‘আমদানি নির্ভরতা কমাতে স্মার্টফোনে শুল্ক বাড়ানো হয়েছে’

আসাদুজ্জামান
| আপডেট : ১৯ জুন ২০১৯, ১১:৪৯ | প্রকাশিত : ১৯ জুন ২০১৯, ১০:২১

স্মার্টফোন আমদানি নিরুৎসাহিত করার জন্য আমদানি শুল্ক ১০ শতাংশ থেকে ২৫ শতাংশ বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে ২০১৯-২০ সালের বাজেটে। সরকার চাইছে বিদেশি কোম্পানিগুলো দেশেই কারখানা খুলে ফোন উৎপাদন করুক। ডাক, টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার মনে করেন, আমদানি শুল্ক না বাড়ালে কখনোই এদেশে বিদেশি কোম্পানি কারখানা খুলবে না। তিনি বলেন, ‘আমরা যদি দেশে স্মার্টফোন তৈরির কারখানা না করি তবে সারা জীবনই আমাদের আমদানি নির্ভর থাকতে হবে।’ ঢাকা টাইমসের-এর সঙ্গে সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন আসাদুজ্জামান।

বাংলাদেশের স্মার্টফোনের বাজার এখনো আমদানি নির্ভর। এই অবস্থায় স্মার্টফোন আমদানিতে শুল্ক ১০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ২৫ শতাংশ করা হয়েছে। এতে করে কি ডিজিটাল বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা বাধাগ্রস্ত হবে?

মোস্তাফা জব্বার: দেশে এখন আটটি স্মার্টফোন কারখানা আছে। এর মধ্যে বহুজাতিক কোম্পানি স্যামসাংও আছে। এসব কারখানায় পুরোদমে স্মার্টফোন উৎপাদন হচ্ছে। তাই ডিজিটাল বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা কখনোই বাধাগ্রস্ত হবে না। আমদানি নির্ভরতা কমলে বরং ডিজিটাল বাংলাদেশ আরো সমৃদ্ধ হবে। ডিজিটাল বাংলাদেশ মানে এই না যে, বিদেশ থেকে পণ্য আমদানি করতে হবে।

বাংলাদেশে উৎপাদিত স্মার্টফোন কি বিশ্বমানের?

মোস্তাফা জব্বার: নিঃসন্দেহে। আমাদের দেশের উৎপাদিত পণ্য বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় চুল পরিমাণও খারাপ না। দেশে উৎপাদিত স্যামসাং ফোন আন্তর্জাতিক মানের। আন্তর্জাতিক মান বাজায় রেখেই দক্ষিণ কোরিয়ার স্যামসাং ফোন বাংলাদেশে তৈরি হচ্ছে।

দেশে যে আটটি কারখানায় স্মার্টফোন উৎপাদন হচ্ছে তাতে দেশীয় চাহিদার কতটুকু মিটছে? মোস্তাফা জব্বার: বাংলাদেশে কারখানা হয়েছে খুব বেশি দিন হয়নি। এরই মধ্যে দেশীয় হ্যান্ডসেটের ২৫ শতাংশ চাহিদা পূরণ করছে এই আটটি কারখানা। আমার বিশ্বাস, আগামী কয়েক বছরের মধ্যে দেশের শতভাগ চাহিদা পূরণ করতে সক্ষম হবে।

স্মার্টফোন আমদানিকারকরা বলছে, ফোন আমদানিতে শুল্ক বাড়ানোর ফলে স্মার্টফোনের দাম বাড়বে, চাহিদাও কমবে। মোস্তাফা জব্বার: আমাদের স্মার্টফোন আমদানি করতে হবে কেন? দেশের পণ্যের বাজার তৈরির জন্যই আমরা লড়াই করেছি। আমাদের দেশে যে পণ্য উৎপাদিত হয় সে জিনিস আমরা কেন আমদানি করব। স্যামসাংয়ের পথ ধরে অন্যান্য বিদেশি কোম্পানিও বাংলাদেশে কারখানা করুক। আমাদের দেশের টাকা কেন আমি বিদেশি কোম্পানির পেছনে খরচ করব? আমরা কী দেশের মানুষের কর্মসংস্থানের দিকে তাকাব না?

আমদানি নির্ভরতা কমানোর জন্যই কি স্মার্টফোন আমদানিতে শুল্ক বাড়ানো হয়েছে?

মোস্তাফা জব্বার: আমদানি নির্ভরতা কমানোর জন্যই স্মার্টফোন আমদানিতে শুল্ক বাড়ানো হয়েছে। আমরা যদি দেশে স্মার্টফোন তৈরির কারখানা না করি তবে সারা জীবনই আমাদের আমদানি নির্ভর থাকতে হবে। কিছু বিদেশি কোম্পানি চিৎকার করছে আমদানি শুল্ক কেন বাড়ানো হলো এর জন্য। তারা আসলে চাইছে আমাদের দেশের মানুষের কষ্টার্জিত আয় বিদেশে পাঠাই এবং আমরা উৎপাদক না হই। আমরা কী কারণে আমদানি নির্ভর থাকব। পৃথিবীর কোনো দেশই আমদানি নির্ভর থাকতে চায় না। আমরা যতদিন উৎপাদন করতে পারিনি ততদিন তো আমদানিই করেছি। এখন তো আমরা উৎপাদন করছি।

তাহলে বলা যায়, সুলভে বাংলাদেশের গ্রাহকদের স্মার্টফোন সরবরাহ করতে হলে বিদেশি কোম্পানিকে দেশে কারখানা খুলতে হবে।

মোস্তাফা জব্বার: অবশ্যই। আমি বিদেশি স্মার্টফোন কোম্পানিকে উদ্দেশ্য করে বলতে চাই, আপনারা স্যামসাংয়ের মতো বাংলাদেশে কারখানা খুলুন। এদেশেই ফোন তৈরি করে তা বিক্রি করুন।

বিদেশি কোম্পানি দেশে স্মার্টফোন কারখানা খুললে কী কী সুযোগ-সুবিধা পাবে?

মোস্তাফা জব্বার: বিদেশি কোম্পানি যাতে দেশে হ্যান্ডসেট কারখানা চালু করে এ জন্য নানা সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছে সরকার। এসব কারখানার জন্য যন্ত্রাংশ আমদানিতে ০ শতাংশ ডিডটি ধার্য করা হয়েছে। ওই কোম্পানি যদি হাইটেক পার্কে কারখানা খোলে তবে ১০ বছরের ট্যাক্স হলিডে পাবে। এছাড়াও দেশে উৎপাদিত পণ্য বিদেশে রপ্তানি করলে ১০ শতাংশ নগদ প্রণোদনা পাবে।

সময় দেয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

মোস্তাফা জব্বার: ঢাকা টাইমস ও আপনাকে ধন্যবাদ।

(ঢাকাটাইমস/১৯জুন/এজেড)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা