সড়ক দুর্ঘটনায় শিক্ষার্থী নিহত
হানিফ বাসের সব কাউন্টার বন্ধ করার হুমকি শিক্ষার্থীদের
সড়ক দুর্ঘটনায় সহপাঠী নিহতের ঘটনায় তিন দফা দাবি তুলেছে সরকারি বাঙলা কলেজের শিক্ষার্থীরা। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দাবি আদায় না হলে হানিফ বাস সার্ভিসের ঢাকাস্থ সকল কাউন্টার বন্ধ করে দেয়ার হুমকিও দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
রবিবার সকালে রাজধানীর মিরপুরে বাঙলা কলেজের সামনে সহপাঠীর মৃত্যুর ঘটনায় মানববন্ধন করে এ হুমকি দেন শিক্ষার্থীরা।
গত শুক্রবার সাভারের তুরাগ ব্রিজের বিপরীতে অভি পেট্রলপাম্পের সামনে হানিফ বাসের চাপায় নিহত হন সরকারি বাঙলা কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী শ্রাবণ মিন্টু মোল্লা। এ ঘটনায় সাজু নামের আরো একজন গুরুতর আহত হন।
হানিফের বাসটি (ঢাকা মেট্রো- ব ১৪-৭৩৫০) বিপরীত দিক থেকে এসে তাদেরকে চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই শ্রাবণের মৃত্যু হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় সাজুকে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজে নেয়া হয়। তার দুটি পা কেটে ফেলতে হতে পারে বলে জানিয়েছে মানববন্ধনকারী শিক্ষার্থীরা।
মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা দাবি জানান, অভিযুক্ত গাড়ি চালক এবং চালকের সহকারীকে বিচারের আওতায় আনতে হবে। শ্রাবণ মিন্টুর পরিবারকে পাঁচ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হবে এবং এ ঘটনায় আহত সাজুর চিকিৎসা খরচ বহন ও তিন লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
শিক্ষার্থীদের পক্ষে কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান (স্নাতকোত্তর) বিভাগের শিক্ষার্থী মানিক চৌধুরী ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আমাদের এই তিনটি দাবি মেনে নেয়া না হলে আমার কঠোর আন্দোলনে যাব। ঢাকায় যত হানিফ কোম্পানির কাউন্টার আছে, তার সবগুলো আমরা বন্ধ করে দেব।’
নিহত শ্রাবণের সহপাঠী ও খালাত ভাই সাঈফ হোসাইন ঢাকা টাইমসকে জানান, ঘটনার পর ঘাতক বাসটিকে আটক করা হলেও তা আটকে রাখা সম্ভব হয়নি। হানিফ কর্তৃপক্ষের কাছে এ বিষয়ে শ্রাবণের আত্মীয়রা গেলেও তারা কোনো গুরুত্ব দেয়নি।
নিহত শ্রাবণ পরিবারের বড় ছেলে ছিলেন। তার মৃত্যুতে পরিবারে শোকের ছায়া নেমে আসার সাথে নেমে এসেছে অনিশ্চয়তাও। সাঈফ বলেন, ‘শ্রাবণ বাসার বড় ছেলে ছিল। পড়াশোনা প্রায় শেষ হয়ে গিয়েছিল। পড়াশোনা শেষে পরিবারের হাল ধরার কথা ছিল। এখন ওর পরিবারের হাল ধরার মতো আর কেউ নাই।’
এ ধরনের ঘটনাকে দুর্ঘটনা নয়, হত্যা আখ্যা দিয়ে বাঙলা কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘যেখান-সেখান থেকে বাসে যাত্রী তুলতে বাসে ড্রাইভার-হেলপার আর পুলিশের মধ্যে চোর-পুলিশ খেলা চলে। সরকারের পক্ষ থেকে পুলিশ ও বিআরটিএকে যেসব নির্দেশনা দিয়ে হয়েছিল তা মানা হচ্ছে না বলেই এমন দুর্ঘটনা ঘটে চলেছে। ড্রাইভার আর হেলপারদের জন্য আলাদা ড্রেস দেয়া হোক। তাহলে দুর্ঘটনার পরেও আমরা তাদের চিনতে পারব।’
ঢাকাটাইমস/১৬জুন/কারই/ইএস