ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল: ছয় মাসেও জমা পড়েনি তদন্ত

প্রকাশ | ২৩ জুন ২০১৯, ০৯:১৫

আশিক আহমেদ, ঢাকাটাইমস
ফাইল ছবি

নিম্নমানের সন্দেহে কর্মসূচি বাতিলের ছয় মাসেও জানা যায়নি গত জানুয়ারিতে শিশুদের খাওয়ানোর জন্য পাঠানো ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুলগুলোর মান কী ছিল। আর প্রতিবেদন না আসায় এ বিষয়ে কারো বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থাও নেয়া হয়নি।

গত ১৯ জানুয়ারি সারাদেশে শিশুদেরকে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানোর কর্মসূচি ছিল। কিন্তু একটি জেলায় পাঠানো ক্যাপসুলের মান নিয়ে সন্দেহ হলে সরকার কর্মসূচি স্থগিত করে। পরে অন্য ক্যাপসুল খাওয়ানো হয়।

জাতীয় পুষ্টি কর্মসূচির আওতায় প্রতিবছর দুইবার ৬-১১ মাস বয়সী শিশুদের ‘নীল’ এবং ১২-৫৯ মাস বয়সী শিশুদের ‘লাল’ রঙের ক্যাপসুল খাওয়ানো হয়। মূলত রাতকানা প্রতিরোধের অংশ হিসেবে ১৯৯৪ সাল থেকে দেশজুড়ে এ ক্যাম্পেইন চলছে।

ক্যাপসুলের মান ভালো না খারাপ ছিল-সেটা বের করতে সে সময় দুটি কমিটি করা হয়। এর মধ্যে গতকাল বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে সোয়া দুই কোটি শিশুকে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো হয়। কিন্তু ছয় মাস আগের সেই ক্যাপসুলগুলোর বিষয়ে এখনো তথ্য মেলেনি।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তদন্ত কমিটির প্রধান ও স্বাস্থ্য অধিপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচাক অতিরিক্ত মহাপরিচালক এনায়েতুর রহমান ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘আমাদের দায়িত্ব ছিল ক্যাম্পেইন বন্ধ করা ঠিক ছিল কি না। আমরা আমাদের মতামত দিয়েছি। তাতে আমরা বলেছি যেহেতু এই ক্যাম্পেইন নিয়ে একটি বির্তক রয়েছে তাই ওই সময়ে পাবলিক সেন্টিমেন্ট মাথায় রেখে ক্যাম্পেইন বন্ধ করা ঠিক ছিল।’

‘আর ক্যাপসুলের মান সম্পর্ক আমরা পরামর্শ দিয়েছিলাম কোনো মান নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা দিয়ে পরীক্ষা করে দেখার জন্য।’

এনায়েতুর রহমান জানান, ক্যাপসুলগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার জন্য ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের ল্যাবে পাঠাতে বলা হয়েছিল। তবে ওই প্রতিবেদন আজও হাতে পায়নি জনস্বাস্থ্য পুষ্টি প্রতিষ্ঠান।

গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, সেই ওষুধগুলো ভারত থেকে কেনা হয়েছিল। ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের নো অবজেকশন সার্টিফিকেট বা এনওসি ছাড়াই এসব ওষুধ কেনা হয়। আর এই ক্যাপসুল দিয়ে ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন চালানোর প্রস্তুতি নেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

জানতে চাইলে জনস্বাস্থ্য পুষ্টি প্রতিষ্ঠানের পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘এনায়েতুর রহমানকে প্রধান করে সাত সদস্যের তদন্ত কমিটি হয়েছিল। ওই তদন্ত কমিটি কমিটি এখনো প্রতিবেদন জমা দেয়নি। আরেকটি কমিটি ভিটামিন ‘এ’ক্যাপসুল পরীক্ষার জন্য বিশ^স্বাস্থ্য সংস্থার ল্যাবে পাঠিয়েছিল। তবে বিশ^স্বাস্থ্য সংস্থার তদন্ত প্রতিবেদন তদন্ত কমিটি এখনো পায়নি। তাই আমাদের তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া যায়নি। তবে ভিটামিন এ ক্যাপসুলগুলোর মেয়াদ ছিল এ বছরে জুলাই মাস পর্যন্ত।’

এর মধ্যে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক স্বপন গতকাল ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন উদ্বোধন করে বলেছেন, এবার তারা যে ক্যাপসুল খাওয়াচ্ছেন, সেটি পুরোপুরি মানসম্পন্ন। দেশ-বিদেশের বিভিন্ন পরীক্ষাগারে পরীক্ষা করে এর মান সম্পর্কে নিশ্চিত হয়েই তা শিশুদের মুখে তুলে দেওয়া হয়েছে।

ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মাহবুবুর রহমান ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘বর্তমানে যে ক্যাপসুল খাওয়ানো হচ্ছে তার মান নিয়ে কোনো প্রশ্ন নেই। তবে আগে যে ভিটামিন এ ক্যাপসুলের মানের কথা বলছেন তা আমি খোঁজ না নিয়ে বলতে পারব না। আমি মাত্র কয়েকদিন আগে যোগদান করেছি।’

(ঢাকাটাইমস/২৩জুন/এএ/ডব্লিউবি/জেবি)