ঈদযাত্রায় সড়ক দুর্ঘটনা কমেছে ২০ শতাংশ

প্রকাশ | ১৫ জুন ২০১৯, ১৪:০০ | আপডেট: ১৫ জুন ২০১৯, ১৪:০১

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

বিগত বছরের তুলনায় এবার ঈদুল ফিতরের যাত্রায় সড়ক দুর্ঘটনা ১৯.৩৯ শতাংশ কমেছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি। এ ছাড়া নিহতের হার ২৪.১৭ ও আহত ৪৮.৯৯ শতাংশ কমেছে।

শনিবার সকালে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে ঈদযাত্রায় সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিবেদন-২০১৯ প্রকাশ করে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি। সংবাদ সম্মেলনে সড়ক দুর্ঘটনার চিত্র তুলে ধরেন সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, এবার মোট ২৩২টি সড়ক দুর্ঘটনার ৭৬টি ঘটেছে মোটরসাইকেলের সঙ্গে অন্যান্য যানবাহনের সংঘর্ষে, যা মোট দুর্ঘটনার ৩৩ শতাংশ। যেখানে মোট নিহত ৩০ শতাংশ এবং মোট আহত ১০ শতাংশ। অন্য বছরের তুলনায় এবারের ঈদুল ফিতরে সড়কে যাত্রা ১০ শতাংশ উন্নতি হয়েছে। যাত্রীদের জনসচেতনতা ও সরকারের তদারকির কারণে এটি সম্ভব হয়েছে। 

সড়ক, রেল ও নৌ-পথে সম্মিলিতভাবে ২৫৬টি দুর্ঘটনায় ২৯৮ জন নিহত ও ৮৬০ জন আহত হয়েছেন বলে সংবাদ সম্মেলনে জানায় বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি।

লিখিত বক্তব্যে মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, ‘বিগত ঈদের চেয়ে এবার রাস্তাঘাটের পরিস্থিতি তুলনামূলক ভালো। নৌ-পথে বেশ কয়েকটি নতুন লঞ্চ যুক্ত হয়েছে। রেলপথেও বেশ কয়েক জোড়া নতুন রেল ও বগি সংযুক্ত হয়েছে। এবারের ঈদের লম্বা ছুটি থাকায় জনসাধারণ আগেভাগে বাড়ি পাঠানোর সুযোগ কাজে লাগানোয় ঈদযাত্রা খানিকটা স্বস্তিদায়ক হয়েছে। রাস্তাঘাটের পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতিসহ সার্বিক পরিকল্পনা এবং বিগত ২০১৬ সাল থেকে ঈদযাত্রায় যাত্রী কল্যাণ সমিতির ধারাবাহিক সড়ক দুর্ঘটনার প্রতিবেদনসমূহ গণমাধ্যম ও সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ গুরুত্ব দেয়ায় এবারের ঈদে বিগত বছরের তুলনায় সড়ক দুর্ঘটনা ১৯.৩৯ শতাংশ, নিহত ২৪.১৭ শতাংশ ও আহত ৪৮.৯৯ শতাংশ কমেছে।’

তিনি বলেন, ‘মোটরসাইকেলের সঙ্গে অন্যান্য যানবাহনের সংঘর্ষ ছাড়াও পথচারীকে গাড়ি চাপা দেয়ার ঘটনা প্রায় ৪৫ শতাংশ ঘটেছে। আগামী ঈদে এ দুটি ঘটনা এড়ানো সম্ভব হলে দুর্ঘটনা প্রায় ৮০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে।’

মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, এবার ২৭ দশমিক ৪৩ শতাংশ বাস, ২৩ দশমিক ৮৯ শতাংশ মোটরসাইকেল, ২৩ দশমিক ৫৯ শতাংশ ট্রাক, পিকআপ, কাভার্ড ভ্যান ও লরি, ৮ দশমিক ২৫ শতাংশ কার ও মাইক্রো, ৭ দশমিক ৬৬ শতাংশ সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ৪ দশমিক ৪২ শতাংশ নছিমন-করিমন ও ৪ দশমিক ৭১ শতাংশ রিকশা-ব্যাটারিচালিত ইজিবাইকে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে।

সড়ক নিরাপত্তার জন্য আলাদাভাবে বাজেটে ১০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দের দাবি জানিয়ে মোজাম্মেল হক বলেন, নিরাপদ সড়ক করতে চালকদের প্রশিক্ষণ দিয়ে দক্ষ চালক হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। ঈদযাত্রায় মোটরসাইকেল নিষিদ্ধ, ফিটনেসবিহীন যানবাহন চলাচল বন্ধ করা, ঈদের তিন দিন আগে ও তিন দিন পরে ছুটি নিশ্চিত করা, জাতীয় সড়ক নিরাপত্তা কাউন্সিলকে সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধের কার্যকর প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলার সুপারিশ করছি। 

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জ্যোতিময় বড়ুয়া ও বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির যুগ্ম মহাসচিব মনিরুল হক সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।

ঢাকাটাইমস/১৫জুন/এমআর