আটকে গেল সাবেক সাংসদ রানার জামিন

প্রকাশ | ২০ জুন ২০১৯, ১৭:১৩ | আপডেট: ২০ জুন ২০১৯, ১৯:২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
ফাইল ছবি

টাঙ্গাইলে দুই যুবলীগ নেতা হত্যা মামলায় সাবেক এমপি আমানুর রহমান খান রানার জামিন আগামী ১ জুলাই পর্যন্ত স্থগিত করেছে হাইকোর্টের আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতির আদালত। ফলে তাকে কারাগারেই থাকতে হচ্ছে।

হাইকোর্টের জামিনাদেশ স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষের করা আবেদনের প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার এ আদেশ দেন বিচারপতি মো. নূরুজ্জামান। এদিন আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ড. বশির উল্লাহ। রানার পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মনসুরুল হক চৌধুরী। সঙ্গে ছিলেন রুশো মোস্তফা।

এর আগে বুধবার হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ তাকে জামিন দেয়।

এদিকে টাঙ্গাইলে আওয়ামী লীগ নেতা ও মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমদ হত্যা মামলার স্বাক্ষ্যগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে এ মামলার অন্যতম আসামি টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসনের সাবেক এমপি আমানুর রহমান খান রানার উপস্থিতিতে টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক রাশেদ কবিরের আদালতে স্বাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়।

স্বাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালতের বিচারক আগামী ৪ জুলাই এ মামলার পরবর্তী তারিখ ধার্য করেন। বুধবার (১৯জুন) কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে সাবেক এমপি রানাকে টাঙ্গাইল কারাগারে আনা হয়।

টাঙ্গাইলের কোর্ট পরিদর্শক তানভীর আহাম্মেদ বলেন, বৃহস্পতিবার টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতে ফারুক হত্যা মামলার স্বাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য ছিল। এদিন চিকিৎসকসহ দুইজনের স্বাক্ষ্যগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। এনিয়ে এই  মামলার মোট ১৬জনের স্বাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে।
 
দুই যুবলীগ নেতা হত্যা:

টাঙ্গাইল সদর উপজেলার বাঘিল ইউনিয়ন যুবলীগের নেতা শামীম ও মামুন ২০১২ সালের ১৬ জুলাই বাড়ি থেকে টাঙ্গাইল শহরে এসে নিখোঁজ হন। ঘটনার পরদিন শামীমের মা আছিয়া খাতুন এ ব্যাপারে টাঙ্গাইল সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। এক বছর পর ২০১৩ সালের ৯ জুলাই নিখোঁজ মামুনের বাবা টাঙ্গাইল আদালতে হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে তদন্ত করে পুলিশ ওই বছর ২১ সেপ্টেম্বর মামলাটি তালিকাভুক্ত করে। এই মামলায় গ্রেফতার হওয়া খন্দকার জাহিদ, শাহাদত হোসেন এবং হিরন মিয়া আদালতে এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে জবানবন্দি দেন। জবানবন্দিতে তারা বলেন, এমপি রানার নির্দেশনায় যুবলীগ নেতা শামীম ও মামুনকে হত্যা করে লাশ নদীতে ভাসিয়ে দেওয়া হয়েছিল।

মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমদ হত্যা:

২০১৩ সালের ১৮ জানুয়ারি রাতে টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা ও মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমেদকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় কলেজপাড়া এলাকার তার বাসার কাছ থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়।

টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে নেয়ার পর চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনার তিনদিন পর তার স্ত্রী নাহার আহমেদ বাদী হয়ে টাঙ্গাইল মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন। প্রথমে মামলাটি টাঙ্গাইল মডেল থানা পুলিশ তদন্ত করলেও পরবর্তীতে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ মামলাটি তদন্ত করে এবং ২০১৬ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি এমপি রানা ও তার তিনভাইসহ মোট ১৪ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে। দীর্ঘ ২২ মাস পলাতক থাকার পর এমপি রানা গত ২০১৬ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর এই আদালতেই আত্মসমর্পন করে জামিন আবেদন করেন। আদালত জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

এদিকে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসন থেকে সাবেক এমপি আমানুর রহমান খান রানাকে বাদ দিয়ে তার পিতা আতাউর রহমান খানকে মনোনয়ন দেয় আওয়ামী লীগ। আতাউর রহমান খান দলের মনোনয়ন পেয়ে সংসদ সদস্য হিসেবে বিজয়ী হয়েছেন।

ঢাকাটাইমস/২০জুন/ইএস