বিশাল বাজেট কোন খাতে ব্যয় করবে বিটিভি

প্রকাশ | ২০ জুন ২০১৯, ২২:১০

ঢাকাটাইমস ডেস্ক
ফাইল ছবি

রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম বাংলাদেশ টেলিভিশন বিটিভির আধুনিকায়নে সরকার এক হাজার ৮৬৮ কোটি টাকা ব্যয় করতে যাচ্ছে। বিটিভির ইতিহাসে এটি অন্যতম বড় বাজেট।

সরকারের তথ্য সচিব আব্দুল মালেক বিবিসিকে জানিয়েছেন, বিটিভির আধুনিকায়নের জন্য চারটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘বিটিভির উন্নয়ন পরিকল্পনার জন্য যে সব প্রকল্প রয়েছে, এর মধ্যে ছয়টি বিভাগীয় শহরে বিটিভির পূর্ণাঙ্গ স্টেশন করা হবে। এছাড়া ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টেশনের উন্নয়ন এবং আধুনিকায়নের জন্যও আলাদা প্রকল্প রয়েছে। ২০২০ সালের মধ্যে এ প্রকল্পগুলোর কাজ শেষ হবে।’

তিনি জানিয়েছেন, ছয়টি পূর্ণাঙ্গ স্টেশন করতে খরচ হবে এক হাজার ৩৯১ কোটি টাকা। এছাড়া বিটিভির কেন্দ্রীয় সম্প্রচার ব্যবস্থা ডিজিটালাইজ করা এবং অটোমেশন করা হবে। এতে প্রায় ৪০০ কোটি টাকা খরচ হবে।

এর বাইরে সরকার আরও ৪৪ কোটি টাকা খরচ করা হয়েছে, যা আধুনিক ক্যামেরাসহ নতুন নতুন যন্ত্রপাতি কেনা ও সংস্থাপন করা, টেলিভিশন অনুষ্ঠান নির্মাণ, মানবসম্পদ উন্নয়নের লক্ষ্যে নানা ধরনের প্রশিক্ষণের কাজে ব্যবহার করা হয়েছে।

সমালোচকেরা কী বলছেন?

দীর্ঘদিন ধরেই বিটিভির খবর এবং বিনোদনমূলক বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মান নিয়ে নানা ধরনের সমালোচনা রয়েছে। সমালোচকদের অনেকেই মনে করেন, যে বিশাল বাজেট বিটিভি পেয়েছে, স্টেশন তৈরি ও উন্নয়নের মতো কারিগরি খাতে তার পুরোটা খরচ না করে বরং অনুষ্ঠানের মান উন্নয়নের জন্য খরচ করা যেতে পারতো।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টেলিভিশন, চলচ্চিত্র এবং ফটোগ্রাফি বিভাগের চেয়ারম্যান সহকারী অধ্যাপক রিফফাত ফেরদৌস বলছিলেন, বিটিভির আধুনিকায়নের জন্য নতুন স্টেশনের চাইতেও অনুষ্ঠানের মান উন্নয়নে বেশি নজর দেয়া দরকার।

‘এ মুহূর্তে বিটিভির অনুষ্ঠান পরিকল্পনা পুরোপুরি ঢেলে সাজানোর প্রয়োজন রয়েছে। এজন্য বিশেষ করে নাটক এবং সংবাদ এই দুইটি ক্ষেত্রে আধুনিকায়নের জন্য মনোযোগ দেয়া দরকার। সেজন্য বাজেট যেমন প্রয়োজন, তেমনি মেধাবী লোকের কাজের সুযোগ তৈরিও খুবই জরুরি।’

এজন্য বাজেটের সাথে সাথে সৃজনশীল স্ক্রিপ্টিং এর দিকে নজর দেয়া যেমন জরুরি, তেমনি ভালো অনুষ্ঠান নির্মাণের ক্ষেত্রে কারিগরি প্রতিবন্ধকতা কাটানোর ব্যবস্থাও করতে হবে। বিটিভির নিয়ম অনুযায়ী এখন কিছু জটিলতা রয়েছে, যার ফলে প্রতিষ্ঠানের বাইরের কারো কাজের সুযোগ কম। সেই জায়গায় ফ্রিল্যান্সিং এর মাধ্যমে কাজের সুযোগ তৈরি করা যেতে পারে।

বিটিভি কী বলছে?

বিটিভির সমালোচনা প্রসঙ্গে প্রতিষ্ঠানটির মহাপরিচালক এসএম হারুনুর রশীদ বলেছেন, ‘আমাদের অনুষ্ঠানের জন্য বাজেটের ঘাটতি কোনো ইস্যু নয়।

আমরা সব সময় যে বাজেট চেয়েছি, পেয়েছি। বরং নতুন ও সৃজনশীল কন্টেন্টের অভাব রয়েছে। এক্ষেত্রে মেধার সংকট রয়েছে।’

তবে মেধার সংকট কেবল বিটিভি নয়, বেসরকারি চ্যানেলেও রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন।

কিন্তু বিটিভির বিনোদনমূলক অনুষ্ঠান কেন দর্শক টানতে পারছে না, সেই প্রশ্নের জবাব তিনি দেননি।

দেশের সরকারি গণমাধ্যম বাংলাদেশ টেলিভিশন বা বিটিভি ১৯৬৪ সালের ২৫ ডিসেম্বর পাকিস্তান টেলিভিশন নামে চালু হয়। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের পর এটির নাম পরিবর্তন করে বাংলাদেশ টেলিভিশন রাখা হয়। বাংলাদেশে টেরেস্ট্রিয়াল সম্প্রচার সুবিধা শুধুমাত্র বিটিভির রয়েছে। -বিবিসি বাংলা

(ঢাকাটাইমস/২০জুন/জেবি)