সাধারণ প্রবাসীদের কি নিরাপত্তা আছে?

প্রকাশ | ০৭ জুন ২০১৯, ১৯:২৭

ওমর আলী

একজন প্রবাসীর ঈদ, ঈদ মানে আনন্দ ঈদ মানে খুশি, আর প্রবাসীদের ঈদ মানে দুঃখ কষ্ট, কথায় আছে সম্পর্ক কাছের মানুষ কে দূরে সরিয়ে দেয়, আর দূরের মানুষ কে আপন করে, প্রতিটা প্রবাসীর অবস্থান কাছের মানুষ দূরে সরে গেছে, দূরের মানুষ আপন হয়ে গেছে, আমরা প্রবাসীরা ও ঈদে নামাজ পড়ি,  অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, প্রবাসীদের মধ্যে ঈদ তিন ভাগে ভাগ হয়ে যায়, সবচেয়ে অবহেলিত হয়, সেই সব প্রবাসীরা যাদের থাকা খাওয়া সবকিছু বহন করে কোম্পানি, সব চেয়ে ভালো ঈদ করে যাদের পরিবার কাছে আছে তারা আর মোটামুটিভাবে ঈদ পালন করে, আমাদের মতো যারা নিজ খরচে থাকা খাওয়া খরচ বহন করে তারা, ঈদে সবকিছু হয় তারপরও বুকের ভিতর চাপা কষ্ট বাসা বাঁধে, নিকটতম আপনজন বলতে কেউ থাকে না পাশে, চোখের কোণে পানি জমে বরফ হয়ে গেছে, এখন আর কান্না করতে ইচ্ছে করে না।

আমি আমার নিজের কথা বলতে পারি, আমার ছোট্ট ছেলেটার ছয়  মাস বয়স তার এই ছোট্ট জীবন প্রথম ঈদ বাবাকে ছাড়া, আমার বড় ছেলে সাড়ে তিন বছর বয়স তার এই ছোট্ট জীবনে সাতটা ঈদ চলে গেলো বাবাকে ছাড়া, পাঁচ বছর বিয়ে করেছি, এখন পর্যন্ত আমার সাথে কোন ঈদ করেনি আমার বৌ, রমজানের আট বছর আর কোরবানির বার বছর বাড়িতে ঈদ করি না, আমার মতো লাখ লাখ প্রবাসী আছে তারা তাদের আপনজনের সাথে কত বছর ঈদ করতে পারে না, সবাই  নীরবে-নিভৃতে কাঁদে শুধু আপনজনের জন্য, আমাদের বুক ভরা কষ্ট আর চোখের পানি শুকিয়ে গেছে।

এত কষ্টের পরও প্রবাসীরা একটি কাজ করতে ভুলে না তা হলো রেমিট্যান্স পাঠানো, দেশের আপনজনদের ঈদ আনন্দ ঈদ উপভোগ, সবাই মিলে মিশে করতে পারে সেই জন্য টাকা পাঠাতে ভুলে না, এই জন্য আমি বলি, প্রবাসীরা রেমিট্যান্সযোদ্ধা, দেশের অহংকার দেশের গর্ব, তার প্রমাণ এই রমজানে এই যাবৎকালের সবচেয়ে বেশি রেমিটেন্স পাঠিয়েছে প্রবাসীরা, আর এই প্রবাসীদের সবচেয়ে বেশি অপমানিত হতে হয় সরকারের দায়িত্বশীল কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কাছে ঈদের দিনে একটি ভিডিও দেখলাম, ফেসবুক লাইফে প্রবাসীদের ব‍্যাগ থেকে চুরি করে নিয়ে গেছে অনেক কিছু প্রমাণসহ, এই সিন্ডিকেটে দুর্নীতিবাজ ঈদ আসলে ৩০/৩৫ হাজার টাকার টিকিট ৫০/৫৫ হাজার করে দেয়, আর বছর শেষে বিমান কোটি কোটি টাকা লোকসান হিসেবে হাজির করে, সোনার ডিম পাড়া হাঁস যত্ন সহকারে রাখতে হয়, দেশের চল্লিশ শতাংশ মানুষের চাহিদা পূরণ করে প্রবাসীরা তাদের সাথে যে পরিমাণ অসৌজন্যমূলক আচরণ বা তাদের জিনিস চুরি করে এক শ্রেণীর অসাধু দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারী, এদের বিচার কে করবে, কার কাছে  বিচার  দিবো এদের বিচার করবে কে,  প্রধানমন্ত্রীর কাছে দিবো বিচার?

যে দেশের প্রধানমন্ত্রীকে বহন করার জন্য ঢাকা এয়ারপোর্ট থেকে পাসপোর্ট ছাড়া ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট দিয়ে পাইলট, কাতার গিয়ে এয়ারপোর্টে গ্রেপ্তার হয়ে  দেশের সুনাম নষ্ট করে, এয়ারপোর্ট ও বিমানের দায়িত্বপ্রাপ্ত উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা-কর্মচারী কতটা ভয়ংকর দুর্নীতিবাজ হলে এমনটা করতে পারে, যেখানে প্রধানমন্ত্রী নিজের নিরাপত্তা নিশ্চিত নয় বিমান ও বিমানবন্দরের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কর্মচারীদের কাছে, আর আমাদের মতো সাধারণ প্রবাসীদের কি নিরাপত্তা আছে, দেশের জনগণের উপর ছেড়ে দিলাম?