লাকীর জন্মদিনে গুগলের ডুডল

প্রকাশ | ০৭ জুন ২০১৯, ১২:৪১

বিনোদন প্রতিবেদক

বাংলাদেশের একজন প্রখ্যাত সুরকার, সংগীত পরিচালক ও গায়ক লাকী আখান্দ। তিনি ব্যান্ড দল ‘হ্যাপী টাচ’-এর সদস্য ছিলেন। তার সংগীতায়োজনে করা বিখ্যাত গানের মধ্যে ‘এই নীল মনিহার’, ‘আবার এলো যে সন্ধ্যা’ এবং ‘আমায় ডেকো না’ উল্লেখযোগ্য। তিনি জাতীয় রেডিও নেটওয়ার্ক বাংলাদেশ বেতারের সংগীত পরিচালক হিসেবেও কাজ করেছেন।

বহু প্রতিভাধর এই সংগীত তারকার আজ ৬৩তম জন্মদিন। শিল্পীর বিশেষ এ দিনে তাকে স্মরণ করেছে বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় সার্চ ইঞ্জিন গুগল। শুক্রবার সকাল থেকে গুগলের হোমপেজ খুললেই চোখে পড়ছে অতিপরিচিত লাকী আখান্দর মুখটি। মাথায় টুপি, হাতে গিটার। কিংবদন্তি লাকীর চিরচেনা এই ভঙ্গি দিয়েই ডুডল করেছে গুগল। গুগল তাদের ডুডল পাতায় লাকীর জীবন-সম্পর্কিত তথ্য তুলে ধরেছে। এ ছাড়া ডুডলের ওপর ক্লিক করলে লাকী আখান্দ–সংক্রান্ত তথ্য পাতায় নিয়ে যাচ্ছে।

১৯৫৬ সালের ৭ জুন ঢাকার পাতলা খান লেনে জন্ম হয়েছিল লাকী আখান্দের। মাত্র পাঁচ বছর বয়সেই তিনি তার বাবার কাছে সংগীত বিষয়ে হাতেখড়ি নেন। এরপর ১৯৬৩ থেকে ১৯৬৭ সাল পর্যন্ত টেলিভিশন এবং রেডিওতে শিশুশিল্পী হিসেবে সংগীত বিষয়ক অনুষ্ঠানে অংশ নেন। মাত্র ১৪ বছর বয়সে এইচএমভি পাকিস্তানের সুরকার এবং ১৬ বছর বয়সে এইচএমভি ভারতের সংগীত পরিচালক হিসেবে নিজের নাম যুক্ত করেন।

১৯৭৫ সালে লাকী আখান্দ তার ছোট ভাই হ্যাপী আখন্দের একটি অ্যালবামের সংগীতায়োজন করেন। অ্যালবামটিতে ‘আবার এলো যে সন্ধ্যা’ ও ‘কে বাঁশি বাজায় রে’ গানে কণ্ঠ দেন হ্যাপী। ‘স্বাধীনতা তোমাকে নিয়ে’ ও ‘পাহাড়ি ঝর্ণা’ গান দুটিতে কণ্ঠ দেন হ্যাপী ও লাকী দুজনে। লাকী নিজে ‘নীল নীল শাড়ি পরে’ ও ‘হঠাৎ করে বাংলাদেশ’ গান দুটি করেন।

১৯৮০ সালে সৈয়দ সালাউদ্দিন জাকী পরিচালিত ‘ঘুড্ডি’ ছবির সংগীত পরিচালনা করেন লাকী। এই ছবিতে ‘আবার এলো যে সন্ধ্যা’ গানটি ব্যবহৃত হয় এবং ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায়। ১৯৮৪ সালে তিনি তার প্রথম একক অ্যালবাম ‘লাকী আখান্দ’ প্রকাশ করেন। সেটির উল্লেখযোগ্য গানগুলো হল ‘আগে যদি জানতাম’, ‘আমায় ডেকো না’, ‘মামুনিয়া’, ‘এই নীল মনিহার’, ও ‘হৃদয় আমার’।

লাকীর সঙ্গীতচর্চা বন্ধ হয় তার ছোট ভাই হ্যাপী আখন্দ ১৯৮৭ সালে মারা যাওয়ার পর। প্রায় এক যুগ পরে ১৯৯৮ সালে ‘পরিচয় কবে হবে’ ও ‘বিতৃষ্ণা জীবনে আমার’ অ্যালবাম দুটির মাধ্যমে আবার গানের ভুবনে ফিরে আসেন। একই বছর সামিনা চৌধুরীকে নিয়ে তিনি ‘আনন্দ চোখ’ নামে একটি দ্বৈত অ্যালবাম প্রকাশ করেন। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত লাকী আরও বেশ কয়েকটি অ্যালবামের সংগীত পরিচালনা করেন।

কিংবদন্তি সংগীত বিশারদ লাকী আকান্দ মারা যান ২০১৭ সালের ২১ এপ্রিল। দীর্ঘদিন ধরে ফুসফুস ক্যানসারে ভুগছিলেন তিনি। এদিন নিজের আর্মানিটোলার বাসাতে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে দ্রুত তাকে মিটফোর্ড হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তার মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদসহ দেশের গোটা সংগীত জগত গভীর শোক জানিয়েছিলেন।

ঢাকাটাইমস/৭ জুন/এএইচ