অরিত্রীর আত্মহত্যা

ভিকারুননিসার দুই শিক্ষিকার জামিন, চার্জ ১০ জুলাই

প্রকাশ | ১৬ জুন ২০১৯, ১৮:৪২

আদালত প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী অরিত্রী অধিকারীর (১৪) আত্মহত্যা প্ররোচনা মামলায় আগামী ১০ জুলাই আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জগঠনের শুনানির দিন ধার্য করেছে আদালত।

একই সঙ্গে মামলার আসামি প্রতিষ্ঠানটির ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নাজনীন ফেরদৌস ও শাখার প্রধান জিন্নাত আক্তারের জামিন মঞ্জুর করেন।
আজ রবিবার ঢাকার তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মো. রবিউল আলম এ আদেশ দেন।

ওই আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সাবিনা আক্তর দিপা জানান, আসামিরা এদিন আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন।
এর আগে গত ২৫ মার্চ মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) পরিদর্শক কামরুল হাসান তালুকদার আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।

চার্জশিটে শ্রেণিশিক্ষিকা হাসনা হেনাকে অব্যাহতি দেয়ার আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা। সে অনুযায়ী তাকে অব্যাহতি দেয়া হয়। তিনি গত ৫ ডিসেম্বর গ্রেপ্তার হয়ে চার দিন কারাভোগের পর জামিন পান।

মামলার চার্জশিটে বলা হয়, ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের নিয়ম অনুযায়ী পরীক্ষার হলে পরীক্ষার্থীর সঙ্গে মোবাইল রাখা নিষিদ্ধ থাকলেও ২০১৮ সালের ২ ডিসেম্বর অরিত্রী (১৪) মোবাইল ফোন নিয়ে প্রবেশ করেন। যা পরীক্ষা চলাকালীন হলের শিক্ষিকা আফসানা আমতু রাব্বী তার কাছ থেকে নিয়ে নেন এবং পরদিন পিতা-মাতাকে স্কুলে আসতে বলেন।

সে অনুযায়ী অরিত্রী পরদিন বেলা ১১টার দিকে স্কুলে গিয়ে মা-বাবাকে নিয়ে শ্রেণিশিক্ষিকা হাসনা হেনার সঙ্গে দেখা করেন। তিনি অরিত্রী ও তার মা-বাবাকে আসামি জিন্নাত আক্তারের কাছে নিয়ে যান। তাদের দেখেই জিন্নাত আক্তার উত্তেজিত হয়ে ওঠেন এবং অরিত্রীর মা-বাবার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করে মেয়েকে টিসি দিয়ে দিবেন বলে জানান। তখন মা-বাবা অরিত্রীকে নিয়ে আসামি নাজনীন ফেরদৌসের রুমে যান। সেখানে অরিত্রী আসামি নাজনীন ফেরদৌসের পা ধরে ক্ষমা প্রার্থনা করে। সঙ্গে তার মা-বাবাও মেয়ের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে ক্ষমা প্রার্থনা করেন। কিন্তু নাজনীন ফেরদৌস তাদের কথাবার্তা ও ক্ষমা প্রার্থনায় কর্ণপাত না করে তিনিও টিসি দিয়ে দেবেন বলে জানান। এতে অরিত্রীর মা-বাবার সঙ্গে নাজনীনের কথা-কাটাকাটি হওয়ার সময় অরিত্রী বাসায় চলে যায়। আসামি নাজনীন ও জিন্নাত আক্তারের নির্মম আচরণের কারণে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ওড়না দিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে। আসামিদের নির্দয় ব্যবহার এবং অশিক্ষিকসুলভ আচরণ অরিত্রীকে আত্মহত্যায় প্ররোচিত করে।

অরিত্রী অধিকারী (১৪) নাবালক (শিশু) হওয়ায় মামলার চার্জশিটটি দণ্ডবিধির ৩০৫ ধারায় দাখিল করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা। ওই ধারায় কোনো শিশুকে আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড, যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বা ১০ বছর কারাদণ্ডসহ অর্থদণ্ডের বিধান রয়েছে।

(ঢাকাটাইমস/১৬জুন/মোআ)