বিদায়, ভালোবাসার নগরী প্যারিস

দেলোয়ার হোসেন, প্যারিস থেকে
 | প্রকাশিত : ১৯ জুন ২০১৯, ০৮:৩৭

বুধবার দুপুর থেকে দীর্ঘ জার্নি। দেড়টায় প্যারিস থেকে বাস ছেড়ে লন্ডনের ভিক্টোরিয়া স্টেশনে পৌঁছাবে সন্ধ্যা সাড়ে নয়টায়। সাড়ে আট ঘণ্টার জার্নির কথার ভেবে আমি আগাম ক্লান্ত। ইংলিশ চ্যানেল দেখতে হলে বাস কিংবা ট্রেনের বিকল্প নেই। ঢাকা টাইমসের ইউরোপ ব্যুরো প্রধান কমরেড ভাই অবশ্য ট্রেনের টিকিটই কাটতে চেয়েছিলেন। প্যারিস থেকে লন্ডন যেতে ট্রেনে লাগে মাত্র আড়াই ঘণ্টা। ট্রেনে গেলে পরের দিন সকালের বাংলাদেশের ম্যাচটা ধরা আমার জন্য খুব সহজ হতো। আমি কি ভুল পরিকল্পনা করলাম?

সাড়ে আাট ঘণ্টার বাস জার্নির সঙ্গে প্যারিস ছাড়ার বেদনা। আমার অবস্থা যে কি আমি নিজেই জানি না। ছয় দিনের ফ্রান্স সফরের শেষ দিনে এসে কেন যেন মনে হলো, আমি প্যারিসের প্রেমে পড়ে গেছি। প্যারিস ছাড়ার কষ্ট ভেতরে ভেতরে জড়ো হয়েছে আমার। স্পষ্ট অনুভব করছি। হ্যাঁ সেটাই তো। শুধু আমার বেলায় নয়, এটা নাকি সব আগন্তেরই হয়। প্যারিসের ভালোবাসার শক্তি এমনই। শুধু কাছে টানে। প্যারিসের বাঁকে বাঁকে মায়া। প্যারিস যে প্রেমের নগরী, ভালোবাসার নগরী তার প্রমাণ পেলাম। লাভ ইউ প্যারিস।

ব্রাসেলস থেকে বাসে করে এসেছি প্যারিসে। আড়াই ঘণ্টার পথ। কিন্তু এই ঘণ্টা আমার কাছে এক ঘণ্টার মতো মনে হয়েছে। সমৃদ্ধ ফ্রান্স দেখে যারপরনাই মুগ্ধ হয়েছি। ফ্রান্স ইংল্যান্ডের মতো নয়, ইংল্যান্ডের কৃষি বলতে আলু। চারিদিকে শুধু পতিত জমি। কিন্তু ফ্রান্স কৃষি সমৃদ্ধ দেশও বটে। হাইওয়ের দুই পাশে যতদূর চোখ যায় সবুজ আর সবুজ। মুগ্ধ দৃষ্টিতে উপভোগ করতে করতে সময় যে কখন কেঠে গেছে টেরই পাইনি। আহ কি, মন জুড়ানো সবুজ ফসলের মাঠ। গম, আলু, ভুট্টা সবজি ইত্যাদি। উপচে পড়া ফসল। কোনো ফসল কাটা হচ্ছে, কোনো ক্ষেত কিছু দিন বোনা হয়েছে। কোনো ফসলের আবার ভরা যৌবন। দূর থেকে শস্য কাটার গানও যেন ভেসে আসে ক্ষণে ক্ষণে।

