হাসপাতালটি নিজেই ‘লাইফ সাপোর্টে’

জাহাঙ্গীর আলম ভূঁইয়া, সুনামগঞ্জ
| আপডেট : ২১ জুন ২০১৯, ১৪:৪৬ | প্রকাশিত : ২১ জুন ২০১৯, ০৮:৪৭

সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি এখন নানা সমস্যায় জর্জরিত। একজন চিকিৎসক দিয়ে চলছে তিন লাখ জনসাধারণের চিকিৎসাসেবা। হাসপাতালটিতে দীর্ঘদিন ধরে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারসহ বিভিন্ন পদের কর্মকর্তা-কর্মচারীর পদ শূন্য রয়েছে। এতে রোগীদের সেবা দেবে দূরের কথা হাসপাতালটি যেন নিজেই রোগী হয়ে লাইফ সাপোর্টে আছে।

উপজেলায় চিকিৎসাসেবা আরও একধাপ এগিয়ে নিতে সরকারিভাবে ৫০ শয্যা বিশিষ্ট নতুন ভবনের কাজ শুরু হয়েছে। চলতি বছরের ২৫ জানুয়ারি পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান ও সুনামগঞ্জ-১ আসনে সংসদ সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন রতন এর উদ্বোধন করেন। এতে ডাক্তার-নার্স, স্টাফসহ জনবল দিয়ে স্বাস্থ্যসেবার মান কিছুটা বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছিল। কিন্তু উদ্বোধনের পর পর তিন মাসের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও প্রয়োজনীয় আসবাব ও লোকবল সংকটের কারণে উন্নীতকরণের সুফল পাচ্ছে না তাহিরপুরবাসী।

জানা যায়, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি ৩০ শয্যা থাকাকালীন নয়জন চিকিৎসকের পদ ছিল। তখনও চিকিৎসক সংকট ছিল। ৫০ শয্যায় উন্নীতকরণ হলেও এখনো নতুন কোনো লোকবল নিয়োগ না দেয়ার ফলে এ সংকট আরও চরম আকার ধারণ করেছে।

এই সংকটের মধ্যেই হাসপাতালটির তিনজন ডাক্তারকে অন্যত্র প্রেষণে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এদের মধ্যে ডা. তানভীর আনসারীকে দক্ষিণ সুনামগঞ্জ পাগলা উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে, ডা. মির্জা রিয়াদ হাসান ও ডা. মৃত্যুঞ্জয় রায়কে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে এবং ডা. সাব্বির আহমেদকে কক্সবাজার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে প্রেষণে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।

এ ছাড়া ইউএইচএফপিও ডা. ইকবাল হোসেন দাপ্তরিক কাজে বিভিন্ন সময়ে জেলা-উপজেলায় সভা-সেমিনার নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন। বর্তমানে হাসপাতালটিতে একজন চিকিৎসক ডা. সুমন বর্মন কয়েকজন সহকারী মেডিকেল অফিসারকে সঙ্গে নিয়ে নামেমাত্র রোগীদের সেবা দিয়ে যাচ্ছেন।

এ বিষয়টি স্বীকার করে ইউএইচএফপিও ডা. ইকবাল হোসেন ঢাকাটাইমসকে বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের আদেশে চারজন চিকিৎসক অন্যত্র রয়েছেন। আমি অফিসিয়াল কাজে সভা সেমিনারে প্রায়ই ব্যস্ত থাকি।

এদিকে উপজেলার প্রায় তিন লাখ জনগোষ্ঠীর চিকিৎসা সেবা দিতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে একমাত্র চিকিৎসক সুমন বর্মনকে। এবিষয়ে তিনি ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘প্রতিদিনই রোগীদের ভিড় বাড়ছে। কিছুই করায় নেই। যতটুকু সম্ভব একাই চিকিৎসাসেবা দিয়ে যাচ্ছি।’

উপজেলা থেকে ১০ কিলোমিটার দূর বাদাঘাট ইউনিয়ন থেকে চিকিৎসা নিতে আসা আলীনুর মিয়া ঢাকাটাইমসকে জানান, হাসপাতালে ভালো কোনো অভিজ্ঞতাসম্পন্ন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার নেই। মহিলাদের জন্য কোনো গাইনি ডাক্তার হাসপাতাল নির্মাণের পর থেকে না থাকায় মহিলারা চিকিৎসা নিতে এসে বিপাকে পড়ছেন। এ ছাড়াও দাঁেতর ডাক্তার, এক্সরে, ল্যাবটেকনেশিয়ানসহ বিভিন্ন পদে শূন্যতার কারণে বাইরে গিয়ে চিকিৎসা ও বিভিন্ন পরীক্ষা করাতে হয় আমাদের।

তাহিরপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান করুণা সিন্ধু চৌধুরী বাবুল ঢাকাটাইমসকে বলেন, তাহিরপুরে কমর্রতের প্রেষণে বদলির আদেশ বাতিল করে মূল কর্মস্থলেই জনসাধারণের সুচিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে এর সমাধান করবো।

(ঢাকাটাইমস/২১জুন/জেবি)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :