বিদ্যালয় মাঠে উন্নয়ন কাজ

বিটুমিনের কালো ধোঁয়ায় বিঘ্নিত শিক্ষার পরিবেশ

প্রকাশ | ২৪ জুন ২০১৯, ০৮:১৪

নূরে আলম সিদ্দিকী নূর, বিরামপুর

দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলার হরিহরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠটি দখল করে সেখানে নির্মাণসামগ্রী রেখে শিক্ষার পরিবেশ বিঘ্নিত করছে ‘মোজ্জাফর ট্রের্ডাস’ নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। শুধু তাই নয়, বিদ্যালয় মাঠে আগুনের চুল্লি বসিয়ে চলছে বিটুমিন গলানোর কাজ। ধুলা, শব্দ আর বিটুমিনের ধোঁয়ায় ছেয়ে থাকে পুরো বিদ্যালয়। এতে শিশুদের পাঠদানের স্বাভাবিক পরিবেশ বিঘ্নিত হওয়ায় বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করেছে।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আখতারুজ্জামান হোসেন ঢাকাটাইমসকে বলেন, প্রায় ২০ দিন আগে বিরামপুর-কাটলা আট কিলোমিটার রাস্তার সংস্কার কাজে ঠিকাদারের লোকজন বিদ্যালয় মাঠের একপাশে বালু ও পাথর স্তূপ করে রেখে যান। এরপর ধীরে-ধীরে তারা বিদ্যালয়ের পুরো মাঠ দখল করে বালু ও পাথর রাখতে শুরু করে। ৬-৭ দিন ধরে মাঠে বিটুমিন গলানোর কাজ চলছে। এতে বিদ্যালয়ে পাঠদানের স্বাভাবিক পরিবেশ নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি কালো ধোঁয়ায় দম বন্ধ হওয়ার পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, হরিহরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পুরো মাঠ দখল করে বালু ও পাথর রাখা। শ্রেণিকক্ষের সামান্য দূরে গরম চুল্লি জ্বালিয়ে বিটুমিন গলানো হচ্ছে। সেখানে ধোঁয়ার কারণে অবস্থান করাই কঠিন।

বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী রায়হান কবির, সাজু আহমেদ, নুসরাত জাহান জানায়, শ্রেণিকক্ষে ধুলা-বালি ঢুকে বই-খাতা ভরে যায়। কালো ধোঁয়ায় দম আটকে আসে। মাঠে খেলাধুলা তো দূরের কথা, চলাফেরাও করা কঠিন হয়ে গেছে।

২নং কাটলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. নাজির হোসেন ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘কোমলমতি শিক্ষার্থীদের সমস্যা করে কোনো উন্নয়নমূলক কাজ হতে পারে না। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান আমাদের সাথে যোগাযোগ না করেই এমন কাজ করেছে। বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবহিত করা হয়েছে। তিনি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন বলে জানিয়েছেন।’

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মিনারা বেগম ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আকতারুজ্জামান হোসেনের লিখিত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার সরেজমিনে সেখানে গিয়ে অভিযোগের সত্যতা পাই। পরে বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানানো হয়েছে। এ ব্যাপারে তিনি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন বলে জানিয়েছেন।’

উপজেলা প্রকৌশলী মাহমুদুল হাসান ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘আমি এ ধরনের একটি অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি নিয়ে ইউএনও স্যারের সঙ্গে আলোচনা করে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. তৌহিদুর রহমান জানান, ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের যেন কোনো ধরনের সমস্যা না হয় সেই বিষয়টি মাথায় রেখে খুব দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

ঢাকাটাইমস/২৪জুন/প্রতিনিধি/এমআর