১০ দিন থানায় ঘুরেও মামলা করতে পারেননি প্রতিবন্ধী শরিফুল
প্রকাশ | ১৬ জুন ২০১৯, ১১:৫৮
প্রতিবন্ধী শরিফুল ইসলামকে এক লাখ ২০ হাজার টাকা সহায়তা করেছিলেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম। সেই টাকায় দুটি আমবাগান ইজারা নিয়েছেন শরিফুল। কিন্তু বাগান মালিকের সঙ্গে দ্বন্দ্বের জের ধরে তারই স্বজনরা আম পেড়ে নিয়ে গেছেন। এ নিয়ে শরিফুল মামলা করতে গেলেও রাজশাহীর চারঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলাম তা গ্রহণ করেননি।
শরিফুল বলছেন, গত ২ মে ঘটনার পর ১২ মে পর্যন্ত তিনি প্রতিদিন থানায় মামলা করতে গেছেন। প্রতিদিনই ওসি তাকে পরের দিন যেতে বলেছেন। আর প্রতিদিনই তাকে বিকাল থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত থানায় বসিয়ে রাখা হয়েছে। এভাবে হয়রানির পর গত বৃহস্পতিবার তিনি আদালতে মামলা করেছেন। প্রতিবন্ধী বলে আত্মীয়-স্বজনরা ধরাধরি করে তাকে বাড়ি থেকে প্রায় ৪০ কিলোমিটার দূরে আদালতে নিয়ে গেছেন। এরপর অবশেষে তিনি মামলা করতে পেরেছেন।
শরিফুল ইসলামের বাড়ি চারঘাট উপজেলার ডাকরা গ্রামে। তার বাবার নাম শামসুল ইসলাম। জন্মের পর থেকেই শরিফুলের পা দুটি অস্বাভাবিক ছোট। শরিফুলের ১০ বছরের ছেলের পায়েরও একই অবস্থা। বাবা-ছেলের এ অবস্থা দেখে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ও স্থানীয় সংসদ সদস্য শাহরিয়ার আলম প্রতিবন্ধী শরিফুলকে এক লাখ ২০ হাজার টাকা দিয়ে কোনো একটা ব্যবসা করতে বলেছিলেন। কিন্তু এই টাকায় আমের বাগান ইজারা নিয়ে বড় ক্ষতির মুখে পড়লেন শরিফুল।
প্রতিবন্ধী শরিফুল জানান, তিনি গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে তার গ্রামের চয়েন উদ্দিন নামে এক ব্যক্তির পাশাপাশি দুটি আম বাগান ইজারা নেন। এক লাখ ৩০ হাজার টাকায় চার বছরের জন্য বাগান দুটি তার কাছে ইজারা দেন চয়েন। কিন্তু চয়েনের সঙ্গে দ্বন্দের জের ধরে গত ২ জুন তার নিকটাত্বীয় আবদুল কাদের, মো. সেন্টু, সুমন ইসলাম কালু, বুলবুল আহমেদ, শরীফ উদ্দিন, আবদুস সোবহান ও নুরুল ইসলাম বাদশা দুটি বাগানের ২০টি গাছ থেকে প্রায় ১৪০ মণ আম পেড়ে নিয়ে যান।
শরিফুল জানান, আম পেড়ে নিয়ে যাওয়ার কারণে তার প্রায় এক লাখ ৬০ হাজার টাকা ক্ষতি হয়েছে। এ নিয়ে তিনি মামলা করতে থানায় যান। কিন্তু ১০ দিন ঘুরেও তিনি মামলা করতে পারেননি। শেষে ১৩ মে রাজশাহীর আদালতে গিয়ে ওই সাতজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। আদালত মামলাটি গ্রহণ করে তদন্তের জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) নির্দেশ দিয়েছে। শরিফুল দ্রুত আসামিদের গ্রেপ্তার দাবি করেন। এছাড়া মামলা না নিয়ে ১০ দিন ধরে হয়রানি করায় তদন্ত করে ওসি নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ারও দাবি জানান তিনি।
মামলা না নেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে ওসি নজরুল ইসলাম বলেন, শরিফুল বাগান ইজারা নেননি। বাগান মালিক চয়েন তাকে দিয়ে মামলা করাতে চাইছিলেন। সে জন্য মামলা গ্রহণ করা হয়নি। তবে শরিফুল ইসলাম ঢাকা টাইমস প্রতিবেদককে ১০০ টাকার দুটি স্ট্যাম্পে লেখা চুক্তিপত্রের অনুলিপি দিয়েছেন। তাতে দেখা যাচ্ছে, গত বছরের ৬ ফেব্রুয়ারিতে চার বছরের জন্য চয়েন তার দুটি বাগান শরিফুলকে ইজারা দিয়েছেন।
ঢাকাটাইমস/১৬ জুন/প্রতিনিধি/এএইচ