উড়ন্ত জয়ে কোপা মিশন শুরু উরুগুয়ের

প্রকাশ | ১৭ জুন ২০১৯, ১৮:০২

অনলাইন ডেস্ক

১০ জনের ইকুয়েডরকে ৪-০ গোলে উড়িয়ে দিয়ে কোপা আমেরিকায় উড়ন্ত সূচনা করেছে উরুগুয়ে। ম্যাচে গোল পেয়েছেন উরুগুয়ের দুই তারকা লুইস সুয়ারেজ ও এডিনসন কাভানি। বাংলাদেশ সময় সোমবার ভোর চারটায় শুরু হওয়া ম্যাচে শুরুর ৬ মিনিটের মধ্যে নিকোলাস লোডেইরোর গোলে এগিয়ে যায় উরুগুয়ে।

২৪ মিনিটে ফুল-ব্যাক হোসে কুয়েনটেরো সরাসরি লাল কার্ড দেখে বাইরে চলে গেলে বাকি সময়টা ১০ জন নিয়েই খেলতে হয়েছে ইকুয়েডরকে। বিরতির আগে বেলো হরিজোন্টের মিনেইরাও স্টেডিয়ামে কাভানি ও সুয়ারেজের গোলে উরুগুয়ে ৩-০ গোলে এগিয়ে যায়। ম্যাচ শেষের ১২ মিনিট আগে আরতুরো মিনার আত্মঘাতির গোলে বড় ব্যবধানের জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে উরুগুয়ে।

চতুর্থবারের মত কোপা আমেরিকায় খেলতে এসে শেষ পর্যন্ত প্রথম গোলের দেখা পেয়েছেন কাভানি। ম্যাচ শেষে এই পিএসজি তারকা বলেছেন, ‘প্রথমার্ধে আমরা যে সুযোগগুলো পেয়েছি তা কাজে লাগানোর চেষ্টা করেছি। আর সে কারণেই ম্যাচে বড় জয় সম্ভব হয়েছে। টুর্নামেন্টের শুরুটা ভাল হওয়াটা সবসময়ই গুরুত্বপূর্ণ।’

গ্রুপ-সি’তে উরুগুয়ের জন্য এই ধরনের শুরুটা জরুরি ছিল। কারণ কঠিন গ্রুপে তাদের অন্যান্য প্রতিপক্ষ হচ্ছে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন চিলি ও অতিথি দল জাপান। আগামী সোমবার সাও পাওলোতে পরবর্তী ম্যাচে এশিয়ান জায়ান্ট জাপানের মোকাবেলা করবে উরুগুয়ে।

ইকুয়েডরের কলম্বিয়ান কোচ হার্নান ডারিও গোমেজ বলেছেন, ‘আমরা আজ যা খেলেছি সেটা স্বাভাবিক ছিল না। আজকের খেলার মত এত খারাপ দল আমরা নই। বিশেষ করে প্রথমার্ধেই আমরা পিছিয়ে পড়েছি।’

ম্যাচ শুরুর ৬ মিনিটে ডানদিক থেকে সুয়ারেজের ক্রসে লোডেইরো ঠান্ডা মাথায় একজন ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে লো ভলিতে বল জালে জড়ান। কাভানি বলেছেন, ‘আমরা জানতাম তারা কঠিন প্রতিপক্ষ। গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে সর্বোচ্চ মনোযোগ দিয়ে ম্যাচটা শুরু করা এবং আমরা সেটা করতে পেরেছি।’

এক গোলে এগিয়ে যাওয়া উরুগুয়েকে রুখতে ইকুয়েডরের রক্ষণভাগ যখন ব্যস্ত ঠিক তখনই কাভানি ব্যবধান দ্বিগুণের সুযোগ পেয়েছিলেন। কিন্তু অফসাইডের কারণে তার গোলটি বাতিল হয়ে যায়। ইকুয়েডরের খেলোয়াড়দের শারিরীক লড়াই প্রায় সময়ই উরুগুয়েকে হতাশ করেছে। ডিয়েগো লাক্সাল্টকে কনুই দিয়ে আঘাত করার পরেও কুয়েনটেরো সে যাত্রা বেঁচে যান। কিন্তু মিনিট খানেক পরেই হেড করার সময় লোডেইরোর মুখে আরেকটি আঘাত করলে ব্রাজিলিয়ান রেফারি এন্ডারসন ডারোনকো প্রাথমিকভাবে হলুদ কার্ড দেখালেও ভিএআর প্রযুক্তির সহায়তায় নিশ্চিত হয়ে লাল কার্ড প্রদর্শন করেন। আর এতেই কার্যত ইকুয়েডর পিছিয়ে পড়ে।

২৭তম মিনিটে ১৫ গজ দুর থেকে কাভানির হাফ-ভলি ইকুয়েডর গোলরক্ষক আলেক্সান্দার ডোমিনগুয়েজ দুর্দান্তভাবে রক্ষা করেন। পরমুহূর্তেই কাভানির ব্যাক-ফ্লিক এক হাতে রুখে দেন ডোমিনগুয়েজ। তবে ৩৩ মিনিটে আর শেষ রক্ষা হয়নি। দিয়েগো গোডিনের বাড়ানো পাসে কাভানি ৭ গজ দুর থেকে বাইসাইকেল কিকে দলের ব্যবধান দ্বিগুণ করেন। জাতীয় দলের হয়ে এটি কাভানির ৪৭তম আন্তর্জাতিক গোল। বিরতির ঠিক আগে নাহিটান নানডেজ গোলের সুযোগ নষ্ট করলেও সুয়ারেজ ঠিকই গোল আদায় করে নিয়েছেন।

বিরতির পর মূলত ইকুয়েডরের হাতে কোন খেলাই ছিল না। খেলোয়াড় একজন কম, তার উপর ০-৩ ব্যবধানে পিছিয়ে পড়ে ইকুয়েডর সম্ভবত দ্রুত ম্যাচ শেষের ক্ষণ গুনছিল। ম্যাচ শুরুর সাথে সাথে উরুগুয়ের আবারো গোলের সুযোগ পান। কিন্তু আবারো অফসাইড পজিশনের জন্য কাভানিকে হতাশ হতে হয়। উরুগুয়ের অপেক্ষাকৃত বেশী কৌশলী খেলোয়াড়দের বিপক্ষে ইকুয়েডর শারিরীক শক্তি প্রয়োগ করতে থাকে। ৭৮ মিনিটে কাভানির ক্রস থেকে গ্যাস্টন পেরেইরো হেড ইকুয়েডরের সেন্টার-হাফ মিনা ক্লিয়ার করতে গেলে তা জালে জড়ায়। ফলে আত্মঘাতি গোলের লজ্জায় পড়ে ইকুয়েডর।

(ঢাকাটাইমস/১৭ জুন/এসইউএল)