ভ্রমণে বাংলাদেশকে এখনো অনিরাপদ মনে করছে যুক্তরাজ্য

প্রকাশ | ১৫ জুন ২০১৯, ১৯:২২ | আপডেট: ১৫ জুন ২০১৯, ১৯:৩১

ঢাকা টাইমস ডেস্ক

বাংলাদেশ ভ্রমণে যুক্তরাজ্য সে দেশের নাগরিকদের প্রতি গত এপ্রিলে যে সতর্কতা জারি করেছিল পর্যালোচনা শেষে তা অব্যাহত দেশটি। গত শুক্রবার সে দেশের ফরেন অ্যান্ড কমনওয়েলথ অফিসের ওয়েবসাইটে এ তথ্য জানানো হয়েছে। 

এতে সুনির্দিষ্ট কোনও ঝুঁকির কথা বলা না হলেও ভবিষ্যতে বাংলাদেশে বিদেশি নাগরিকদের ওপর হামলা হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে। পর্যালোচনায় বলা হয়েছে, বাংলাদেশ সফলভাবে বেশ কয়েকটি হামলার পরিকল্পনা নস্যাৎ করতে সমর্থ হলেও এখনো সতর্ক অবস্থায় রয়েছে।

২৯ এপ্রিল ঢাকার গুলিস্থান এলাকায় এক বিস্ফোরণে ট্রাফিক পুলিশের দুই কনস্টেবল ও এক কমিউনিটি পুলিশ সদস্য আহত হয়। হামলার দায় স্বীকার করে বিবৃতি দেয় আইএস। ওইদিনই যুক্তরাজ্যের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ ভ্রমণে ব্রিটিশ নাগরিকদের প্রতি সতর্কতা জারি করা হয়।

সে সময় দেওয়া যুক্তরাজ্য সরকারের বিবৃতিতে বলা হয়, সম্প্রতি বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবর থেকে বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের (আইএস) হামলায় স্বার্থ সংশ্লিষ্টতার ইঙ্গিত মিলেছে। যুক্তরাজ্য নির্দিষ্ট করে কোনো হুমকির ব্যাপারে অবগত নয়। তবে বিশেষত জনাকীর্ণ স্থানে যাওয়া নিয়ে সতর্ক থাকতে অনুরোধ করা হচ্ছে।

বিবৃতিতে পার্বত্য চট্টগ্রামে আবশ্যকীয় ভ্রমণ ছাড়া বাংলাদেশের অন্য সবখানে ভ্রমণের বিষয়ে ব্রিটিশ পররাষ্ট্র ও কমনওয়েলথ অফিস (এফসিও) থেকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়। এপ্রিলে জারি করা সেই সতর্কতা পর্যালোচনা করে ১৪ জুন ফরেন অ্যান্ড কমনওয়েলথ অফিসের ওয়েবসাইটে মালিবাগে ২৬ মে পুলিশি অবস্থানকে লক্ষ্য করে হামলার তথ্য যুক্ত করা হয়। ভবিষ্যতে ধর্মীয় জমায়েত এবং রাজনৈতিক সমাবেশের মতো জনসমাগমস্থলে হামলার ঝুঁকি রয়েছে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয় এতে।

যুক্তরাজ্য বলছে, বিদেশি নাগরিকদের উপস্থিতির সম্ভাব্যতা রয়েছে, এমন স্থানগুলো হামলার উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে। এইসব স্থানে নিজেদের উপস্থিতি জানান দেওয়ার বিষয়ে ব্রিটিশ নাগরিকদের সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া চলাফেরার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকা এবং স্থানীয় কর্তৃপক্ষের সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা মেনে চলারও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশে দাপ্তরিক কাজ, বিনিয়োগ, পর্যটনের ক্ষেত্রে এক মাসের অন অ্যারাইভাল ভিসা সুবিধা পেয়ে থাকে ব্রিটিশ নাগরিকেরা। তবে সরকারের ভ্রমণ সতর্কতায় নাগরিকদের এই সুবিধা না নিয়ে ভ্রমণের আগেই ভিসা সংগ্রহের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

যুক্তরাজ্যের জারিকৃত সতর্কতায় সম্ভাব্য বিশৃঙ্খলাসহ রাজনৈতিক সমাবেশ বা প্রতিদ্বন্দ্বী দুই গ্রুপ বা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটতে পারে বলে সতর্ক করা হয়েছে। ধর্মীয় জমায়েত, উৎসব ও রাজনৈতিক সমাবেশের মতো বড় ধরনের জমায়েত এড়িয়ে চলতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে এতে।

একইসঙ্গে রোহিঙ্গা অধ্যুষিত এলাকার নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে শঙ্কার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে টেকনাফ ও উখিয়া ভ্রমণের ক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। ভূমিকম্পপ্রবণ অঞ্চল ও জিকা ভাইরাসের সংক্রমণের আশঙ্কা রয়েছে; এমন স্থানগুলোতে ভ্রমণের ক্ষেত্রেও সতর্ক থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।