জামালপুরে দুই গুচ্ছগ্রাম নির্মাণে ব্যাপক অনিয়ম

প্রকাশ | ২৪ জুন ২০১৯, ১৪:০৪

সাইমুম সাব্বির শোভন, জামালপুর

জামালপুর সদর উপজেলার দুটি গুচ্ছগ্রাম নির্মাণকাজে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ ওঠেছে। এসব গুচ্ছগ্রামের কাজ অসমাপ্ত রেখেই তড়িঘড়ি উদ্বোধন করে উপকারভোগীদের মধ্যে ঘর বিতরণ করেছে উপজেলা প্রশাসন। এসব ঘরের মাটির কাজ ও ঘরের মেঝে অসম্পূর্ণ রয়েছে। বসবাসের অনুপযোগী এসব ঘর-রান্নাঘর, ল্যাট্রিন এবং টিউবওয়েল স্থাপন ও বিদ্যুৎ সংযোগ না দিয়েই উপকারভোগীদের বুঝিয়ে দেয়ায় তাদের মাঝে চাপা ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। তবে উপজেলা প্রশাসন দ্রুত সময়ের মধ্যে অসম্পন্ন কাজ সম্পন্ন করা হবে বলে জানিয়েছে।

শনিবার দুপুরে সদর উপজেলার লক্ষীরচর ইউনিয়নের মধ্যেরচরে স্থানীয় সংসদ সদস্য এই গুচ্ছগ্রাম দুটি উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের উপজেলা চেয়ারম্যান আবুল হোসেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফরিদা ইয়াসমিনসহ স্থানীয়রা উপস্থিত ছিলেন।

জানা গেছে, ২০১৭-১৮ অর্থবছরের দ্বিতীয় পর্যায়ে জামালপুর সদর উপজেলার লক্ষীরচর ইউনিয়নের মধ্যেরচর গুচ্ছগ্রামের ৮০টি ঘর নির্মাণ বাবদ এক কোটি ৩০ লাখ ৩৩ হাজার টাকা এবং শরীফপুর ইউনিয়নের চর হামিদপুর গুচ্ছগ্রামের ৬০টি ঘরসহ রান্নাঘর ও ল্যাট্রিন নির্মাণ বাবদ ৯৯ লাখ ৭৩ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। এর মধ্যে ১১০টি ঘরের কাজ অসম্পূর্ণ অবস্থায় এবং বাকি ৩০টি ঘর এখনো নির্মাণ করা হয়নি।

ইতিমধ্যে এই দুটি গুচ্ছগ্রামের কাজের নিম্নমান এবং অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠায় বেশ কয়েকবার কাজ আটকে থাকে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন উপকারভোগী জানান, এসব ঘরে থাকার কোনো পরিবেশ নেই। ঘরে নিচে, উঠানে মাটি নেই। টিউবওয়েলের সংখ্যা খুবই কম। বিদ্যুৎ সংযোগ নেই। এসব কাজ সম্পন্ন না করে দিলে পরিবার নিয়ে এসব ঘরে উঠা যাবে না। এখন নিজেদেরই এসব করতে হবে। এই অবস্থায় এমপি মহোদয় আমাদের ঘরের চাবি দিলেন।

মাটির কাজের অনিয়মের বিষয়ে লক্ষীরচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আফজার হোসেন বিদুৎ ঢাকাটাইমসকে বলেন, অধিকাংশ মাটির কাজ সমাপ্ত হয়েছে। কিছু ঘরের ভিটার মাটির কাজ বাকি রয়েছে। এসব মাটির কাজ দ্রুতই শেষ করা হবে।

অপরদিকে শরিফপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলম মিয়া জানান, যে ঘরগুলোর কাজ বাকি আছে তা অতি দ্রুত সম্পন্ন করা হবে। বাকি ৩০টি ঘরেরও কাজ শুরু করা হয়েছে।

তবে দুই চেয়ারম্যান প্রায় ৪২০ মেট্রিকটন চালের মাটির কাজ এখনো না করা এবং গৃহনির্মাণে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয়ে সদুত্তর দিতে পারেননি।

জামালপুর সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা ফরিদা ইয়াসমিন ঢাকাটাইমসকে জানান, দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় গুচ্ছগ্রামগুলো করতে একটু সময় লাগে। তাই দেরি হয়েছে। এ বিষয়ে প্রকল্প পরিচালক অবগত আছেন। ৩০টি ঘরের জন্য জায়গা বরাদ্দ ও মাটির কাজ শেষ না হওয়ায় দেরি হয়েছে। কিছুদিন আগে জায়গা বুঝে পেয়ে কাজ শুরু করা হয়েছে। আর ১১০টি ঘরের যে কাজ অসম্পন্ন রয়েছে তা উপকারভোগীদেরই শ্রমিক হিসেবে যেন কাজ করে মজুরি পেয়ে চলতে পারেন সেজন্য উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

জামালপুর সদর আসনের সংসদ সদস্য মোজাফফর হোসেন ঢাকাটাইমসকে বলেন, যে কাজগুলো বাকি আছে অতি শিগগিরই সম্পন্ন করা হবে। উপকারভোগীদের কথা চিন্তা করে কাজ শেষ হওয়ার আগেই উদ্বোধন করে তাদেরকে ঘরের চাবি বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাতে কাজের গতি বাড়বে।