চট্টগ্রামে বিশেষায়িত চিকিৎসাকেন্দ্র ‘ইম্পেরিয়াল হাসপাতাল’

চট্টগ্রাম ব্যুরো, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ১৫ জুন ২০১৯, ২২:০৬

বাংলাদেশে এই প্রথম আন্তর্জাতিক মানের পরিকল্পিত স্বাস্থ্যসেবা চালু হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিমান হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ও ভারতের নারায়ণা হেলথের চেয়ারম্যান ডা. দেবী প্রসাদ শেঠী।

শনিবার সকাল ১০টায় ৩৭৫ শয্যা বিশিষ্ট আধুনিক এবং বহুমুখী বিশেষায়িত চিকিৎসাকেন্দ্র ইম্পেরিয়াল হাসপাতাল লিমিটেড উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

চিকিৎসা বিজ্ঞানকে মানবতার মুক্তিতে কাজে লাগিয়ে হয়ে উঠা কিংবদন্তী ডা. দেবী প্রসাদ শেঠী বলেন, ‘ভালো চিকিৎসার জন্য প্রতিবেশী দেশ ভারত, থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়াসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে যাওয়া বাংলাদেশি মানুষের সংখ্যা প্রতিবছরই বাড়ছে। এই হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার ফলে এমন প্রবণতা অনেকাংশে হ্রাস পাবে আমি আশাবাদী।’

এ সময় ইম্পেরিয়াল হাসপাতাল বাংলাদেশের সঠিক ও উন্নত স্বাস্থ্য সেবার নতুন সংযোজন বলে উল্লেখ করেন তিনি।

প্রধান অতিথি ইম্পেরিয়াল হাসপাতাল পরিদর্শন করে অবকাঠামো, আধুনিক যন্ত্রপাতির স্থাপনা এবং অন্যান্য আনুষাঙ্গিক দেখে সন্তোষ প্রকাশ করেন।

অনুষ্ঠানে ইম্পেরিয়াল হাসপাতাল (আইএইচএল)’র বোর্ড চেয়ারম্যান ও চিটাগাং আই ইনফারমারি অ্যান্ড ট্রেনিং কমপ্লেক্স (সিইআইটিসি) ম্যানেজিং ট্রাস্ট্রি অধ্যাপক ডা. রবিউল হোসেন উপস্থিত সকলকে স্বাগত জানান।

তিনি স্বাগত বক্তব্যে হাসপাতালের কয়েকটি বিশেষ দিক তুলে ধরেন। তিনি বলেন, উন্নতমানের স্বাস্থ্য সেবার অপ্রতুলতায় বহুসংখ্যক রোগী বিদেশে যেতে বাধ্য হচ্ছে, তাদের ও তাদের পরিবারকে আর্থিক, শারীরিক এবং মানসিক চাপের মুখে পড়তে হয়। এমন অবস্থা থেকে কিছুটা মুক্তি পেতে উন্নত বিশ্বের আলোকে হাসপাতালটি প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। সরকার স্বল্পমূল্যে এ হাসপাতালের জন্য জায়গা দিয়ে এ কাজকে আরো সহজতর করে দিয়েছে। এক্ষেত্রে বিশ্বব্যাংক ও বাংলাদেশ ব্যাংক সহযোগিতা প্রদান করে এবং কতিপয় বেসরকারি ব্যাংক সহযোগিতা প্রদান করে যার নেতৃত্বে ছিল ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক।’

তিনি বলেন, ‘এ হাসপাতালে এক ছাদের নিচে সব ধরনের চিকিৎসাসেবা রয়েছে। যে সেবাটা চট্টগ্রামের অন্য কোন হাসপাতালে নেই, থাকলেও অপ্রতুল। বিত্তমান, মধ্যবিত্ত ও অস্বচ্ছল থেকে শুরু করে সব ধরনের রোগীরা চিকিৎসা সেবা পাবে। শুধু চিকিৎসাসেবা নয়, একজন রোগী ভর্তি থেকে শুরু করে সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ত্যাগ করা পর্যন্ত হসপিটালিটি বিভাগের মাধ্যমে যাবতীয় সেবা প্রদানের ব্যবস্থা রয়েছে। এছাড়া দক্ষ মানবসম্পদ তৈরির লক্ষ্যে চিকিৎসক, নার্স ও মেডিকেল টেকনিশিয়ানদের জন্য প্রশিক্ষণসহ আবাসিক ব্যবস্থা, অস্বচ্ছল রোগীদের জন্য ১০ শতাংশ চিকিৎসা সুবিধা, দূরবর্তী রোগীর দর্শনার্থীদের থাকার সুবিধার জন্য আবাসন সুযোগ রয়েছে।’

অধ্যাপক ডা. রবিউল হোসেন বলেন, ‘সাত একর জমির উপর যাবতীয় আনুষাঙ্গিক সেবা সম্বলিত ৫টি ভবন নিয়ে মোট ৬ লক্ষ ৬০ হাজার বর্গফুট জায়গায় হাসপাতালটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এখানে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ (ইনফেকশান কন্ট্রোল), রোগীদের নিরাপত্তা এবং কর্মীদের নিরাপত্তা এই ৩টি বিষয়কে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। উন্নতমানের সার্বক্ষণিক ইমার্জেন্সি সেবা এবং কার্ডিয়াক, ট্রান্সপ্ল্যান্ট, নিউরো, অর্থোপেডিক ও গাইনি অবস্ ইত্যাদি সম্বলিত ১৪টি মডিউলার অপারেশান থিয়েটার, ছয়টি নার্স স্টেশন ও ৬২টি কনস্যালটেন্ট রুম সংবলিত বহির্বিভাগ এবং আধুনিক গুণগত মানসম্পন্ন ৫৮টি ক্রিটিকাল কেয়ার বেড; নবজাতকদের জন্য ৪৪ শয্যাবিশিষ্ট নিওনেটাল ইউনিট এবং ৮টি পেডিয়াট্রিক আইসিইউ স্থাপন করা হয়েছে।’

ইম্পেরিয়াল বোর্ড চেয়ারম্যান বলেন, ‘ভারতের বিখ্যাত নারায়ণা হেলথ এবং ইম্পেরিয়াল যৌথভাবে কার্ডিয়াক সেন্টার পরিচালনা করবে এবং ডাক্তার, নার্স ও টেকনিশিয়ানদের প্রশিক্ষণ প্রদান করবে। এছাড়া পূর্ণাঙ্গ অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা এবং হাসপাতাল জৈব বর্জ্য নিষ্কাশনের জন্য সরকারি নীতিমালা অনুসরণ এবং পরিবেশ সংরক্ষণের ব্যবস্থা রয়েছে।’

ইম্পেরিয়াল হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আমজাদুল ফেরদৌস চৌধুরী অনুষ্ঠানে আগত অতিথিবৃন্দকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন এবং প্রেস ও মিডিয়াকে অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে এ হাসপাতালের ভবিষ্যৎ কর্মকাণ্ড জনগণের সামনে তুলে ধরার জন্য ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।

(ঢাকাটাইমস/১৫জুন/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বন্দর নগরী বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা