যে প্রশ্নের মুখে বাংলাদেশ দল
নিউজিল্যান্ডের কাছে বেশ লড়াই করে হেরেছিল। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচটা বড়ই বিব্রতকর বাংলাদেশের জন্য। এবং এই ম্যাচে বাংলাদেশ দলকে গুরুত্বপূর্ণ কিছু প্রশ্নের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দিল। এমন সাধারণ বোলিং নিয়ে সেমিফাইনালে ওঠার আসলেই কী যোগ্যতা রাখে বাংলাদেশ?
বোলিং বহু দিন ধরেই দুর্ভাবনার অপর নাম হয়ে আছে। বিশ্বকাপের মতো বড় আসরে দরকার বেশি বেশি মনোবল, দৃঢ়তা। কিন্তু বিশ্বকাপ বলে হয়তো বাড়তি চাপ নিয়ে ফেলেছেন বোলাররা। ননসেন্স মার্কা বোলিং করে ইংল্যান্ড ৩৮৬ তোলার সুযোগ করে দেন বোলাররা। গত কয়েকবছর ধরেই বোলিংয়ের নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন অভিজ্ঞ মাশরাফি বিন মোর্তুজা। কিন্তু প্রতিটা ম্যাচেই তো তার কাছ থেকে সেরাটা আশা করা যায় না।
আগের দুই ম্যাচে দুই উইকেট করে পেলেও বিশ্বকাপের মতো বড় আসরে নবাগত পেসার সাইফুদ্দিনের একাদশে জায়গা পাওয়াটা নিয়ে অনেকের প্রশ্ন। ৯ ওভারে ৭৮ রান দিয়ে এদিন সবচেয়ে ব্যয়বহুল বোলার ছিলেন সাইফুদ্দিন। ২০ ওভার ম্যাচের রান দিয়েছেন এ তরুণ পেসার।
চমক দিয়ে ক্যারিয়ার শুরু করলেও সেটা আর ধরে রাখতে পারেননি কাটার বয় মুস্তাফিজ। একেবারেই সাদামাটা বোলিং করেছেন। ৯ ওভারে দিয়েছেন ৭৫ রান। মাশরাফি ১০ ওভারে ৬৮, মিরাজ ১০ ওভারে ৬৭। দুই ওভারে ২৪ দেন মোসাদ্দেক। আর ১০ ওভারে ৭১ দেন দলের প্রধান স্পিনার সাকিব।
৩৮৭ রান সামনে। কত তাড়াতাড়ি ম্যাচ শেষ হয় এবং কত বড় ব্যবধানে বাংলাদেশ হারে সেটাই ছিল সাধারণ হিসেব। এই কার্ডিফে বাংলাদেশের সুখস্মৃতি আছে, কিন্তু সেই সৃখস্মৃতি যে কাজে আসবে না, সেটা তো পরিস্কারই ছিল।
হলোও তাই। ১০৬ রানের হার। সাকিব প্রায় একাই লড়লেন বাহাদুরের মতো।এটা তার চতুর্থ বিশ্বকাপ। এবং বিশ্বকাপের প্রথম সেঞ্চুরিটা পেলেন স্বাগতিক ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। লজ্জার ম্যাচে বাংলাদেশের অর্জন ছিল কেবল সাকিবের সেঞ্চুরিটাই।
সাব্বিরকে বাদ দিয়ে মোহাম্মদকে মিথুনকে কেন টানা খেলানো হচ্ছে- প্রশ্ন উঠেছে জোরেসোরে। বিশ্বকাপের আগে দুটি প্রস্তুতি ম্যাচে করেছিলেন ১৭ ও ৭। এরপরেও টানা তিন ম্যাচে তাকে খেলানো হয়েছে জোর করে। তিন ম্যাচে করেছেন যথাক্রমে ২১,২৬ ও ০। পরের ম্যাচেও কি একাদশে থাকবেন মিথুন?
অধিনায়ক বা টিম ম্যানেজমেন্টের আরেকটি বাজে সিদ্ধান্ত হলো টস জিতে পরে ব্যাটিং। এটা দেশের মাটি নয় যে, আত্মবিশ্বাসে টগবগ করছে দল। বিশ্বকাপের মতো বড় আসর, বড় দল এবং স্বাতিকদের বিপক্ষে ম্যাচ। এমন ম্যাচে বাড়তি চাপ থাকে। সেই চাপ নিয়ে লক্ষ্য নিয়ে ব্যাট করার মতো অত বড় দল এখনও হয়ে ওঠেনি বাংলাদেশ। সহজ যুক্তটা ভুলে গেল টিম ম্যানেজমেন্ট।
বাংলাদেশর উচিৎ ছিল প্রথমে ব্যাট করে ভালো একটা স্কোর দাঁড় করিয়ে স্বাগতিকদের সামনে একটা লক্ষ্য ছুড়ে মারা। তাহলে চাপে থাকতে পারত ইংল্যান্ড। অধিনায়ক বা টিম ম্যানেজমেন্ট সম্ভবত খুব বেশি আত্মবিশ্বাসী হয়ে ওঠেছিল।
টানা দুই হারে বেশ চাপে পড়ে গেল বাংলাদেশ। শেষ চারে খেলার স্বপ্ন শেষ হয়ে যায়নি ঠিকই, কিন্তু বাংলাদেশকে ঘুরে দাঁড়াতে হবে, যেটা সহজ নয় মোটেও।
(ঢাকাটাইমস/৮জুন/ডিএইচ)