ঈদ শেষেই অটোর দখলে রাজশাহী

প্রকাশ | ১২ জুন ২০১৯, ০৮:৫০

ব্যুরো প্রধান, রাজশাহী

ঈদের রেশ কাটতে না কাটতেই রাজশাহী মহানগরীর রাস্তাঘাট দখল করে নিয়েছে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা। ফলে আবার অটোজট দেখা দিয়েছে বিভাগীয় এই শহরে। তবে অটোজট কমাতে আগামী ১ জুলাই থেকে শহরে অটোরিকশা চলাচলে নিয়ন্ত্রণে আনতে যাচ্ছে রাজশাহী সিটি করপোরেশন।

এ নিয়ে একটি নীতিমালাও করেছে নগর সংস্থা। নীতিমালা অনুযায়ী, আগামী ১ জুলাই থেকে নগরীতে দুই শিফটে চলাচল করবে অটোরিকশা। আর অটোরিকশার রঙ হবে লাল ও সবুজ। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত যেকোনো এক ধরনের রঙের অটোরিকশা চলবে। আর দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত চলবে আরেক রঙের অটোরিকশা। এতে যানজট কমবে বলে আশা করছে সিটি করপোরেশন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ১৪ হাজার ২৬২টি অটোরিকশার নিবন্ধন দিয়েছে রাজশাহী সিটি করপোরেশন। কিন্তু বাস্তবে এর কয়েকগুণ অটোরিকশা চলাচল করছে ছোট্ট এই শহরে। ফলে পুরো নগরীতেই থাকছে অটোরিকশার দাপট। বিশেষ করে নগরীর সাহেববাজার, জিরোপয়েন্ট, রেলগেট ও বাস টার্মিনালের সামনে অটোজট লেগেই থাকে সব সময়। এই জট খুলতে হিমশিম খেতে হচ্ছে ট্রাফিক পুলিশকে। আর দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে সাধারণ পথচারীসহ স্কুল-কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়গামী শিক্ষার্থীদের।

ঈদের পর দুই-তিন দিন পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক থাকলেও এখন আবার শুরু হয়েছে অটোজট। এই মুহূর্তে নগরীর প্রাণকেন্দ্র সাহেববাজার এলাকায় পথচারীদের রাস্তা পারাপার কঠিন হয়ে পড়েছে। সাহেববাজার থেকে নগরীর কাজলা পর্যন্ত প্রায় চার কিলোমিটার রাস্তায় তো অটোজট নিত্যসঙ্গী।

সাহেববাজার জিরোপয়েন্ট এলাকায় পথচারী আব্দুস সালাম বলেন, শহরের অধিকাংশ অটোরিকশাই খালি অথবা দু-চারজন যাত্রী নিয়ে চলছে। প্রয়োজনের অতিরিক্ত অটোরিকশা রাস্তায় চলাচল করছে বলেই এতো যানজট। দুই শিফটে অটোরিকশা চলাচল করলে যানজট কমবে বলে মনে করেন তিনি।

এ বিষয়ে সিটি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, বিগত মেয়াদে আমি অটোরিকশা ও চার্জার রিকশা চলাচলের অনুমতি দিয়েছিলাম। কিন্তু বিগত কয়েক বছরে অটোরিকশা ও চার্জার রিকশার সংখ্যা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়ে দুর্ভোগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ অবস্থায় যানজট নিরসনে অটোরিকশা ও চার্জার রিকশা চলাচলে শৃঙ্খলা আনার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। ইতিমধ্যে আমরা এ ব্যাপারে একটা নীতিমালা করেছি।

নীতিমালা অনুযায়ী আগামী ১ তারিখ থেকে দুই রঙে চলাচল করবে অটোরিকশা। এর মধ্যে নির্ধারিত একটা সময় শুধু এক রঙের অটোরিকশাই চলবে।

নীতিমালায় অনুযায়ী, অটোরিকশা ও চার্জার রিকশার অনলাইন নিবন্ধনও শুরু হবে ১ জুলাই। ৩০ জুনের পর মহানগরীতে সরু চাকার কোনো রিকশা চলাচল করতে পারবে না। আর যে সকল অটোরিকশা ও চার্জার রিকশার মালিক সিটি করপোরেশন এলাকার নাগরিক নয়, তাদের নিবন্ধন বাতিল হবে। ফলে শহরে বাইরে থেকেও অটোরিকশা আসতে পারবে না। ফলে যানজট কমবে।

এদিকে নিবন্ধন কার্ডের নম্বর অনুযায়ী, বিজোড় সংখ্যার অটোরিকশা লাল ও জোড় সংখ্যা সবুজ রঙ করতে হবে মালিকদের। মাসের প্রথম সপ্তাহে ভোর ৬টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত লাল এবং দুপুর ২টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত সবুজ রঙের অটোরিকশা ও চার্জার রিকশা চলাচল করবে। পরের সপ্তাহে ভোর থেকে সবুজ এবং দুপুর থেকে লাল রঙের অটোরিকশা-রিকশা চলাচল করবে।

এছাড়া অটোরিকশার মালিক, চালক এবং অটোরিকশা ও চার্জার রিকশার পৃথক পৃথক নিবন্ধন থাকবে। রিকশা চালকদের সিটি করপোরেশন থেকে পরিচয়পত্র প্রদান করা হবে। চালকদের নির্দিষ্ট পোশাকও পরিধান করতে হবে। এই নীতিমালার বাস্তবায়ন করে দৃষ্টান্ত স্থাপন হবে বলেই মনে করছে নগর সংস্থা।

ঢাকাটাইমস/১২জুন/আরআর/এমআর