ঐতিহ্য, শিল্প সাহিত্যে গোটা দুনিয়ার সঙ্গে ফ্রান্সের তুলনা হয় না। শত শত বছর ধরে তারা এসবে বিশ্বকে নেতৃত্ব দিয়েছে। সেই গৌরব্বোজ্বল ঐতিহ্য ও নেতৃত্ব এখনও ধরে রেখেছে তারা। ফরাসিদের মতো শিল্পকলাপ্রেমী ও বই প্রিয় জাতি দ্বিতীয়টি নেই। বাস, ট্রেনে চলার সময়টুকুও নষ্ট না করে তারা বইয়ে চোখ রাখতে ভালোবাসেন।

ইউরোপের প্রতিটা শহরই সুন্দর। কোনোটির চেয়ে কোনোটি কম নয়। তবে প্যারিস যেন আলাদা বৈশিষ্ট্য ধারন করে আছে। প্যারিসের সঙ্গে অন্য কোনো নগরের তুলনা দেওয়া ভুল। আইফেল টাওয়ারসহ আরও অনেক বিস্ময়কর স্থাপনা ও দর্শনীয় স্থান আছে এখানে। তবে আমার কাছে পুরো প্যারিস শহরটাকেই দর্শনীয় স্থান মনে হয়েছে।

শত শত বছরের ইমরাতগুলো আজও দাঁড়িয়ে আছে গর্ব নিয়ে। দর্শনীয় নির্মাণশৈলীর পাশাপাশি নানা স্থাপত্য শিল্প অনন্য করে তুলেছে এসব ইমারতগুলোকে। ফরাসি জাতি কতটা মহান, প্যারিস না এলে বোঝা যাবে না। সম্মানে মাথা নত হয়ে আসবে আপনার।

শীত শেষে এখন প্যারিসে বসন্তকাল। মানে না শীত না গরম। দারুণ এ উপভোগ্য আবহাওয়া থাকবে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। আর এ সময়টাতেই সারা বিশ্ব থেকে লক্ষ্য লক্ষ্য পর্যটক আসেন স্বপ্নের নগরী দেখতে।

ইউরোপে রাত মাত্র ৫/৬ ঘণ্টা। তাই সন্ধ্যার পরই পরই ঘুমিয়ে পড়ে এ অঞ্চলের বেশিরভাগ শহর। কিন্তু প্যারিস তার ব্যতিক্রম। বরং রাতেই বেশি জমজমাট। রূপের ডালি সাজিয়ে রাতে যেন আরও জেগে ওঠে প্যারিস। প্রেমে মত্ত ওঠে প্রেমের নগরী।

বিদায় ভালোলাগা, ভালোবাসার নগরী প্যারিস। হয়তো দেখে হবে কোনো বসন্তে।

(ঢাকাটাইমস/১৯জুন/ডিএইচ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

খেলাধুলা বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

খেলাধুলা এর সর্বশেষ

জিম্বাবুয়ে সিরিজের শুরুতে মুস্তাফিজের খেলা নিয়ে যা জানাল বিসিবি

যে কারণে বাংলাদেশের প্রাথমিক দলে নেই সাকিব-মুস্তাফিজ

আইসিসির আন্তর্জাতিক প্যানেলে যুক্ত হলেন বাংলাদেশি আম্পায়ার মোর্শেদ

বড় চমক রেখে জিম্বাবুয়ে সিরিজের জন্য বাংলাদেশের প্রাথমিক দল ঘোষণা

টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলতে সিলেটে পৌঁছেছে হারমানপ্রীত-স্মৃতি মানদানারা

তীব্র গরমে ফ্লাডলাইটে ফুটবল ম্যাচের সিদ্ধান্ত

জাতীয় দলে ফেরা নিয়ে নিজের সিদ্ধান্তের কথা জানালেন সুনীল নারিন

 হাথুরুর সঙ্গে নির্বাচকদের বৈঠক সম্পন্ন, আলোচনা হলো যা নিয়ে

মুস্তাফিজের আইপিএল ছাড়া নিয়ে যা বললেন চেন্নাই কোচ

ঢাকায় পৌঁছেছেন টাইগারদের নতুন কোচ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :