গুলশানে সন্ত্রাসী দিয়ে বাড়ি দখলের চেষ্টার অভিযোগ

প্রকাশ | ২০ জুন ২০১৯, ২০:২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

রাজধানীর গুলশানে স্থানীয় সন্ত্রাসীরা একটি বহুতল ভবন দখলের পাঁয়তারা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ২০/৩০ জন লোক ওই ভবনের মালিকের বাসায় অবৈধভাবে ঢুকে গেলে তিনি পুলিশের দ্বারস্থ হন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ এলে সন্ত্রাসীরা চলে যেতে বাধ্য হয়। তবে এখনো তারা আশপাশে অবস্থান করে ভবনটি দখলের চক্রান্ত করছে বলে অভিযোগ করেছেন ভবনের মালিক। তবে গুলশান থানা পুলিশের দাবি, এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটেনি।  

ভবনটির মালিক গাজী কামাল ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘আমি দীর্ঘদিন জাপানে ছিলাম। বর্তমানে দেশে ব্যবসা করি। ২০০৭ সালে আবদুস সোবাহান নামের এক ভদ্রলোকের কাছ থেকে শাহজাদপুরে ছয় কাঠা জমি কিনি। পরে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউকের) অনুমোদন নিয়ে নয় তলা ভবন তৈরি করি। বর্তমানে ওই ভবনের দ্বিতীয় তলায় থাকি।’

‘২০০৯ সালে কফিল উদ্দিন কফু নামের এক ব্যক্তি আমার কেনা জমিটির স্বত্ব ঘোষণা চেয়ে ঢাকার যুগ্ম জেলা জজ আদালতে একটি মামলা করেন। আদালত নালিশি জমিটিতে স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা দেয়। ২০১২ সালের ২ নভেম্বর কফিল উদ্দিন কফু ও ইকবাল নামের দুই ব্যক্তি আনসার সদস্যদের দ্বারা আমার বাড়িটি দখলের চেষ্টা করেন। আনসার সদস্যরা আমার বাড়িটিতে চার বছর ১১ মাস অবস্থান করে। পরে সুপ্রিম কোর্টের আদেশে আনসার বাড়িটি ছেড়ে চলে যায়।’

গাজী কামাল অভিযোগ করেন, কফিল উদ্দিন কফু এবং দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিনের ভাগনে পরিচয় দানকারী ইকবাল তার জমিটি দখলের চেষ্টা করছেন।

তিনি বলেন, ‘বাড়ি নির্মাণের সময় আমি কিছু জায়গা ছেড়ে বাড়ি করেছিলাম। ওই জায়গায় আমি দুটি দোকান ও একটি সানসেট নির্মাণ করি। গতকাল আমার বাড়ির সামনে রাজউক অবৈধ উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করে। তখন ইকবাল ও কফু আমার বাড়ির সামনের ওই দোকান সানসেট নিয়ে উচ্ছেদের চেষ্টা করেন। তখন রাজউকের ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে তারা আমার গেটে তালা মারেন। পরে ওই ম্যাজিস্ট্রেটের হস্তক্ষেপে তারা চলে যান। এরপর আজ বৃহস্পতিবার ভোর চারটার দিকে আমার বাড়ির বিদ্যুৎ লাইন কেটে দেন। পরে বেলা ১১টার দিকে ৩০ থেকে ৪০ জন সন্ত্রাসী আমার বাড়িতে ঢুকে তালা ভেঙে ফেলে। পরে  আমি গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুজ্জামানকে ফোনে বিষয়টি জানাই। খবর পেয়ে গুলশান থানার পুলিশ এসে ওই লোকদের বের করে দেয়। এখন ওই সন্ত্রাসীরা আমার বাড়ির পাশে মরিয়ম টাওয়ার-২ এর নিচে অবস্থান করছে। তারা যেকোনো সময় আমার ও আমার পরিবারের ক্ষতি করতে পারে বলে আমি আশঙ্কা করছি।’

গাজী কামাল বলেন, ‘এরপর বিষয়টি আমি গুলশান বিভাগের উপকমিশনার মোস্তাক আহমেদকে ফোন জানাই। তিনি গুলশান থানার ওসিকে আমার বাড়ির সামনে পুলিশ প্রহরা বসানোর নির্দেশ দেন এবং কেউ সেখানে জোর করে প্রবেশ করতে চাইলে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেন।’

তবে গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুজ্জামান ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘না এ ধরনের কোনো ঘটনাই ঘটে। আমি এ বিষয়ে কিছুই জানি না।’

অভিযোগ সম্পর্কে জানতে অভিযুক্ত কফিল উদ্দিন কফুর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘তিনি (গাজী কামাল) অবৈধভাবে দোকান তুলেছেন। সেখানে গতকাল রাজউক গিয়েছিল, তারা ভাঙচুর করেছে। ২০১৬ সালে রাজউক এসে সিলগালা করেছিল। তিনি ওই সিলগালা ভেঙেই প্রবেশ করাতে রাজউক ব্যবস্থা নিয়েছে। আমি এ বিষয়ে কিছুই জানি না।’

আজ বাড়ির বিদ্যুতের লাইন কেটে দেওয়া, গেটে তালা লাগানো ও বাড়ির মধ্যে অবৈধ প্রবেশ করে ভাঙচুরের অভিযোগ প্রসঙ্গে কফিল উদ্দিন বলেন, ‘না ভাই আমি আজকের কোনো খবর বলতে পারব না। আমি তার বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছি। আদালত আমার পক্ষে রায় দিলে আদালত আমার বাড়িও বুঝিয়ে দেবে। আর রায় না দিলে নাই। আমি কখনো তার সাথে ঝগড়া করিনি, করবোও না।’

(ঢাকাটাইমস/২০জুন/এএ/জেবি)