মিন্টুর শুভাকাঙ্ক্ষীদের আফসোস

প্রকাশ | ১৯ জুন ২০১৯, ২১:৩৬ | আপডেট: ১৯ জুন ২০১৯, ২২:৪৪

বোরহান উদ্দিন, ঢাকাটাইমস

বর্তমানে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সঙ্গেই ছিল সম্পর্ক। বিশেষ করে দলটির প্রধান শেখ হাসিনার খুব ঘনিষ্ঠ ছিলেন তিনি। পদ না থাকলেও তাই দলে বেশ মূল্যায়ন। নিজে ব্যবসা করেছেন, অনেককে ব্যবসা পাইয়েও দিয়েছেন।

কথা হচ্ছে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল মিন্টুকে নিয়ে। ২০০১ সালের জাতীয় নির্বাচনে আগে ঘটা করে বেগম খালেদা জিয়ার হাত ধরে তিনি যোগ দেন বর্তমান দলে। কিন্তু বলার মতো তেমন কিছু পাননি। সবশেষ দলের স্থায়ী কমিটিতে নতুন দুই মুখ যোগ হলেও মিন্টু ‘বঞ্চিত’ই রয়ে গেলেন।

কাউন্সিলের তিন বছর তিন মাস পর বুধবার দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম স্থায়ী কমিটিতে দুজন সদস্য যোগ করে বিএনপি। তারা হলেন- ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেননের বোন, সেলিমা রহমান ও আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতা শেখ ফজলুল করিম সেলিমের বেয়াই, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু।

গঠনতন্ত্রের ক্ষমতাবলে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এদের নিযুক্ত করেছেন বলে জানিয়েছেন সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

আব্দুল আউয়াল মিন্টুর ঘনিষ্ঠজনদের আশা ছিল স্থায়ী কমিটিতে জায়গা হবে তার। কারণ অন্য যারা সদস্য আছেন তাদের থেকে ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিক প্রভাব বিবেচনায় মিন্টু পিছিয়ে নয়, বরং অনেক এগিয়ে। কিন্তু দলের সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী পদে জায়গা না পাওয়ায় তারা হতাশ।

বিএনপির স্থায়ী কমিটি বরাবরই একটি আকর্ষণীয় ও মর্যাদাসম্পন্ন পদ। আজীবন বিএনপির রাজনীতি করা পোড় খাওয়া নেতাদের লক্ষ্য থাকে শেষ জীবনে হলেও স্থায়ী কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত হওয়া। কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া এ ফোরামে সাংগঠনিকভাবে যোগ্য, পরীক্ষিত, ত্যাগী ও দলে তুলনামূলক গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিদেরই স্থান হয়।

বর্তমান বাস্তবতায় খুব বেশি প্রভাব না থাকলেও এ কমিটি নির্বাচনের প্রার্থী চূড়ান্ত, কর্মসূচি প্রণয়ন থেকে শুরু করে সার্বিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের কাজগুলো করে থাকে। স্থায়ী কমিটির সুপারিশের আলোকেই বেশিরভাগ সময় বিএনপির শীর্ষ নেতা সিদ্ধান্ত দিয়ে থাকেন।

ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘নতুন সিদ্ধান্তটা দলের কোনো কাজে আসবে বলে মনে হয় না। বরং বিরোধ আরও বাড়বে। এর ফলে সক্রিয় কয়েকজন নিষ্ক্রিয় হয়ে যাবে।’

মিন্টুকে ২০০১ সালের আগে আওয়ামী লীগের বাইরে কেউ ভাবেননি। আত্মীয়তার সূত্রেও দলের সঙ্গে যোগসূত্র আছে তার। ছোট ছেলে তাফসির আউয়াল বিয়ে করেছেন প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা গওহর রিজভীর মেয়ে মায়া বারোলোকে।

অনেকের মতে, পুরোদস্তুর এই ব্যবসায়ী বিএনপিতে আসেন ঢাকা সিটি করপোরেশনের মেয়র হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে। কিন্তু সেই স্বপ্নপূরণ হয়নি তার।

ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইর সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। তার ব্যর্থতার বড় নজির নেই। জীবনে যা করতে বা হতে চেয়েছেন সবই হতে পেরেছেন। সবশেষ ঢাকা উত্তরের মেয়র পদে লড়তে গিয়েও ‘সামান্য ভুলে’ মনোনয়ন বাতিল হয়। যা নিয়ে অবশ্য দলের মধ্যে নানা গুঞ্জন আছে।

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টার পদ থেকে ২০১৬ সালে দলের জাতীয় কাউন্সিলে ভাইস চেয়ারম্যান করা হয় আব্দুল আউয়াল মিন্টুকে।

রাজনীতির বাইরে আবদুল আউয়াল মিন্টুর একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ীও। আওয়ামী লীগের গত মেয়াদে জেলও খেটেছেন তিনি। একাদশ সংসদ নির্বাচনে লড়তে মনোনয়ন কিনলেও শেষ পর্যন্ত নির্বাচন করেননি তিনি।

(ঢাকাটাইমস/১৯জুন/বিইউ/ডব্লিউবি/জেবি)