সৌদি ভিসার ‘ড্রপবক্স’ বাতিলের দাবি

প্রকাশ | ২৪ জুন ২০১৯, ১৭:৩৮

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

সৌদি আরবের ভিসা সার্ভিস সেন্টার (ড্রপবক্স) বাতিলের দাবি তুলেছে জনশক্তি রপ্তানিকারদের একটি অংশ। তারা বলছে, ভিসা সার্ভিস সেন্টার প্রতিষ্ঠা পেলে মালয়েশিয়ার মতো সৌদি আরবের শ্রমবাজারও চলে যাবে সিন্ডিকেটের হাতে।

বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সির (বায়রা) সাধারণ সদস্যদের একটি অংশ ড্রপবক্স পদ্ধতি বাতিলের জন্য আন্দোলন করে যাচ্ছে। সোমবার তারা রাজধানীর নিউ ইস্কাটনে বায়রা কার্যালয়ের সামনে এই দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে। তবে দুপুরে বায়রা কার্যালয়ের সামনে গিয়ে কাউকে পাওয়া যায়নি।  

বায়রার কার্যনির্বাহী কমিটির শীর্ষপদস্থরা বলছেন, ভিসা সার্ভিস সেন্টার চালু হলে এজেন্সিগুলোর জন্য জনশক্তি রপ্তানির সুযোগ আরও বাড়বে। তারা যে আশঙ্কা থেকে ভিসা সেন্টার বাতিলের কথা বলছেন, তা ঘটনার সম্ভাবনা নেই।

বায়রার মহাসচিব শামীম আহমেদ চৌধুরী নোমান বলেন, ‘বায়রা নির্বাহী কমিটি কীভাবে কাজ করবে এটা নির্বাহী কমিটির ব্যাপার। বর্তমানে সৌদি দূতাবাসে সরাসরি পাসপোর্ট জমা দিতে গেলে একটি এজেন্সি সপ্তাহে দুইদিন জমা দিতে পারে। সার্ভিস সেন্টার হওয়ার কারণে আমরা সপ্তাহে পাঁচ দিন পাসপোর্ট জমা দিতে পারব এবং আনলিমিটেড।’  

এর আগে রবিবার ‘ড্রপবক্স সিন্ডিকেট নির্মূল কমিটি ও ক্ষতিগ্রস্ত রিক্রুটিং এজেন্সির মালিকবৃন্দের’ ব্যানারে একই দাবিতে তারা প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী ইমরান আহমেদের কাছে স্মারকলিপি জমা দিয়েছে। পরে কিছু সময়ের জন্য মানববন্ধন করেছে মন্ত্রণালয়ের সামনে।

আন্দোলনকারী জনশক্তি রপ্তানিকারকরা বলছেন, আগে তারা সরাসরি সৌদি দূতাবাসে ভিসার জন্য পাসপোর্ট জমা দিতে পারতেন। এখন সার্ভিস সেন্টারে ভিসা জমা দিতে গেলে বাড়তি ফি দিতে হবে। এতে অভিবাসন ব্যয় বাড়বে। ড্রপবক্সে ভিসা প্রসেসিংয়ের জন্য ১১০০ টাকা ফি ঠিক করা হয়েছে বলে জানান তারা।

বায়রার সাধারণ সদস্য টিপু সুলতান বলেন, ‘আমরা এখন যেই পাসপোর্টগুলো জমা দিচ্ছি সৌদি দূতাবাসে সেটা কোনো খরচ ছাড়া। এখন তারা যেই চার্জ নির্ধারণ করেছে সেক্ষেত্রে আমাদের অভিবাসন ব্যয় বছরে দুইশ কোটি টাকা বাড়বে।’  

বায়রার সাধারণ সদস্য মোহাম্মদ মহিউদ্দিন বলেন, ‘বায়রার ১৬ শ এজেন্সি এখানে ব্যবসায়ী অধিকার হারাবে। যেটা অতীতে আমরা মালয়েশিয়ার ক্ষেত্রে দেখেছি।’

মানববন্ধনে বায়রার সদস্য ও আয়োজক সংগঠনের আহ্বায়ক আবদুল আলিম বলেন, ‘এই ভিসা সার্ভিস সেন্টার প্রতিষ্ঠা পেলে সাধারণ ব্যবসায়ীদের ব্যবসায়িক গোপনীয়তা আর থাকবে না। কারণ, সৌদি আরব থেকে ভিসা আসবে আমার প্রতিষ্ঠানের নামে। সেখানে নিয়োগদাতার নাম-ঠিকানা থাকবে। সার্ভিস সেন্টার চাইলেই সেই নিয়োগদাতার সঙ্গে যোগাযোগ করে আমার ব্যবসা নিয়ে নিতে পারবে। এ ছাড়া নিয়োগদাতারা যখন দেখবে সব ভিসা প্রসেস করছে দুটি প্রতিষ্ঠান, তখন আমাদেরকে আর ভিসা দেবে না।’
এভাবেই শ্রমবাজারটি নষ্ট হবে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেন বায়রা সদস্য আলিম।

মানববন্ধনে আয়োজক সংগঠনের সদস্য সচিব কেএম মোবারক উল্লাহ শিমুল, ট্রাভেল কল্যাণ ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ফজলুল মতিন তৌহিদ, ফোরাব সভাপতি টিপু সুলতান, সাধারণ সম্পাদক আরিফুর রহমান, ফোরাব সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ মহিউদ্দিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

১৯৭৬ সাল থেকে এই পর্যন্ত ৩৭ লাখ ৭৪ হাজার বাংলাদেশি সৌদি আরব গেছেন কাজ নিয়ে। যা দেশের মোট জনশক্তি রপ্তানির ৩০ শতাংশ।    

ঢাকাটাইমস/২৪জুন/এইচএফ/ডব্লিউবি