ডিআইজি মিজানকে ‘ছাড়ের’ আরেক গল্প

আশিক আহমেদ, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ১৪ জুন ২০১৯, ১২:০৭

বেসরকারি টেলিভিশনের সংবাদ উপস্থাপিকাকে প্রাণনাশের হুমকির অভিযোগে ডিআইজি মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে সাধারণ ডায়েরির কোনো তদন্তই হয়নি। ওই নারীকে নিয়ে ফেসবুক পেজে অশালীন প্রচারের বিষয়ে পুলিশের সাইবার ক্রাইম ইউনিটে জমা দেওয়া অভিযোগেরও অগ্রগতি নেই।

প্রশ্ন উঠেছে, ডিআইজি কেন বারবার ছাড় পাচ্ছেন। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ বিস্তর। এক নারীকে পিস্তল দেখিয়ে তুলে নিয়ে বিয়ে করার ঘটনায় পুলিশ তদন্ত করে সত্যতা পেলেও কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। পুলিশ সদরদপ্তরের প্রতিবেদন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে জমা পড়লেও মন্ত্রণালয় এক বছরেও বেশি সময় ধরে নিরব।

এর মধ্যে গত বছরের মাঝামাঝি সময়ে ওই সংবাদ উপস্থাপিকাকে মোবাইল ফোনে কল করে তাকে এবং তার স্বামীকে মেরে ফেলা, ৬৪ টুকরা করা, তার ন্যুড ছবি ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেন। এই কথোপকথনের অডিও রেকর্ড সামাজিক মাধ্যমে ফাঁস হয়। ওই নারীকে আত্মহত্যা করার শর্তও জুড়ে দেন ডিআইজি মিজান।

ওই সংবাদ পাঠিকা তখন রাজধানীর বিমানবন্দর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। তাতে তিনি অভিযোগ করেন, মিজানুর রহমান মুঠোফোনে তাঁকে ও তাঁর পরিবারের সবাইকে মেরে ফেলার হুমকি দিয়েছেন।

ওই জিডির তদন্তের অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চাইলে বিমানবন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নুরে আযম মিয়া ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘জিডি ওভাবেই রয়েছে।’

কীভাবে রয়েছে কী তদন্ত করেছেন? আদালতে কী প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন- এমন প্রশ্নে ওসি বলেন, ‘ভাই আমি এখন ব্যস্ত আছি খোঁজ নিয়ে বলতে হবে। পরে ফোন দিয়েন।’

ঘণ্টাখানেক পর ফোন করা হলে ওসি বলেন, ‘ভাই, আমি অন্য কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েছি।’

এরপর ওই নারী ২০১৮ সালের ১০ এপ্রিল তাঁর নামে খোলা একটি ফেসবুক পেজের কথা জানতে পারেন। তিনি দেখতে পান, ওই পেজে তাঁর ছবির সঙ্গে অশ্লীল ছবি জুড়ে দেওয়া হয়েছে। এরপর পুলিশের সাইবার সিকিউরিটি অ্যান্ড ক্রাইম বিভাগে তিনি অভিযোগ জানিয়ে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদন করেন।

ডিআইজি মিজানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগেরও তদন্ত করছে দুদক। আর এই তদন্ত নিজের পক্ষে নিতে দুদক কর্মকর্তাকে ৪০ লাখ টাকা ঘুষ দেওয়ার কথা প্রকাশ্যেই বলে বেড়াচ্ছেন মিজান। তারপরেও তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। প্রশ্ন উঠেছে, বারবার তাকে কেন এভাবে ছাড় দেওয়া হচ্ছে।

ডিআইজি মিজানের বিরুদ্ধে করা অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে পুলিশের সাইবার ক্রাইম বিভাগের উপ কমিশনার আলিমুজ্জামান ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘খোঁজ না নিয়ে বলতে পারব না। কার কাছে রয়েছে এই তদন্ত আর কী অবস্থায় রয়েছে।’

২০১৭ সালের ডিসেম্বরে এক নারীকে তুলে নিয়ে বিয়ে করার অভিযোগ উঠার পর ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনারের পদ থেকে প্রত্যাহার করে নেয়া হয় মিজানকে। সংযুক্ত রয়েছেন পুলিশ সদরদপ্তরে।

(ঢাকাটাইমস/১৪জুন/এএ/ডব্লিউবি)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বিশেষ প্রতিবেদন বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :