড়ি ভৈরবের শম্ভুপুর এলাকায়। ঘটনার পরপর পুলিশ শিক্ষার্থীর বাবাসহ ছয়জনকে আটক করলেও পরদিন রবিবার বিকালে বিষয়টি এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সাথে আলোচনা করে তাদের ছেড়ে দেয়া হয়। তবে প্রশ্ন দেখা দেয়, পুলিশ আইনের রক্ষক হয়ে তারা দুজন একজন ভাল ছেলেকে মাদক দিয়ে ফাঁসাতে গেল কেন। একারণেই জনতা ক্ষিপ্ত হয়ে পুলিশকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) মিজানুর রহমান সোমবার দুপুরে ঘটনা তদন্তে এসে অভিযুক্ত দুই পুলিশসহ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোখলেছুর রহমানের বক্তব্য নেন। ঘটনার সময় তাকে উদ্ধার করতে যেসব পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়েছেন তাদের জবানবন্দিও নেয়া হয়। পরে ঘটনাস্থল ভৈরব পৌর শহরের শম্ভুপুর এলাকায় গিয়ে এলাকাবাসীসহ প্রত্যক্ষদর্শীর বক্তব্য গ্রহণ করেন। এছাড়া ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী সজীবের বাবা সাব মিয়াসহ সেদিন পুলিশের হাতে আটক ছয়জনের জবানবন্দি নেন তিনি।

সজীবের বাবা সাব মিয়া জানান, আমার ছেলে মাদক সেবন কখনও করে না। পুলিশ আমার ছেলে মাদক দিয়ে ফাঁসাতে চেয়েছিল। তাই সে কৌশলে পালিয়ে এসে বেঁচে যায়। পুলিশের পোশাক না থাকায় তারা দুজনকে সন্দেহ করছিল।

এলাকার বোরহান মিয়া জানান, আমিসহ কয়েকজন পুলিশকে জনতার হাত থেকে রক্ষা করি। তা নাহলে পুলিশ আরও নির্যাতনের শিকার হতো।

তিনি বলেন, সজীব ছেলেটি কখনও নেশা করতে দেখেনি এবং মাদকের ব্যবসার সাথে জড়িত নয়। ভাল ছেলেকে পুলিশ মাদক দিয়ে ফাঁসাতে চেয়ে তারা নিজেরাই ফেঁসে গেছে।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) ও ঘটনার তদন্তকারী কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, ‘ঘটনার বিষয় ও পুলিশকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা এবং সাধারণ মানুষকে আটক করা এসব ব্যাপারে তদন্ত করতে গিয়ে সবার বক্তব্য নিয়েছি। ঘটনার সাথে জড়িত ও প্রত্যক্ষদর্শীর বক্তব্যও নেয়া হয়। তদন্তে দুই পুলিশ অফিসারের কিছুটা দোষ পাওয়া যায় বলে তিনি স্বীকার করেন।

তবে তিনি ঘটনায় জনতাকেও কিছুটা দায়ী করেন। পোশাকবিহীনভাবে শিক্ষার্থীকে আটকের চেষ্টা করা পুলিশের ঠিক হয়নি বলে মন্তব্য করেন।

তিনি জানান, ঘটনার তদন্ত শেষ করে আমি পুলিশ সুপারের কাছে তদন্ত রিপোর্ট পেশ করব।

ভৈরব পৌর মেয়র ফখরুল আলম আক্কাছ বলেন, পুলিশ হলো আইনের রক্ষক। যদি রক্ষক হয়ে ভক্ষকের মত দায়িত্ব পালন করে তাহলে দেশের নিরীহ সাধারণ মানুষ যাবে কোথায়! এধরনের ঘটনা যারা ঘটনায় তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবির জানান তিনি।

(ঢাকাটাইমস/৩জুন/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :