ইউক্রেন থেকে এসে এটিএমের টাকা লুটত তারা

প্রকাশ | ০৪ জুন ২০১৯, ১৭:৪৩

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

তারা ইউক্রেন থেকে ট্যুরিস্ট ভিসায় এসেছে বাংলাদেশে। এসেই জড়িয়ে পড়ে জালিয়াতিতে। এটিএম বুথ থেকে লুটতে থাকে টাকা। আর এসব নিয়ন্ত্রিত হয় সুদূর ইউক্রেন থেকে। বাংলাদেশে আসা এমনই এক ইউক্রেনীয় জালিয়াত চক্রকে পাকড়াও করেছে পুলিশ।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) আবদুল বাতেন।

এই প্রতারক চক্রের কাজ নিয়ন্ত্রিত হতো ইউক্রেন থেকে। নির্ধারিত বুথে প্রবেশের পর এই জালিয়াতরা মোবাইল ফোনে ইউক্রেনে থাকা সহযোগীদের সঙ্গে যোগাযোগ করত। আর তখনই বুথের মেশিন ও সফটওয়্যারের স্বাভাবিক কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যেত। এই সুযোগে বুথের মেশিন থেকে টাকা তুলে নেয় জালিয়াত চক্রের সদস্যরা। জালিয়াতির জন্য এক ধরনের ডিসকাউন্ট কার্ড ব্যবহার করত তারা।

আবদুল বাতেন বলেন, আট দিনের টুরিস্ট ভিসা নিয়ে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে এসেছিল সাতজন ইউক্রেনীয় নাগরিক। তারা জালিয়াতির মাধ্যমে এটিএম বুথ থেকে টাকা তুলে নেওয়ার উদ্দেশ্যে বাংলাদেশে এসেছিল। তাদের পরবর্তী টার্গেট ছিল পাশের দেশ ভারত।

১ জুন সন্ধ্যায় রাজধানীর খিলগাঁও তালতলা এলাকার ডাচ-বাংলা ব্যাংকের একটি বুথ থেকে জালিয়াতি করে অর্থ তুলে নেওয়ার সময় ইউক্রেনের এক নাগরিককে আটক করেন বুথের নিরাপত্তাকর্মী। পরে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে রাতে পান্থপথের হোটেল ওলিও ড্রিম হ্যাভেনে অভিযান চালিয়ে আরও পাঁচ ইউক্রেনীয়কে গ্রেপ্তার করা হয়। তারা হলেন- ভ্যালেনটাইন (পাসপোর্ট নম্বর ইওয়াই ০৫১৫৬২), ওলেগ (পাসপোর্ট নম্বর ইএক্স ০৮৯৯৬৩), ডেনিস (পাসপোর্ট নম্বর এফএল ০১৯৮৩৪) নাজেরি (পাসপোর্ট নম্বর এফটি ৫০০৫০১), সারগি (পাসপোর্ট নম্বর এফএইচ ৪২৪৩৯৪) ও ভোলোবিহাইন (পাসপোর্ট এফটি ৩৭৯৯৮৩)।

তবে অভিযানের বিষয়টি টের পেয়ে ভিটালি (পাসপোর্ট নম্বর এফই ৮০৪৪৪৮) নামে এক ইউক্রেনিয়ান পালিয়ে গেছেন। তাকে ধরার জন্য রাজধানীর বিভিন্ন আবাসিক হোটেলে অভিযান চালানো হচ্ছে।

গতকাল সোমবার জালিয়াতি চক্রের সদস্য ইউক্রেনের ছয় নাগরিককে আদালতে সোপর্দ করার পর তিন দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে আবদুল বাতেন বলেন, ‘আমাদের এটিএম বুথগুলোতে এনসিআর কোম্পানির মেশিন ও সফটওয়্যার ব্যবহার করা হয়। জালিয়াতরা পুরো সফটওয়্যারের স্বাভাবিক কার্যক্রম বন্ধ করে টাকা তুলে নেয়।

আটক ব্যক্তিরা  প্রযুক্তিগত বিষয়গুলো খুব একটা ভালো জানে না উল্লেখ করে পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, তারা শুধু ব্যবহৃত হয়েছে। এমনকি তারা যে মোবাইল ফোনে কথা বলেছে সেটাও রোমিং করা। আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে বলে জানান তিনি।

ডিএমপির গোয়েন্দা প্রধান বলেন, জালিয়াত চক্রের একজন সদস্য পলাতক রয়েছে, তার কাছে আরও ডিভাইস থাকতে পারে বলে ধারণা করছেন গোয়েন্দারা।

এদিকে জালিয়াত চক্রের সঙ্গে বাংলাদেশের কেউ জড়িত রয়েছে কি না তা এখনো নিশ্চিত করতে পারেনি পুলিশ। মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) বলেন, ‘আমরা আইটি এক্সপার্টসহ যাদের প্রয়োজন, সবাইকে নিয়ে কাজ করছি। বিস্তারিত তথ্য ঈদের পর জানানো যাবে।’

(ঢাকাটাইমস/৪জুন/এএ/মোআ)