হতাশার বোলিংয়ে কঠিন সমীকরণে বাংলাদেশ

প্রকাশ | ২১ জুন ২০১৯, ০০:৪৬ | আপডেট: ২১ জুন ২০১৯, ০১:৪৪

দেলোয়ার হোসেন, নটিংহাম, ইংল্যান্ড থেকে

ইংল্যান্ড করেছিল ৩৮৬। বৃহস্পতিবার অস্ট্রেলিয়া করলো ৩৮১। বাংলাদেশের বোলিংয়ের ধার কতটা চিন্তা করুণ। এই বোলিং নিয়ে বিশ্বকাপের ফাইনালের স্বপ্ন! চিন্তাই করা যায় না। নটিংহামে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে বাংলাদেশের হারের কারণ মুস্তাফিজ- রুবেলদের লজজ্জাকর ও গাদি পচা বোলিং।

রুবেলকে একাদশে নেওয়া হয় না কেন- এ নিয়ে অনেক কথা হয়েছে কিছুদিন ধরে। রুবেলকে কেন নেওয়া হয়নি তার প্রমাণ তিনি নিজেই দিয়েছেন এদিন। বলের উপর কোনো নিয়ন্ত্রণই ছিল না তার। ৯ ওভার বল করে ৮৩ রান দিয়ে উইকেট শূন্য থেকেছেন এ অভিজ্ঞ পেসার। ওভার প্রতি রান দেন ৯.২২ করে। মানে টি-টোয়েন্টি ফর্ম্যা্টকেও হার মানিয়েছেন রুবেল। দলের সেরা পেসার মুস্তাফিজ দিয়েছেন ৭.৬৬ করে। উইকেট না পেলেও পেসারদের মধ্যে সবচেয়ে মিতব্যয়ী ছিলেন মাশরাফি। ৮ ওভারে ৫৬ রান দিয়েছেন, ওভার প্রতি ৭ করে। অজিরা রাগ ঝেড়েছে শেষের দিকে। শেষ ৯০ বলে বেধড়ক পিটিয়ে তুলে নিয়েছে ১৭৪ রান।

নটিংহাম ছোট মাঠ। এখানে চার ছক্কা তুলনামুলক সহজ। কিন্তু তাই বলে ৩৮২ করা সম্ভব? ৩৩০-৩৩৫ হলে কথা থাকত। এতবড় স্কোর, শুরুটাও তেমন হওয়া দরকার ছিল। মানে প্রথম ১৫ ওভারের ১০০ রানের আশেপাশে। কিন্তু শুরুতেই রান আউটে সৌম্যকে হারিয়ে ধাক্কা খায় বাংলাদেশ। এ পরিস্থিতিতে দরকার ছিল তামিম- সাকিবের ধুমধাড়াক্কা ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি উইকেটে টিকে থাকা। কিন্তু তামিম খেলেছেন ৭৪ বলে ৬২ রানের ধীর গতির ইনিংস।

সাকিব দারুণ ফর্মে। গত ম্যাচে সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন। এ ম্যাচেও খেলছিলেন হাত খুলে। কিন্তু ৪১ বলে ৪১ করে ফিরেন সাকিব। ১৭ বলে ২০ করে লিটনের ফিরে যাওয়ার পর কতটা জলদি বাংলাদেশ গুটিয়ে যায় সেটাই দেখার ছিল।

তবে এর পর কিছু সময় বেশ জমিয়ে রাখেন দুই অভিজ্ঞ কান্ডারি মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহ রিযাদ। ধেই ধেই রান করে দ্রুত স্কোর এগিয়ে নিতে থাকেন তারা। কিন্তু বড় রানের চাপ মাথার উপর। বল মারতে হবে প্রতিটা। এই পরিস্থিতিতে যা হবার তাই হয়েছে। বড় শট মারতে গিয়ে ৫০ বলে ৬৯ রান করে আউট হয়ে যান মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। দারুণ ইনিংস সন্দেহ নেই।

মুশফিক খেলেছেন মুশফিকের মতো। তিনি যে অনেক বড় ব্যাটসম্যান তার প্রমাণ দিলেন আবারও। বিপদে হাল ধরেছেন। দলকে টেনে নিয়েছেন। খেলেছেন ৯৭ বলে অপরাজিত ১০২ রানের অসাধাণ এক ইনিংস। ৩৮১ রান চেজ করে জেতার আশা করা অসম্ভব। সেই অসম্ভবটা অসম্ভবই থেকেছে।  ৩৩৩ রানে থেমেছে দল। ৪৮ রানে হেরেছে বাংলাদেশ। বোলিংয়ের চরম হতাশার দিনে ব্যাটিংয়ে অবশ্য ভালোই করেছে টাইগাররা। নটিংহামের গ্যালারি ভর্তি বাংলাদেশী দর্শকরা বাংলাদেশের ব্যাটিং  অন্তত উপভোগ করতে পেরেছে।

তবে অস্ট্রেলিয়ার কাছে হেরে শেষ চারের রাস্তা অনেকটাই পিচ্ছিল হয়ে গেছে বাংলাদেশের। বাকি ম্যাচগুলো তো এখন জিততে হবেই, অন্য দলের জয় পরাজয়ের দিকেও তাকিয়ে থাকতে হবে।

(ঢাকাটাইমস/২১ জুন/ডিএইচ)