অবৈধ অভিবাসন বন্ধ করতে প্রেসিডেন্টের উড়োজাহাজ বিক্রি
মেক্সিকোর প্রেসিডেন্টের ব্যবহারের জন্য বছর তিনেক আগে কেনা উড়োজাহাজ বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। দেশটির প্রধান সমস্যা অবৈধ অভিবাসন, আর সেই কাজে ব্যবহার করা হবে এই অর্থ।
নির্বাচনী প্রচারণা চালানোর সময়ই বামপন্থী লোপেজ প্রেসিডেন্সিয়াল জেট বিক্রি করে দরিদ্র মানুষের কাজে ব্যয় করা হবে এমন প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। ২০১৬ সালে কেনা বোয়িং ৭৮৭ ড্রিমলাইনারটির আনুমানিক মূল্য ১৫ কোটি মার্কিন ডলার। প্রায় ২২ কোটি মার্কিন ডলার দিয়ে বিমানটি কেনা হয়েছিল।
মেক্সিকোতে অ্যামলো নামে পরিচিত প্রেসিডেন্ট প্রচারণার সময় সমর্থকদের বলেছিলেন প্রয়োজনে তিনি বরং বাণিজ্যিক বিমানে চড়বেন। নিজের প্রতিশ্রুতি রাখতে এবার তা বাস্তবে রূপ দিতে চলেছেন অ্যামলো।
প্রেসিডেন্টের জেটটি এখন ক্যালিফোর্নিয়ার এক ওয়্যারহাউজে রয়েছে। তবে মেক্সিকো এই একটি বিমানই বিক্রি করছে না। সরকারি মালিকানাধীন ৬০টি বিমান এবং ৭০টি হেলিকপ্টারও বিক্রি করছে।
মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট আন্দ্রেস ম্যানুয়েল লোপেজ ওব্রাডর এই সিদ্ধান্ত নিলেন এমন এক সময়ে, যখন মাত্র কয়েকদিন আগেই যুক্তরাষ্ট্র সীমান্তে শরণার্থী স্রোত ঠেকানোর জন্য নতুন এক চুক্তি করেছে দেশটি।
ওই চুক্তির মাধ্যমে মেক্সিকো অবৈধ অভিবাসন বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেবে, আর বিনিময়ে মেক্সিকো যুক্তরাষ্ট্রে যেসব পণ্য রপ্তানি করবে, তার ওপর উচ্চ শুল্ক হার বসাবে না ট্রাম্প প্রশাসন।
চুক্তির একটি ধারা অনুযায়ী মেক্সিকো দেশটির দক্ষিনে গুয়াতেমালা সীমান্তে ন্যাশনাল গার্ড বসাবে। বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে লোপেজকে এ চুক্তির বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হয়, জবাবে তিনি বলেন চুক্তি মানতে যে বিপুল খরচ হবে, তা যোগান দিতে এ অর্থ প্রয়োজন হবে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পরিকল্পনা ছিল মেক্সিকোর পণ্য আমদানির ওপর পাঁচ শতাংশ হারে শুল্ক বসাবেন তিনি। মেক্সিকো যুক্তরাষ্ট্রের তৃতীয় বৃহত্তম বাণিজ্য অংশীদার।
কিন্তু গত সপ্তাহে স্বাক্ষর হওয়া ওই চুক্তির মাধ্যমে মেক্সিকো সেই শুল্ক এড়িয়েছে। চুক্তি অনুযায়ী মেক্সিকো ছয় হাজার ন্যাশনাল গার্ড পাঠাচ্ছে সীমান্তে। এছাড়া চুক্তির আরেকটি শর্ত হচ্ছে, মেক্সিকো থেকে যারা যুক্তরাষ্ট্রে আশ্রয় প্রার্থনা করেছে, তাদের মেক্সিকোয় ফিরিয়ে আনতে হবে।
প্রেসিডেন্টের প্লেন বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়ে দেশটির সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা চলছে। কেউ কেউ এর নিন্দা করছেন, তাদের বক্তব্য হচ্ছে, দেশটির করদাতাদের পয়সায় কেনা বিমান বিক্রি করে এখন অ-মেক্সিকান লোক ঠেকানোর কাজে ব্যবহার করা হবে।
আবার কেউ কেউ বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যে চুক্তির মেয়াদ ৪৫দিন মাত্র, সে সময়ের মধ্যে এই বিমান বিক্রি সম্ভব হবে না। কারণ গত ছয় মাসেও এজন্য কোন বিক্রেতা পাওয়া যায়নি।
ঢাকা টাইমস/১৩জুন/একে