স্মার্টফোনের দাম কতটা বাড়বে?

আসাদুজ্জামান, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ১৮ জুন ২০১৯, ১২:৪৬ | প্রকাশিত : ১৮ জুন ২০১৯, ১২:১২

আমদানিতে কর বাড়ায় স্মার্টফোনের দাম কতটা বাড়বে- এ নিয়ে জিজ্ঞাসা ব্যাপক। বিশেষ করে তরুণদের মধ্যে।

২০১৯-২০ সালের প্রস্তাবিত বাজেটে স্মার্টফোনের আমদানি শুল্ক ১০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ২৫ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। আর বাজেটে শুল্ক বাড়ানোর প্রস্তাব করলে সেটা কার্যকর হয় সঙ্গে সঙ্গে। তাই ১৩ জুনের পর থেকে যারাই ফোন আমদানি করছেন, বাড়তি অর্থ দিতে হচ্ছে।

যদিও এখনো কোনো কোম্পানি ফোনের দাম বাড়ায়নি। কারণ, বাজারে যে ফোন এখনো সরবরাহ করা আছে, তা আগের ১০ শতাংশ কর দিয়ে আমদানি করা।

আবার আমদানির পাশাপাশি দেশেও স্মার্টফোন সংযোজন শুরু হয়েছে। তাই স্যামসাং, সিম্ফনি, ওয়ালটন, উইনম্যক্স, টেকনো, ওকে, উইসহ আটটি কোম্পানির ফোনের দরে বর্ধিত শুল্ক হারের প্রভাব পড়বে না। আর দাম বাড়ালে এসব কোম্পানির সঙ্গে প্রতিযোগিতায় আমদানিকারকরা পেরে উঠবে কি না, এ নিয়ে আছে সংশয়।

বাংলাদেশ মোবাইল ফোন ইম্পোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএমপিআইএ) এর তথ্য মতে, দেশে স্মার্টফোনের মোট চাহিদার ৭০ শতাংশেরও বেশি মেটায় আমদানিকৃত স্মার্টফোন। এর মধ্যে আছে আইফোন, হুয়াওয়ে, শাওমি, আসুস, অপো, ভিভো, নোকিয়া , মটোরোলা, ওয়ানপ্লাস, ম্যাক্সিমাস, অনার, ইনফিনিক্স ইত্যাদি।

আর দেশে হ্যান্ডসেট উপাদনকারী এই আটটি প্রতিষ্ঠান স্মার্টফোনের বাজারের ৩০ শতাংশের মতো পূরণ করছে। জনপ্রিয় ব্র্যান্ড স্যামসাং গত বছর থেকে ফোন সংযোজন শুরু করায় তারা আগের চেয়ে কম দামে গ্রাহকদের দিতে পারছে। গ্রাহকও তাদের বাড়ছে। এতে অন্য বড় কোম্পানিগুলোও বিনিয়োগে উৎসাহী হচ্ছে।

অপো বাংলাদেশের পিআর ম্যানেজার ইফতেখার সানি ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘প্রস্তাবিত বাজেটে স্মার্টফোন আমদানির উপর শুল্কহার ১০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ২৫ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। এই প্রেক্ষিতে অপো স্মার্টফোনের দাম বাড়বে কি না সে ব্যাপারে আমরা এখনো সিদ্ধান্ত নেইনি।’

বাংলাদেশে কারখানা করতে আগ্রহী অপোও। জানান ইফতেখার সানি।। বলেন, ‘বাজেটে বলা হয়েছে স্থানীয়ভাবে বিদেশি ফোন সংযোজন করা হলে নানা সুযোগ-সুবিধা পাওয়া যাবে। এজন্য আমাদের সময় দিতে হবে। হুট করে বললেই তো দেশে কারখানা করা যাবে না। এজন্য নীতি-নির্ধারকদের সিদ্ধান্ত এবং বিপুল বিনিয়োগের প্রয়োজন আছে।’

তবে শুল্ক বাড়ায় বৈধ পথে আমদানির বদলে অবৈধ পথে মোবাইল ফোন আনা বাড়বে বলেও শঙ্কা আছে। বাংলাদেশ মোবাইল ফোন ইম্পোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন বিএমপিআইএর পরিচালক বলেন, ‘আমদানি কর বাড়ার ফলে গ্রে মার্কেট আরও বেড়ে যাবে। এতে হ্যান্ডসেট উৎপাদনকারী, আমদানিকারক এবং সরকার তিনপক্ষই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তাই গ্রে বন্ধ করতে পারলে এটা ভালো (শুল্ক বৃদ্ধি) উদ্যোগ। আর তা না পারলে বড় ধরনের বিপদে পড়তে হবে।’

হুয়াওয়ে বাংলাদেশের একজন কর্মকর্তা জানান, তারা দাম বাড়ানোর বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি। একজন কর্মকর্তা বলেন, শুল্ক বাড়লে শেষ পর্যন্ত আমদানি করা ফোনের দাম না বাড়িয়ে হয়ত উপায় থাকবে না। আর এতে করে এই খাতে এক প্রকার অস্থিরতা তৈরি হবে। কারণ এখানে প্রত্যক্ষ পরোক্ষভাবে ২০ হাজারের বেশি মানুষের কর্মসংস্থান রয়েছে।’

আরেক জনপ্রিয় ব্র্যান্ড শাওমির সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তাদের মুখপাত্র ই মেইলে ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘এমআই (শাওমির ব্র্যান্ড) ভক্তদের জন্য সাশ্রয়ী মূল্যে সর্বোচ্চ মানের উদ্ভাবনী প্রযুক্তি নিয়ে আসার প্রতি আমরা বিশ্বাসী। এই আমদানি কর আরোপ করা হলে বাজারে স্মার্টফোন আমদানির পাশাপাশি অর্থনীতিতে উল্লেখযোগ্যভাবে পরিবর্তন ঘটতে পারে। এই ধরনের উচ্চ আমদানি করের ফলে আমাদের পক্ষে অনেস্ট প্রাইসে উন্নত মানের প্রযুক্তি নিয়ে আসা কঠিন হবে এবং এতে গ্রাহকদের বেছে নেওয়ার সুযোগ কমে যাবে।’

(ঢাকাটাইমস/১৮জুন/এজেড/ডব্লিউবি)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা