ভুয়া প্রশ্নপত্রসহ ইবি কর্মকর্তা আটক, অতপর তদবিরে মুক্তি!

প্রকাশ | ২২ জুন ২০১৯, ০০:১১ | আপডেট: ২২ জুন ২০১৯, ০০:১৯

ইবি প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার ভুয়া প্রশ্নপত্র বিক্রির অভিযোগে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) এক কর্মকর্তাসহ ছয়জনকে আটক করে গোয়েন্দা পুলিশ। 

শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ঝিনাইদহ জেলার আরাপপুরের সিটি কলেজ এলাকা থেকে তাদের আটক করা হয়। এদের মধ্যে ছয়জনকে সাংবাদিকদের সম্মুখে উপস্থিত করা হলেও ইবির কর্মকর্তা জামির হোসাইনের তদবিরে মুক্তি মিলেছে বলে জানা গেছে।

তবে জামিরের ভাষ্য, এমনিতেই পাশের বাসায় গেলে তাকে ধরে পুলিশ। পরে দোষী না হওয়ায় ছেড়ে দেয়।

থানা সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার সকাল ১০ টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত ঝিনাইদহে সহকারী প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। সকালে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র বেচা-কেনার তথ্য পায় গোয়েন্দা পুলিশ। পরে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে অভিযান চালিয়ে ঝিনাইদহ শহরের আরাপপুরের সিটি কলেজ এলাকার আব্দুল মজিদের বাসা বাড়ি থেকে জামিরুল ইসলামসহ সাত জনকে আটক করে ঝিনাইদহ গোয়েন্দা পুলিশ। আটককৃত অন্যরা হলেন সদর উপজেলার গোপালপুর এলাকার অরুণ কুমারের ছেলে প্রশান্ত কুমার, বাড়ির মালিক আব্দুল মজিদ, শৈকুপার রাণীনগর গ্রামের রোজদার মিয়ার ছেলে আল মাউন, একই উপজেলার সিদ্ধি গ্রামের এলাহি বক্সের ছেলে তাইনুল আলম, একই উপজেলার উত্তর বোয়ালিয়া গ্রামের গিয়াস উদ্দিনের ছেলে হাসান ইকবাল ও রাণীনগর গ্রামের সৈয়দ আলীর ছেলে রিপন হোসেন। 

আটক হওয়া ওই কর্মকর্তা বিশ^বিদ্যালয়ের পরিবহন অফিসে সহকারী রেজিস্ট্রার পদে কর্মরত রয়েছেন। তবে আটক হওয়া জামিরুলকে ছেড়ে দিয়েছে গোয়েন্দা পুলিশ। ক্ষমতাসীন দলের প্রভাবশালী এক নেতার তদবিরে তাকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

জানা যায়, চক্রটি এ ভুয়া প্রশ্ন ও উত্তরপত্র বিক্রি করতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ও ম্যাসেঞ্জার গ্রুপ ব্যবহার করে আসছিলো। গ্রুপ থেকে আসা এসব প্রশ্ন ও উত্তরপত্র বিক্রি করে তারা প্রার্থীদের থেকে জন প্রতি বিশ হাজার টাকা (২০,০০০/) হাতিয়ে নেয়। অভিযানকালে ভুয়া প্রশ্ন ও উত্তরপত্র বিক্রির ৬০ হাজার নগদ টাকাও জব্দ করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

গোয়েন্দা পুলিশের ওসি জাহাঙ্গাীর হোসেন জানান, ঝিনাইদহ শহরের আরাবপুরের একটি বাসায় সহকারী প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র কেনা বেচা হচ্ছে এমন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সেখানে অভিযান চালানো হয়। তার ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারের মাধ্যমে আসা এ প্রশ্ন ও উত্তরপত্র জন প্রতি ২০ হাজার টাকা বিক্রি করছিলো। তবে পরীক্ষা শেষে জেলা প্রশাসনের নেজারত ডেপুটি কালেক্টর খায়রুল ইসলাম আসল প্রশ্নপত্রের সাথে বিক্রি হওয়া প্রশ্নপত্র মেলানোর পর কোন মিল খুঁজে পাননি। এ ঘটনায় ঝিনাইদহ সদর থানায় প্রতারণার মামলা হয়েছে।
ইবির কর্মকর্তা জামিরুলকে আটক করে ছেড়ে দেওয়ার বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না বলে জানান। এমনকি জামিরুল আটক হয়েছে বলেও তিনি জানেন না।

এ বিষয়ে জামির হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘ঘটনা কিছুই না। সিটি কলেজের পাশেই আমার বাসা। আমার একটা পরিচিত ইয়া ছিল তার সাথে পথেই দেখা যেহেতু ওইখানেই বাসা। আমাকে সন্দেহমূলক ভাবেই নিয়ে গেছিলো। পরে ছেড়ে দিয়েছে। পরে আমাদের এমপি ফোন দিয়ে ওদের বলছে যারা দোষী তাদের না ধরে এদের ধরে বেড়ান কেন।’

বিশ^বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এস এম আব্দুল লতিফ বলেন, ‘আমি বিষয়টি অবগত নই। আজ শুক্রবার ছুটির দিন আগামিকাল শনিবার গিয়ে খোঁজ নিব।

ঢাকাটাইমস/২১জুন/ইএস