জনবান্ধব বললেও বাজেট বাস্তবায়নে চ্যালেঞ্জ দেখছে জাপা

প্রকাশ | ১৫ জুন ২০১৯, ১৭:৩৮

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

প্রস্তাবিত বাজেট জনবান্ধব এমনটা মনে হলেও এটা বাস্তবায়নে চ্যালেঞ্জ দেখছে সংসদের প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টি (জাপা)। শনিবার সংবাদ সম্মেলনে দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের বলেছেন, ‘প্রস্তাবিত বাজেট এ যাবতকালের সর্ববৃহৎ। আকৃতি বেশ বড়। বড় অংকের অর্থ রাজস্ব খাতে আয় করতে হবে। আবার নির্ধারিত খাতে বড় ধরনের ব্যয়ও করতে হবে। দুটিই বড় চ্যালেঞ্জ সরকারের জন্য।’ 

বাজেট নিয়ে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরলেও কিছু কিছু ক্ষেত্রে নতুন করে কর বসানোর প্রস্তাবের বিরোধিতা করেন জাপার ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। বলেন, ‘বাজেটে সামাজিক নিরাপত্তা, স্বাস্থ্য সেবায় বরাদ্দ বৃদ্ধি, কৃষিতে প্রণোদনা এবং ভর্তুকি আরও বাড়াতে সরকারের প্রতি আহ্বান  জানাচ্ছি। সংশোধনীতে হতদরিদ্র, তরুণ ও বেকারদের কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে বরাদ্দ যেন কাটছাট না হয়।’

বিদেশি ঋণ নেয়ার সময় কঠিন শর্ত দেওয়া হয় দাবি করে সাবেক এই বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এ ধরনের ঋণের বোঝা বেশি ভারী হয়। ভবিষ্যতে এ ধরনের ঋণ দেশের অর্থনীতিতে দীর্ঘমেয়াদী নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। তাই সরকারকে সর্তক হতে হবে।’

জিএম কাদের বলেন, ‘বাজেটে আয়কর থেকে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করা হয়েছে, যে পদ্ধতির মাধ্যমে করা হবে বলা হয়েছে তা বর্তমান আয়কর বিভাগের অপর্যাপ্ত অবকাঠামো ও লোকবলের কারণে প্রায় অসম্ভব।’

তিনি বলেন, ‘বর্তমানে বাংলাদেশে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোতে তারল্য সংকট চলছে বলে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম সূত্রে জানা যায়। কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে, সরকারের অধিক হারে ঋণ গ্রহণ। ফলে, বেসরকারি খাতে নতুন উদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ী দরকার মতো যথেষ্ট ঋণ পাচ্ছেন না। বিনিয়োগ ও ব্যবসা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে সমস্যা হচ্ছে।’ এবার ঘাটতি মেটাতে সরকার যখন আবার ব্যাংক ঋণের সাহায্য নেবে তা বিরাজমান সংকটকে আরও ঘনীভূত করতে পারে বলে মনে করেন সাবেক এই মন্ত্রী।

বিদেশি ঋণের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘বিদেশি ঋণ, প্রায় সময়ই কঠিন শর্তসহ দেয়া হয়। ফলে, এ ধরনের ঋণের বোঝা বেশি ভারী হয়। ভবিষ্যতে এ ধরনের ঋণ দেশের অর্থনীতিতে দীর্ঘমেয়াদী নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। সরকারকে সর্তক হতে হবে।’

জিএম কাদের বলেন, ‘বাজেটে কৃষি যন্ত্রপাতি, ক্যানসারের ঔষধ, রুটি-বি¯ু‹ট যেসব পণ্যের কমানোর প্রস্তাব করেছে তাকে আমরা স্বাগত জানাই। অন্যদিকে নতুন কর আরোপ করে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য-চিনি, ভোজ্যতেল, গুঁড়ো দুধ, তৈজষপত্রের দাম না বাড়ানোর প্রস্তাব করছি। আমরা মনে করি- কৃষক এদেশের প্রাণ। তাদেরকে বাঁচানোর জন্য ধান কেনার প্রণোদনা এ বাজেটে থাকা দরকার।’

জাপা নেতা বলেন, ‘মোবাইল ফোন এখন আর কোনো বিলাসিতার পণ্য নয়। এটা এখন যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। তাই মোবাইল ফোনে কথা বলার ওপর আরোপিত শুল্ক প্রত্যাহার করা বাঞ্ছনীয়।’ আইসিটি সেক্টরে ব্যবহৃত আইটেমসমূহের কর বৃদ্ধির পুনর্বিবেচনার দাবি জানাচ্ছি।

নতুন উদ্যোক্তাদের জন্য ১০০ কোটি বরাদ্দের প্রস্তাবের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘যুবকদের মধ্যে সবধরনের ব্যবসা, উদ্যোগ সৃষ্টির জন্য ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হচ্ছে। তবে আমরা অর্থনৈতিক অঞ্চলসমূহের দ্রুত বাস্তবায়ন আশা করি। আমরা ১০০ কোটি টাকার বরাদ্দ আরও বৃদ্ধি করে কমপক্ষে এ খাতে এক হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করার ও ব্যবহারের সুনির্দিষ্ট নীতিমালা প্রদানের আহ্বান করছি।’

(ঢাকাটাইমস/১৫জুন/বিইউ/জেবি)