ময়মনসিংহে স্বামী হত্যার অভিযোগে দ্বিতীয় স্ত্রী গ্রেপ্তার

ময়মনসিংহে শহরের আকুয়ায় শফিকুল ইসলাম সবু হত্যার অভিযোগে দ্বিতীয় স্ত্রী ইতিকে গ্রেপ্তার করেছে ডিবি পুলিশ। শুক্রবার ডিবির ওসি শাহ কামাল আকন্দ সাংবাদিকদের বিষয়টি জানান।

গ্রেপ্তার দ্বিতীয় স্ত্রী ইতি পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদসহ আদালতে হত্যার বিবরণসহ দায় স্বীকার করেছেন। এ সময় তিনি পুলিশকে জানান, তার স্বামী শফিকুল ইসলাম সবু প্রথম স্ত্রীর সাথে যোগাযোগ রাখায় তিনি পরিকল্পিতভাবে এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন।

ডিবির ওসি বলেন, ‘শহরের বাঁশবাড়ি কলোনির সুরুজ মিয়ার ছেলে শফিকুল ইসলাম সবু দুই বিয়ে করেন। প্রথম স্ত্রী মাহমুদার ঘরে তার একটি পুত্র আছে। প্রথম স্ত্রীকে রেখে আকুয়া হাবুন বেপারীর মোড় সংলগ্ন আকুয়া মোড়লপাড়া তাজন হজন রোডস্থ আফরোজা শেখ ইতির সাথে তার পূর্বের স্বামী সন্তান থাকাবস্থায় পরকীয়ায় লিপ্ত হয় এবং এক পর্যায়ে তার স্বামীর ঘর থেকে নিয়ে এসে বিয়ে করে। বিয়ের আগে শর্ত ছিল আগের স্ত্রী মাহমুদাকে তালাক দিবে। এরপর থেকে দ্বিতীয় স্ত্রী ইতিকে নিয়ে শফিকুল ইসলাম সবু আজাদের বাড়িতেই বসবাস করতে থাকে। এদিকে শফিকুল ইসলাম সবু তার প্রথম স্ত্রী মাহমুদাকে তালাক না দিয়ে চুপিসারে প্রথম স্ত্রীর সাথে যোগাযোগ রাখে। দ্বিতীয় স্ত্রী আফরোজা শেখ ইতি এ নিয়ে সবুকে প্রায়ই বকাঝকা করে আসছিল। এদিকে আজাদ হত্যার পর শফিকুল ইসলাম সবু তার দ্বিতীয় স্ত্রী ইতির সাথে যোগাযোগ কমিয়ে প্রথম স্ত্রী মাহমুদার সাথে যোগাযোগ বাড়িয়ে দেয়। এ নিয়ে শফিকুল ইসলাম সবুর সাথে ইতির ক্ষেভের সৃষ্টি হয়। ইতি তার আগের স্বামী সন্তান ফেলে সবুকে বিয়ে করলেও কথা ছিল প্রথম স্ত্রীকে তালাক দেবে। কিন্তু প্রথম স্ত্রী মাহমুদাকে তালাক না দেয়ায় ইতি মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে এবং সিদ্ধান্ত নেয় কোন একটা কিছু একটা করবে।

এ সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে নানা কৌশলে ইতি তার স্বামীকে হত্যার পরিকল্পনা করতে থাকে। এদিকে গত ১০ জুন তার স্বামী শফিকুল ইসলাম সবু অতি গোপনে দুপুরে তার প্রথম স্ত্রী মাহমুদার কাছে যায়। অপরদিকে দ্বিতীয় স্ত্রী ইতি চুপিসারে তার সতীন প্রথম স্ত্রী বাড়িতে গিয়ে নিজের স্বামী শফিকুল ইসলাম সবুকে দেখতে পায়। এ নিয়ে ইতির চরম ক্ষোভ দেখা দেয়ায় সে সিদ্ধান্ত নেয় আজ রাতে যে কোনো একটি ঘটনা ঘটাবে। পরে শফিকুল ইসলাম সবু প্রথম স্ত্রী মাহমুদার কাছ থেকে আবারো প্রায় আড়াইটার দিকে দ্বিতীয় স্ত্রী ইতির বাড়িতে আসে। বিকালে পাশের মোরে খেলা দেখে রাত প্রায় ১২টার দিকে শফিকুল ইসলাম সবু তার দ্বিতীয় স্ত্রী ইতির বাসায় এসে ওষুধ খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ে। এদিকে পূর্ব পরিকল্পনা মতে, দ্বিতীয় স্ত্রী ইতি নিজের ওড়না দিয়ে স্বামীর গলা পেঁচিয়ে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করে। হত্যার পর ভোরে বিছানার চাদর দিয়ে তার স্বামীর লাশ পেচিয়ে টেনে হেছড়ে নিয়ে পাশের পুকুরে কচুরি নিচে লুকিয়ে রাখে। এ সময় ইতি তার নিজের (হত্যায় ব্যবহার করা) ওড়না পুকুরে ফেলে দেয়।’

ডিবির ওসি শাহ কামাল আকন্দ জানান, এ হত্যার রহস্য উদঘাটনে তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারসহ নানা কৌশল অবলম্বন করা হয়।

(ঢাকাটাইমস/১৪জুন/এলএ)